ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) পঞ্চদশ আসরে ব্যাট হাতে বিধ্বংসী রূপে আছেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর উইকেটরক্ষক ব্যাটার দীনেশ কার্তিক। ফিনিশিংয়ে তার স্ট্রাইক রেট আকাশছোয়া। সাবেক ক্রিকেটার থেকে শুরু করে ভারতীয় সমর্থকদের অধিকাংশই মনে করেন আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে কার্তিককে ভারতের স্কোয়াডে রাখা উচিত।
৩৬ বছর বয়সে ব্যাট হাতে উড়ন্ত ফর্মে আছেন তিনি। তার পাওয়ার হিটিং বিশেষ নজর কেঁড়েছে এবারের আসরে। আট ইনিংসে এখন পর্যন্ত কার্তিকের স্ট্রাইক দুইশো। স্ট্রাইক রেটের দিক থেকে বড় বড় তারকাদের ছাড়িয়ে এবারের আসরে সবার উপরে অবস্থান কার্তিকের। কমপক্ষে একশো রান করা ব্যাটারদের মধ্যে শীর্ষে আছেন তিনি। কিন্তু বিশ্বকাপের দলে ঋষাভ পান্তের সাথে প্রতিযোগিতা করে জায়গা মেলাতে পারবেন কিনা সে নিয়ে অবশ্য সংশয় আছে।
সাবেক ভারতীয় ক্রিকেটার ও জনপ্রিয় ধারাভাষ্যকার সঞ্জয় মাঞ্জরেকার মনে করেন ভারতীয় দলে পান্ত অনেকটাই এখন থিতু। উড়ন্ত ফর্মে থাকলেও পান্তের সাথে পাল্লা দিয়ে কার্তিকের জন্য একাদশে জায়গা করাটা কঠিন হবে বলে মনে করছেন সঞ্জয়।
তিনি বলেন, ‘যদি সে আসরের বাকি অংশেও এই ফর্ম ধরে রাখতে পারে। আমরা মাত্র আইপিএলের হাফে পৌঁছেছি। লিগের শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করে দেখি তাঁর ফর্ম ধরে রাখতে পারে কিনা। কার্তিককে দলে নিতে হলে তো একজনকে বাদ দিতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কিন্তু একটু ভালভাবে দেখলে দেখা যাবে ভারতের একাদশে জায়গা করাটা খুব কঠিন। কারণ তাঁকে শুধুমাত্র ৫, ৬ ও ৭ নম্বর পজিশনের জন্য বিবেচনা করা হবে। সে তো আর টপ অর্ডারে ব্যাট করবে না। আমার মনে হয়না উপরের দিকে তাঁকে বিবেচনা করা হবে। তাঁকে পান্তের সাথে লড়াই করতে হবে। আমাদেরকে হার্দিক পান্ডিয়া ও কার্তিকের দিকে দেখতে হবে। এটা খুব সহজ হবে না।’
সবশেষ ২০১৯ বিশ্বকাপে ভারতের জার্সি গায়ে খেলেছিলেন কার্তিক। ভারতের নিদাহাস ট্রফি জয়ের এই নায়ক ৩৬ টেস্ট, ৯৪ ওয়ানডে ও ৩২ টি-টোয়েন্টি খেলেছেন। ২০০৪ সালে অভিষেকের পর দলে অনেকটাই আসা যাওয়ার মধ্যে ছিলেন তিনি। মাঞ্জরেকার মনে করেন সে শুধুমাত্র জেনুইন ব্যাটার কিংবা কিপার হিসেবে দলে আসতে পারে। অপরদিকে, হার্দিক পান্ডিয়াও দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
সঞ্জয় বলেন, ‘হার্দিক ভারতের জন্য দরকার। ভারত তিন পেসার এবং সম্ভবত সাথে চাহালকে নিয়ে দল সাজাবে। চাহাল ক্যারিয়ারের সেরা ফর্মে আছে। জাদেজা ব্যাকআপ স্পিনার হিসেবে থাকবে। কিন্তু তাদের একজন ব্যাকআপ পেসার প্রয়োজন। আমরা গেল বিশ্বকাপে সেটার অভাববোধ করেছি। তাই হার্দিক এবং কার্তিক লাইক ফর লাইক পরিবর্তন হওয়া সম্ভব না। তাই আমি কার্তিককে শুধু কিপার কিংবা ব্যাটার হিসেবেই দেখছি।’
আইপিএলের চলতি আসরে ব্যাঙ্গালুরুর জার্সি গায়ে ৮ ম্যাচে এক ফিফটিতে ১০৫ গড় আর ২০০ স্ট্রাইক রেটে ২১০ রান করেছেন কার্তিক। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের স্কোয়াডে জায়গা পাওয়ার সম্ভাবনাটা থাকলেও একাদশে ঠাঁই মেলা নিয়েই সংশয়।
যদিও ভারতীয় সমর্থকরা মনে করেন কার্তিককে একাদশে জায়গা দেওয়াটাই দলের জন্য ভাল হবে। লোয়ার অর্ডারে ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ম্যাচে পার্থক্য গড়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার।