মনের ওজন কমাতে হবে

তাঁর উচিত মূল জায়গায় ফোকাস করা। প্রক্রিয়া ঠিক রাখা। জাতীয় দলে ফেরার চাপ না নিয়ে খেলাটা উপভোগ করা। ‘যে কদিন খেলি, মনের আনন্দে খেলি’, এরকম ভাবতে পারলে কাজটা তার জন্য সহজ হবে। তখন রানও আসতে পারে, ফেরার পথও তৈরি হতে পারে। প্রতি ইনিংসেই যদি এটা ভেবে নামেন যে ‘দেখিয়ে দেব’, তাহলে কিছুই দেখানো হবে না।

মোহাম্মদ আশরাফুল যদি জাতীয় দলে আবার খেলতে চান, তাঁর উচিত, জাতীয় দলে খেলার ভাবনা মাথা থেকে সরিয়ে ফেলা!

একটু ব্যাখ্যা করি। তিনি নিয়মিতই বলছেন, ‘জাতীয় দলে আবার খেলতে চাই’, ‘এক দিনের জন্য হলেও জাতীয় দলে ফিরতে চাই’ বা এরকম নানা কথা। আমার মনে হয়, এসব করে তিনি নিজের ওপর আরও চাপ চাপিয়ে দিচ্ছেন। আমি ভুলও হতে পারি। তবে তাঁকে দেখে মনে হচ্ছে, প্রতিটি ইনিংসেই নিজেকে প্রমাণ করতে নামছেন। যেন এই ইনিংস দিয়েই জাতীয় দলে ঢুকে যাবেন! কিংবা এই টুর্নামেন্ট দিয়েই তাকে জাতীয় দলে ঢুকতে হবে। যেন প্রতিটি ম্যাচকেই সুযোগ হিসেবে নিচ্ছেন। জাতীয় দলে খেলতেই হবে, প্রচণ্ড মরিয়া।

সত্যিই এরকম ভেবে থাকলে, এই চাপ নিয়ে খেলা কঠিন। প্রতিটি পদক্ষেপকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিলে, সেই চ্যালেঞ্জ জেতা ভীষণ কঠিন। ক্রিকেট খেলাটা এভাবে হয় না সাধারণত। চোখের সামনে সবসময় জাতীয় দল থাকলে, ২২ গজে বল দেখবেন কখন!

তাঁর উচিত মূল জায়গায় ফোকাস করা। প্রক্রিয়া ঠিক রাখা। জাতীয় দলে ফেরার চাপ না নিয়ে খেলাটা উপভোগ করা। ‘যে কদিন খেলি, মনের আনন্দে খেলি’, এরকম ভাবতে পারলে কাজটা তার জন্য সহজ হবে। তখন রানও আসতে পারে, ফেরার পথও তৈরি হতে পারে। প্রতি ইনিংসেই যদি এটা ভেবে নামেন যে ‘দেখিয়ে দেব’, তাহলে কিছুই দেখানো হবে না।

আমি অবশ্যই, অবশ্যই এবং অবশ্যই ,আশরাফুলকে আর কখনও জাতীয় দলের ধারেকাছেও দেখতে চাই না। একসময় নিজেকে তাঁর সবচেয়ে বড় ভক্তদের একজন মনে করতাম। ২০১৩ সালের জুন থেকে ভালো লাগার সেই দুয়ার চিরতরে বন্ধ করে দিয়েছি। কিন্তু তার ক্ষেত্রেই শুধু নয়, ফিক্সিং করা কোনো দেশের কাউকেই তাদের জাতীয় দলে আর দেখতে চাই না। আগেও অনেকবার বলেছি, আমার মতে, ক্রিকেটে যে কোনো ধরণের ফিক্সিং প্রমাণিত হলেই তার ন্যূনতম শাস্তি হওয়া উচিত আজীবন নিষেধাজ্ঞা। তার পর অপরাধের মাত্রা বুঝে অন্য আরও শাস্তি। এটা ছাড়া ক্রিকেটকে ফিক্সিং মুক্ত করা সম্ভব নয়।

কিন্তু আমার ভাবনায় অবশ্যই ক্রিকেট চলবে না, বিসিবিও না। আশরাফুল প্রচুর এবং প্রচুর রান করলে, ইম্প্যাক্ট রাখার মতো কিছু করে গেলে, আমাদের দায়িত্বপ্রাপ্তরা আবার তাকে নিতেও পারেন জাতীয় দলে। সেই বিন্দুর মতো সম্ভাবনাকে সিন্ধু করে তুলতে হলে, মাথায় ও মনে স্বস্তির প্রবাহ থাকতে হবে।

তিনি ওজন অনেক কমিয়েছেন। ভালো কথা। কিন্তু শরীরের ওজন কমানো কেবল একটা প্রক্রিয়া মাত্র। ক্রিকেটে মনের ওজন কমানো অনেক সময় আরও বেশি জরুরি।

– ফেসবুক থেকে

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...