নাসুম কেন বাদ পড়লেন?

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তিনি বাংলাদেশের নিয়মিত পারফর্মার। সাকিব আল হাসানের সাথে তাঁর স্পিন বোলিং জুটিটা বেশ জমে উঠেছে। সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে নিজেকে প্রমাণ করে নাসুম আহমেদ জায়গা করে নিয়েছিলেন বাংলাদেশ ওয়ানডে দলেও। সেখানেও শুরুটা হয়েছিল দুর্দান্ত। তবে ওয়ানডে ক্রিকেটে নিজের ইনিংস শুরুর করার আগেই যেন টেনে দেয়া হচ্ছে একটা দাড়ি।

এবার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের দলে জায়গা হয়নি নাসুম আহমেদের। তবে আরেক বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম আছেন এই দলে। পারফর্ম করেও নাসুম কেন জায়গা পেলেন না সেটাও এক রহস্য হয়ে উঠেছে।

গতবছর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে অভিষেক হয় নাসুম আহমেদের। ক্যারিবীয় কন্ডিশনে নিজের শুরুটা হয়েছিল দুর্দান্ত। প্রথম ম্যাচে কোন উইকেট না পেলেও আট ওভার বোলিং করে খরচ করেছিলেন মাত্র ১৬ রান। পরের ম্যাচে আরো অপ্রতিরোদ্ধ এই স্পিনার। মাত্র ১৯ রান দিয়ে তুলে নিলেন ৩ উইকেট। আর সিরিজের শেষ ম্যাচেও পেয়েছেন দুই উইকেট।

নিজের অভিষেক ওয়ানডে সিরিজেই পাঁচ উইকেট নিয়ে নাসুম আহমেদ বড় কিছুর আভাষই দিচ্ছিলেন। এরপর ভারতের বিপক্ষে সুযোগ হয়েছিল এক ম্যাচে মাঠে নামার। সেই ম্যাচে অবশ্য উইকেটের দেখা পাননি। আর তাতেই দলে জায়গাটা হারিয়ে ফেলেছেন এই স্পিনার।

কিছুদিন আগেই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের জন্য ১৪ সদস্যের দল ঘোষণা করা হয়েছে। সেখানে সাকিব আল হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজের সাথে আছেন তাইজুল ইসলাম। নাসুম আহমেদের তাই আর দলে জায়গা হয়না।

একাদশে নিশ্চিতভাবেই খেলবেন সাকিব আল হাসান। আরেকজন বাঁহাতি স্পিনার একাদশে খেলানোর সম্ভাবনাই তাই কম। যদি প্রয়োজন হয় সে কারণেই রাখা হয়েছে তাইজুলকে। সেজন্যই আরেকজন বাড়তি বাঁহাতি স্পিনার নিয়ে দল ভারী করতে চায়নি বাংলাদেশ দল। সাথে ডানহাতি স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ তো খেলবেনই।

এই সাকিব আল হাসানের থাকা দলে একাধিক স্পিনার থাকায় কপাল পুড়লো নাসুম আহমেদের। নাসুম আহমেদের বাদ পড়ার ব্যাপারে বাংলাদেশের স্পিন বোলিং কোচ রঙ্গনা হেরাথও দিয়েছেন একইরকম ব্যাখ্যা। হেরাথ বলেন, ‘দেখুন দলে যখন সাকিব আল হাসান থাকে, তখন দুজন বাঁ-হাতি স্পিনারের প্রয়োজন হয় না। নির্বাচকদের হয় তাইজুলকে নিতে হত কিংবা নাসুমকে। সেক্ষেত্রে তাঁরা তাঁদের সেরা অপশনকেই বেঁছে নিয়েছে।’

ফলে ওয়ানডে দলে নিজের জায়গাটা পাকা করতে হলে নাসুমকে দিতে হবে আরো কঠিন পরীক্ষা। আপাতত টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটেই এই স্পিনারকে হতে হবে আরো বেশি কার্যকর। এছাড়া অপেক্ষা করতে হবে ওয়ানডে ফরম্যাটে আরো একটু সুযোগের জন্য।

ওদিকে ওয়ানডে দলে সুযোগ পেলেও ম্যাচ খেলাটা খুব একটা সহজ হবেনা নাসুমদের জন্য। কেননা এই মুহূর্তে ওয়ানডে ফরম্যাটে বাংলাদেশ একাদশে তিনজন স্পিনার নিয়ে খুব কমই খেলে থাকে। আর প্রথম দুই স্পিনার হিসেবে সাকিব ও মিরাজের জায়গাটা পাকা। ফলে দলে যেই থাকুক তাঁরা এই দুজনের বিকল্প হিসেবেই থাকবেন।

ফলে তাইজুল ইসলাম কিংবা নাসুম আহমেদের আসলে সময়ের দোষ দেয়া ছাড়া উপায় নেই। নিজেরা পারফর্ম করেও এই মুহূর্তে ওয়ানডে ম্যাচ খেলাটা তাঁদের জন্য কঠিন। বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য এ যেন এক মধুর সমস্যা।

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link