অথচ এবারের আইপিএলে একাদশে থাকার কোনো সম্ভাবনাই ছিল না তাঁর। লোকেশ রাহুলের ইনজুরিতে ভাগ্য খুলে যায় তাঁর। অপ্রত্যাশিতভাবে পাওয়া সুযোগটা কাজে লাগিয়ে লখনৌ সুপার জায়ান্টসের জয়ের নায়ক প্রেরক মানকড়।
আইপিএলে সুযোগ না পেলেও ঘরোয়া ক্রিকেটে সৌরাষ্ট্রের নিয়মিত মুখ প্রেরক। দলটির বয়সভিত্তিক দল থেকে উঠে এসে জায়গা করে নিয়েছেন সিনিয়র দলে। গত মৌসুমে ঘরোয়া ক্রিকেটে স্বপ্নের মতো এক মৌসুম কাটিয়েছেন এই তারকা। সৌরাষ্ট্রকে জিতিয়েছেন বিজয় হাজারে ট্রফি এবং রঞ্জি ট্রফির শিরোপা।
ঘরোয়া ক্রিকেটে মূলত অলরাউন্ডার হিসেবে মিডল অর্ডারেই ব্যাট করে থাকেন এই তারকা। ব্যাট হাতে বড় ইনিংস খেলার পাশাপাশি তাঁর ডানহাতি মিডিয়াম পেস বোলিংও দারুণ কার্যকরী। দলটির হয়ে ৪৩ টি টোয়েন্টি ম্যাচে সাত হাফসেঞ্চুরি আর ১৪২ স্ট্রাইকরেটে ৮৭৭ রান করেন এই তারকা। এছাড়া বল হাতেও শিকার করেছেন ২২ উইকেট। ঘরোয়া টুর্নামেন্টগুলোতে ইনিংসের শেষ দিকে নেমে বড় বড় ছক্কা হাঁকানোর সুখ্যাতি আছে মানকড়ের।
আইপিএলে গত মৌসুমে ২০ লাখ রুপির বিনিময়ে তাঁকে দলে ভেড়ায় পাঞ্জাব কিংস। কিন্তু গোটা মৌসুমে এক ম্যাচের বেশি মাঠে নামার সুযোগ হয়নি তাঁর। এবারের মৌসুমের আগে পাঞ্জাব তাঁকে ছেড়ে দিলেও ঘরোয়া ক্রিকেটে দারুণ পারফরম্যান্সের সুবাদে দল পেতে অসুবিধা হয়নি। ঠিকানা বদলে তাঁর জায়গা হয় গৌতম গম্ভীরের লখনৌ সুপার জায়ান্টস।
মানকড় জানতেন লখনৌর তারকাঠাসা টপ অর্ডারেও জায়গা মিলবে না তাঁর। তবে হতাশ হননি, চেষ্টা চালিয়ে গেছেন নিজের মতো। অপেক্ষার ফলও মিলেছে দারুণভাবে, লোকেশ রাহুলের ইনজুরি এবং দীপক হুডার বাজে ফর্মের সুবাদে জায়গা পেয়ে যান একাদশে। যদিও প্রথম ম্যাচে ব্যাটিংয়ে নামার সুযোগ পাননি।
তবে পরের ম্যাচেই তাঁর উপর ভরসা রেখে তিন নম্বরে ব্যাট করার সুযোগ দিয়েছিল লখনৌ টিম ম্যানেজমেন্ট। মানকড়ও সেই আস্থার প্রতিদান দিলেন কি দারুণভাবে, সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের বিপক্ষে বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে একপ্রান্ত আগলে রেখে দলকে এনে দিয়েছেন মনে রাখার মতো জয়।
মানকড় জানতেন রাহুলের মতো উইকেটের চারপাশে শট খেলা কিংবা নিকোলাস পুরানের মতো পেশির জোর তাই নেই। সেই কারণেই কিনা অতিরিক্ত আক্রমণাত্নক ক্রিকেট খেলার চাইতে বরং মনোযোগ দিয়েছেন ইনিংস বড় করার দিকে। বাজে বলকে অবশ্য ছাড় দেননি, সোজা পাঠিয়েছেন সীমানার বাইরে।
তাঁর বড় ইনিংসের সুবাদেই কিনা বিপাকে পড়তে হয়নি লখনৌকে, অপরপ্রান্তে আক্রমণাত্নক ব্যাটিং করার লাইসেন্স পেয়েছেন স্টয়নিস-পুরানরা। সাত চার আর দুই ছক্কায় ৪৫ বলে অপরাজিত ৬৪ রানের ইনিংস খেলে দলকে জিতিয়েই ফিরেছেন এই তারকা।
ভাগ্য সবাইকেই সুযোগ দেয়। কেউ সুযোগটা দুহাত ভরে কাজে লাগান, কেউবা সুযোগটা হারিয়ে নিজেরাই চলে যান বিস্মৃতির আড়ালে। প্রেরক মানকড় সুযোগটা কাজে লাগানোর সুবাদেই ম্যাচ জেতানোর গল্প লিখে যান বাইশ গজে।