৩৩ বছর বয়সেই বোর্ড সভাপতি!

৩৩ বছর বয়সী জয় শাহ-ই কি বোর্ড অব কনট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়ার (বিসিসিআই) সর্বকনিষ্ঠ সভাপতি হিসেবে চেয়ারে বসতে চলেছেন? বুধবার সুপ্রিমকোর্ট বোর্ডের সংবিধানে পরিবর্তন এনে কুলিং অফ পিরিয়ডে সংশোধন করা হয়েছে। বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় ও হিমা কোহলির বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছে, কোনও ব্যক্তি ৬ বছর বা দুটি টার্মে রাজ্য সংস্থায় থাকার পর ৬ বছর বিসিসিআইয়ের পদে থাকতে পারবেন।

ফলে সৌরভ গাঙ্গলি ও জয় শাহের বিসিসিআইয়ের স্বপদে বহাল থাকতে কোনও বাধা নেই। কিন্তু বিসিসিআইয়ের বার্ষিক সাধারণ সভা বা নির্বাচন হবেই। তাতে জয় শাহ সৌরভ গাঙ্গুলির জায়গায় সভাপতি হবেন কিনা তা নিয়ে ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে জল্পনা কল্পনা।

সৌরভ যখন বিসিসিআই সভাপতি হন সেবার বোর্ড সভাপতি হওয়ার বিষয়ে এগিয়ে ছিলেন এন শ্রীনিবাসনের ঘনিষ্ঠ ব্রিজেশ প্যাটেল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে বদলে যায় যাবতীয় সমীকরণ। ব্রিজেশকে শেষ সময়ে পেছনে ফেলে বিসিসিআই সভাপতি হন সৌরভ, আর সেক্রেটারি নির্বাচিত হন জয় শাহ। ভারতীয় ক্রিকেট মহলের ধারণা, এই সমীকরণ বদলে দেওয়ার পেছনে ছিলেন অমিত শাহ।

এখন প্রশ্ন হল, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর সৌরভ ও জয় আরও তিন বছর বিসিসিআইয়ে থাকতে পারবেন। তবে দুজনকেই একসঙ্গে কুলিং অফে যেতে হবে। সে হিসেবে জয় শাহ কখনোই সভাপতি হতে পারবেন না।  আর অনেকেরই ধারণা কোভিডের ক্রান্তিলগ্নেও যে আইপিএল আয়োজন করা সম্ভব হয়েছিল, তার পেছনে সবচেয়ে বেশি অবদান ছিল জয় শাহর। সেবার আইপিএলের মিডিয়া স্বত্ত্ব বিক্রি হয়েছিল ৪৮,৩৯০ কোটি টাকায়। এটাও অনেকে জয়ের কৃতিত্ব বলে মনে করেন। তাই অনেকেই মনে করছেন, এটাই জয় শাহের বোর্ডের শীর্ষ পদের বসার শ্রেষ্ঠ সময়।

এদিকে সৌরভ গাঙ্গুলি পরবর্তী আইসিসি চেয়ারম্যান হওয়ার দৌড়ে ফেবারিট। সেক্ষেত্রে বিসিসিআই সভাপতি হতে জয়ের পথ সহজ হতেই পারে। তবে আইসিসির বোর্ড মিটিং নভেম্বরে। তখনই পরবর্তী আইসিসি চেয়ারম্যানের নাম ঘোষণা হবে। তার আগে বিসিসিআইয়ের নির্বাচন। তাই এই মুহূর্তে বিসিসিআই মসনদে বসার লড়াই কোন দিকে যায় সেটিই দেখার বিষয়।

এ ছাড়া বিসিসিআই থেকে এখন আইসিসিতে প্রতিনিধিত্ব করার ক্ষেত্রে ৭০ বছরের ঊর্ধ্বসীমাও উঠে গিয়েছে। ফলে দরজা খুলে গিয়েছে এন শ্রীনিবাসনের জন্যও। আইসিসিতে বিসিসিআইকে শক্তিধর করার ক্ষেত্রে ভূমিকা ছিল শ্রীনির। আইসিসির লভ্যাংশের যে বেশিরভাগটা বিগ থ্রি অর্থাৎ ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের ক্রিকেট বোর্ডের কাছে যায় সেই পরিকল্পনাটাও ছিল শ্রীনির। লোধা কমিশনের সুপারিশ শ্রীনির ক্রিকেট প্রশাসনে ফেরার সম্ভাবনা অনিশ্চিত করে দিয়েছিল। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর শ্রীনিও নড়েচড়ে বসতে পারেন।

 

লোধা কমিটির সংশোধন মেনে বোর্ডের নতুন সংবিধান তৈরি হয়েছিল ২০১৯-এ। তারপরেই বোর্ডের মসনদে বসেন সৌরভ গাঙ্গুলি আর জয় শাহ। সেই বছরেই লোধা কমিটির সুপারিশকৃত কুলিং অফ পিরিয়ডে পরিবর্তন চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল বোর্ড। মাত্র তিন বছর একটা টার্মের পর যাতে কুলিং অফে যেতে না হয়, তার জন্য সুপ্রিমকোর্টের কাছে আবেদন জানিয়েছিল বোর্ড।

সেই দাবি মেনেই বুধবার সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে তিন বছর নয়, মোট ছয় বছর বোর্ডে থাকার পরে কুলিং অফে যেতে হবে। অর্থাৎ সুপ্রিমকোর্টের রায়ের পর সৌরভ-জয় শাহ ২০২৫ পর্যন্ত বোর্ডে থাকতে পারবেন।

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link