বিপিএলের শতক কথন

একেবারেই ফেলে দেওয়ার মতো অভিযোগ নয়। একটা ফ্রাঞ্চাইজ ভিত্তিক টি-টোয়েন্টির প্রধান আকর্ষণই তো রান। একদল রান করবে আরেকদল সেই পাহাড়সম রান টপকে গিয়ে জিতে যাবে প্রত্যাশা তো সেইটুকুই। কিন্তু মন্থর গতির মিরপুরের উইকেটে তো রান করাও কষ্টের। স্রোতের বিপরীতে বিপিএলে হওয়া ব্যক্তিগত শতকের একটা বিরাট অংশই এসেছে মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে।

রান ফোয়ারা হবে, বোলারদের আগুন ঝড়ানো বোলিং হবে। বিনোদনের খোড়াক মিটবে। সেই সাথে উঠে আসবে উদীয়মান খেলোয়াড়, সমৃদ্ধ হবে পাইপলাইন। এমন এক উদ্দেশ্য নিয়েই ২০১২ সালে আজ থেকে ঠিক এক দশক আগে যাত্রা শুরু হয় বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের।

সেই থেকে এখন অবধি আয়োজিত হয়েছে কেবল মাত্র আটটি আসর। অনিয়মিত হওয়ার পাশাপাশি আরো একটি অভিযোগ রয়েছে বিপিএল নিয়ে। রান খুব একটা হয় না।

একেবারেই ফেলে দেওয়ার মতো অভিযোগ নয়। একটা ফ্রাঞ্চাইজ ভিত্তিক টি-টোয়েন্টির প্রধান আকর্ষণই তো রান। একদল রান করবে আরেকদল সেই পাহাড়সম রান টপকে গিয়ে জিতে যাবে প্রত্যাশা তো সেইটুকুই। কিন্তু মন্থর গতির মিরপুরের উইকেটে তো রান করাও কষ্টের। স্রোতের বিপরীতে বিপিএলে হওয়া ব্যক্তিগত শতকের একটা বিরাট অংশই এসেছে মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে।

অষ্টম আসরে এসে বিপিএলে করা শতকের সংখ্যা ২৩টি। যার মধ্যে ১৩টিই এসেছে মিরপুরের তথাকথিত স্লথ উইকেটে। যদিও এই আসরে এখন অবধি হওয়া দুইটি সেঞ্চুরি হয়েছে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। এই দুই নতুন সেঞ্চুরির সুবাদে চট্টগ্রাম দেখেছে মোট নয়টি বিপিএল শতক।

বাকি থাকা একটি সেঞ্চুরি হয়েছিলো খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে। সেই সেঞ্চুরিটি করেছিলেন শাহরিয়ার নাফিস। ২০১৩ এর দ্বিতীয় আসরেই বাংলাদেশিদের মধ্যে প্রথম বিপিএলে সেঞ্চুরি করেন শাহরিয়ার।

এর পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশিদের মধ্যে আরো চার খেলোয়াড় করেছেন সেঞ্চুরি। যার মধ্যে তামিম ইকবালের এবারের আসর মিলিয়ে রয়েছে দুইটি। বাংলাদেশি খেলোয়াড়দের মধ্যে বাকি চার সেঞ্চুরিয়ান মোহাম্মদ আশরাফুল, সাব্বির রহমান ও নামজুল হোসেন শান্ত। দেশিদের মধ্যে ২০১৯ সালে ঢাকা ডায়নামাইটদের বিপক্ষে তামিম ইকবালের অপরাজিত ১৪১ সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। একাধিক সেঞ্চুরি করা খেলোয়াড়দের মধ্যেও তামিম একজন।

একাধিক সেঞ্চুরি করাদের তালিকায় রয়েছেন মোট তিনজন। বাকি দুই জন ক্যারিবিয়ান দুই মারকুটে ব্যাটার ক্রিস গেইল ও এভিন লুইস। ‘দ্য ইউনিভার্স বস’ একাই করেছেন পাঁচটি সেঞ্চুরি। আর লুইসের করা শতকের সংখ্যা তামিমের সমান দুইটি। এই দুই জন বিদেশি ছাড়াও আরো দশ জন বিদেশি খেলোয়াড় বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে ছুঁয়ে দেখেছিলেন তিন অংকের ম্যাজিক ফিগার।

টি-টোয়েন্টি বিবেচনায় সেঞ্চুরি করাটা বেশ কষ্টসাধ্য একটি কাজ। সময়ে অপ্রতুলতাই প্রধান কারণ। তাছাড়া বাংলাদেশের অধিকাংশ উইকেটই স্পিন সহায়ক। এই স্পিন সহায়ক উইকেটে দেশি ও বিদেশি দারুণ সব স্পিন বোলারদের সামলে শতক করাটা যেন এভারেস্ট চড়ার মতো। তারপরও এখন পর্যন্ত ১৭ জন ব্যাটার সেই এভারেস্ট চূড়ায় ওঠার কাজটি করেছেন পুরো আটটি আসর জুড়ে।

একই ম্যাচে একাধিক সেঞ্চুরিও উপহার দিয়েছে বিপিএল একাধিকবার। তবে সেই ক্ষেত্রে ধ্রুব ছিলো চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ স্টেডিয়াম। ২০১৯ সালের ষষ্ঠ আসরে একই দলের দুই ব্যাটার গড়েছিলেন সেই কীর্তি।

চিটাগাং ভাইকিংসের বিপক্ষে রংপুর রাইডার্সের দুই বিদেশি ব্যাটার অ্যালেক্স হেলস ও রাইলি রুশো সেঞ্চুরি করেছিলেন। আর দ্বিতীয়টিতে তো লেনডন সিমন্স ও তামিম ইকবালের দুইটি সেঞ্চুরি স্মৃতিতে স্পষ্টই।

সেই ২০১৯ সালেই সর্বাধিক সংখ্যক সেঞ্চুরি হয়েছে বিপিএলে। হেলস ও রুশোর পর আরো ছয় ভিন্ন খেলোয়াড় সেঞ্চুরি করেছেন সেই আসরে। সবাই হয়ত প্রত্যাশা কোন এক আসরে এই সর্বাধিক সংখ্যক সেঞ্চুরির রেকর্ডটা ছাড়িয়ে যাবে। তাছাড়া সত্যিকার অর্থেই রানের ফোয়ারা হবে পুরো বিপিএল জুড়েই।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...