ফরচুন বরিশালের ম্যাচ জয়ের জন্য একমাত্র বাঁধা হয়ে থাকা মুশফিকুর রহিমকে আউট করেই ভোঁ দৌড়। পরপর দুই উইকেট তুলে নিয়ে হ্যাটট্রিক চান্স তৈরি করলেন। তবে হ্যাটট্রিক বলের জন্য মেহেদী হাসান রানাকে অপেক্ষা করতে হবে দুই দিন। আবার একই প্রতিপক্ষ খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে একদিন বাদে মাঠে নামবেন এই পেস বোলার।
বাংলাদেশের ক্রিকেটে মেহেদী হাসান আছেন আরো একজন। তিনি মেহেদী মিরাজ। আবার শেখ মাহেদী হাসানও আছেন। এই দুই স্পিন বোলিং অলরাউন্ডারই এখন জাতীয় দলে খেলছেন। তবে এই দুই জনের নিচে চাপা পড়ে যান পেসার মেহেদী হাসান রানা। যদিও বারবারই নিচ থেকে উঁকি দেন, নিজের মাথাটা তুলতে চান।
১৯৯৭ সালে চাঁদপুর শহরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। এরপর একসময় ক্রিকেট খেলতে চলে এসছিলেন ঢাকায়। বয়স ভিত্তিক ক্রিকেটের ধাপগুলো খুব দ্রুতই পার করেছেন। ২০১৬ সালে মিরাজদের সাথে অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ দলে ছিলেন। এরপর দ্রুতই ঘরোয়া ক্রিকেটে নিজের ছাপ রাখেন। ২০১৭ সালে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগেও (বিপিএল) ডাক আসে।
বিপিএলে তাঁর শুরুটা হয়েছিল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে। তবে এর পরের বছর আবার চলে যান সিলেট সিক্সার্সে। প্রতিবার বিপিএলের পরই জাতীয় দলের কাছাকাছি চলে আসেন। ২০১৯ সালে ইমার্জিং এশিয়া কাপের বাংলাদেশ স্কোয়াডেও ছিলেন। এরপরই সাউথ এশিয়ান গেমসের দলেও জায়গা পান। সেবার ফাইনালে শ্রীলঙ্কাকে ৭ উইকেটে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ।
ফলে ২০১৭ সাল থেকেই বাংলাদেশের ক্রিকেটে পরিচিত নাম মেহেদী হাসান রানা। বারবার জাতীয় দলের দরজায় কড়া নেড়েও শেষপর্যন্ত আর ডাক পাননি। এবার ফরচুন বরিশালের হয়ে ঢাকা পর্বের কোন ম্যাচে সুযোগ পাননি। তবে আজ খুলনা টাইগার্সের হয়ে এবারের বিপিএলে প্রথম মাঠে নেমেই আরেকবার নিজেকে প্রমাণ করলেন এই পেসার।
চট্টগ্রামের উইকেটে ব্যাট হাতে খুব বেশি রান করতে পারেনি ফরচুন বরিশাল। খুলনাকে জয়ের জন্য ১৪১ রানের টার্গেট দেয় বরিশাল। তবে এই সহজ টার্গেটও খুলনার জন্য কঠিন করে তোলেন মেহেদী হাসান রানা। ২৩ রান করে ভয়ের কারণ হয়ে উঠতে থাকা ইয়াসির আলী রাব্বির উইকেটটা নিয়ে নিজের খাতা খুলেন।
এরপর ফেরান ফরহাদ রেজাকেও। তবে নিজের তৃতীয় ওভারে টানা দুই উইকেট নিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন। শেষ বলে তুলে নিয়েছিলেন মুশফিকুর রহিমের উইকেটও। তবে খুলনা অল আউট হয়ে যাওয়ায় হ্যাটট্রিক বলটা আর করা হয়নি তাঁর। সেটা করার জন্য অপেক্ষা করতে হবে পরশুদিন পর্যন্ত আবার খুলনার বিপক্ষে ম্যাচের জন্যই।
এছাড়া আজ সবমিলিয়ে তিন ওভার বোলিং করে এই পেসার তুলে নিলেন ৪ টি উইকেট। ৬ টি ডট বল করে খরচ করেছেন মাত্র ১৭ রান। এবারো নিশ্চয়ই বিপিএলের পর আবার তাঁকে নিয়ে নানা রকম আলোচনা হবে। তবে রানা আদৌ জাতীয় দলে জায়গা পাবেন কিনা সেটা সময়ই বলে দিবে। সে পর্যন্ত রানার হ্যাটট্রিক বল ও জাতীয় দলের অপেক্ষা জারি থাকবে।