সরাসরি ‘বাদ দেওয়া’ বলতে ক্ষতি কি

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাতেই। আসন্ন এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপের দলকে কেন্দ্র করে তাঁর নাম যতটুকু আলোচনায় ছিল, সেটাই অনেক বেশি আমার মনে হয়।

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাতেই। আসন্ন এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপের দলকে কেন্দ্র করে তাঁর নাম যতটুকু আলোচনায় ছিল, সেটাই অনেক বেশি আমার মনে হয়।

এই মুহূর্তে রিয়াদের ভক্তকুলের প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা রেখেই বলছি, এইসব আন্দোলন করে আসলে লাভ নেই। জানি তাঁরা প্রিয় ক্রিকেটারকে দলে ফেরাতে রাজপথে নেমেছেন, কষ্টও করছেন। তবে তা অনেকাংশে কেবল হাস্যরসেরই খোরাক জোগাচ্ছে।

এই মুহূর্তে তাঁদের দাবি, যুক্তি সবই অযৌক্তিক মনে হচ্ছে। টিম ম্যানেজমেন্ট যে কারণে বা যে উদ্দেশ্যে রিয়াদকে বাদ দিয়েছে, তাতে আমি ব্যক্তিগতভাবে বেশ ভালোভাবেই কনভিন্সড। খানিক দেরিতে হলেও ভবিষ্যতের কথা ভেবে এটাকে সময়োপযোগী সিদ্ধান্তই বলব আমি। এ সিদ্ধান্ত নিয়ে তাই প্রশ্ন তোলার সুযোগ দেখছি না।

তবে হ্যাঁ, তাঁকে এতদিন ঘুরিয়ে-প্যাঁচিয়ে যেভাবে বাদ দেওয়া হয়েছে, সেটা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যেতেই পারে। একজন জ্যেষ্ঠ ক্রিকেটারকে বাদ দিয়ে সেটাকে বিশ্রাম বলে চালিয়ে দেবার চর্চাটা যে কবে শেষ হবে আমাদের নির্বাচকদের!

নিজেদের সময়ে দেশের অন্যতম সেরা সেরা তিন জন ক্রিকেটারকে নিয়ে গঠিত আমাদের নির্বাচক প্যানেলের কাছ থেকে এতটুকু সাহস তো আমরা আশা করতেই পারি, তাই না?

এই ‘বিশ্রাম’, ‘বিশ্রাম’ করে পূর্বেও তাঁরা অনেক জট পাঁকিয়েছেন, এখনও পাঁকিয়ে যাচ্ছেন, যার সবশেষ সংযোজন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ৷

চলতি বছর রিয়াদকে পরপর দুইটা ওয়ানডে সিরিজে বিশ্রামের মোড়কে যে বাদ দেওয়া হয়েছিল, সেটা কোনো রকেট সাইন্স ছিল না। বিশেষ কারো হস্তক্ষেপ ছাড়া তিনি যে দ্রুত দলে ফিরছেন না, সেটাও ছিল অনুমিত। কিন্তু, বিগত বছরগুলোর মতো আরও একবার কোনো জ্যেষ্ঠ ক্রিকেটারকে বাদ দেওয়ার সময় তাঁকে বাদ দেওয়া হয়েছে বলতে না পারার অক্ষমতাটা স্পষ্ট ছিল নির্বাচকদের কথাবার্তায়।

আমি ব্যক্তিগতভাবে আরও হতাশ হয়েছি এশিয়া কাপের দল ঘোষণার সংবাদ সম্মেলনটি দেখে। সেখানে রিয়াদকে বাদ দেওয়ার প্রসঙ্গে প্রধান নির্বাচক ঘুরেফিরে শুধু একটা কথাই বলছিলেন। মুখস্থ বুলির মতো কেবল আওড়ে যাচ্ছিলেন, ‘আমরা টিম ম্যানেজমেন্টের সবার সাথে আলোচনা করেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

আরে ভাই, এ কথা কে না জানে! দল নির্বাচনের সময় তো টিম ম্যানেজমেন্টের সাথে আলোচনা করেই সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া হয়, যা খুবই স্বাভাবিক ও প্রচলিত একটি প্রক্রিয়া। এটা এত ঘটা করে বারবার বলার কী আছে!

বর্তমান নির্বাচক প্যানেলের তিন জনই আমাদের ক্রিকেট ইতিহাসে একেকটা সমৃদ্ধ চরিত্র। ক্রিকেট পাড়ায় এবং ভক্ত-অনুসারীদের মাঝে তাঁদের সম্মান ও জনপ্রিয়তা মোটেও কম নয়৷

কিন্তু, নির্বাচক হিসেবে দিনের পর দিন তাঁদের সত্য কথা কিংবা নিজেদের কথাটা (বাদ দেওয়া প্রসঙ্গে) মুখ ফুটে বলতে না পারার অক্ষমতা বাংলাদেশ ক্রিকেটের এক জন ক্রিকেট অনুসারী হিসেবে বরাবরই অস্বস্তিতে ফেলে আমাকে। এই অস্বস্তিটা বোধ করি তাঁদের মধ্যেই সবার আগে কাজ করা উচিত।

তাছাড়া এ চর্চাটা মোটেই তাঁদের নামের প্রতি সুবিচার করছে না। সুবিচার করছে না তাঁদের দায়িত্বের প্রতিও। এটা যে তাঁরা কবে উপলব্ধি করবেন!

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...