দলগুলো যাতে ঢেলে সাজানো যায়, সে কারণেই আয়োজিত হয়েছে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) মেগা নিলাম। তবে কলকাতা নাইট রাইডার্স বেশ ধূর্ততার পরিচয় দিয়েছে। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা, গেলবারের ফাইনালের নয় জন খেলোয়াড়কে নিজেদের ডেরায় রেখে দিতে সক্ষম হয়েছে।
আর সে কাজটি করতে গিয়ে তারা সর্বোচ্চ অর্থ খরচ করেছে ভেঙ্কেটেশ আইয়ারের পেছনে। ২৩ কোটি ৭৫ লাখ রুপিতে তাকে দলে নিয়ে কলকাতা। এখানেই সম্ভবত খানিক ভুল করেছে নাইট রাইডার্স ফ্রাঞ্চাইজি। ছয় জন খেলোয়াড়কে তারা রিটেইন করেছিল।
সেই ছয় জনের একজন অবশ্যই ভেঙ্কেটেশ হওয়ার উচিত ছিল। তাতে করে এত বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচের প্রয়োজন নিশ্চয়ই পড়ত না। তবে সেসব ছাপিয়ে ভেঙ্কেটেশ ফিরেছেন এটা একটা স্বস্তির বিষয় বটে। তবে অস্বস্তির বিষয় হয়ে দাঁড়াতে পারে ফিল সল্টের প্রস্থান। তাকে দলে ফিরিয়ে আনতে পারেনি কলকাতা।
গেল আসরে ফিল সল্ট কলকাতাকে দূর্দান্ত শুরু এনে দিয়েছিলেন। সেই শুরুর দায়িত্বভার এবার সামলাতে হবে কুইন্টন ডি কক অথবা রহমানুল্লাহ গুরবাজকে। যদিও অধিকাংশ ম্যাচে ডি ককের উপরই আস্থা রাখতে চাইবে নাইটরা।
শ্রেয়াস আইয়ার চলে গেছেন পাঞ্জাব কিংসে। তার পরিবর্তে কলকাতার অধিনায়ক কে হবেন, সেটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। তবে মিডল অর্ডারে স্থিতিশীলতা প্রদানের কাজটা এবার আজিঙ্কা রাহানেকে করতে হবে। তেমন পরিকল্পনা থেকেই হয়ত তাকে দলে নিয়েছে কলকাতা। শ্রেয়াসের কাজটা ভালভাবেই করে দিতে পারবেন তিনি হয়ত।
কিন্তু অধিনায়ক কে হবেন, এই প্রশ্নের উত্তর এখনই পাওয়া দুষ্কর। তবে স্পিন ডিপার্টমেন্টেও যথেষ্ট ভাল অবস্থানেই রয়েছে কলকাতা। বরুণ চক্রবর্তীর সাথে সুনীল নারাইন রয়েছেন। মায়াঙ্ক মার্কান্ডেকে দলে নেওয়া হয়েছে সুয়াশ শর্মার পরিবর্তে। তৃতীয় স্পিনার কিংবা ইম্প্যাক্ট স্পিনার হিসেবে মায়াঙ্ককে ব্যবহার করতে পারবে কলকাতা।
তাছাড়া মঈন আলীর মত পরীক্ষিত অলরাউন্ডারকে দলে নিতে পেরেছে নাইটরা। তিনি যেমন একাদশে ভারসাম্য বজায় রাখবেন, তেমনি মিডল অর্ডারে স্থিতিশীলতাও দিতে পারবেন। প্রয়োজন হাতখুলে খেলার অভিজ্ঞতাও তার কম নয়।
হার্শিত রানার মত একজন তরুণ পেসারকে ধরে রাখা কলকাতার দূরদর্শী চিন্তাভাবনার অন্যতম নিদর্শন। টেস্ট ক্রিকেটে দারুণ শুরু করা হার্শিত নিজেকে প্রমাণের সর্বোচ্চ চেষ্টাই চালাবেন। মিশেল স্টার্ক চলে গেছেন। কিন্তু তার পরিবর্তে এনরিখ নর্কিয়া ও স্পেন্সার জনসনের মত বিকল্প দলে নিয়েছে কলকাতা। এছাড়াও পেস আক্রমণে তরুণ উমরান মালিক যুক্ত হয়েছে। তাছাড়া বৈভব অরোরাও ফিরেছেন নাইটদের শিবিরে।
অতএব বেশ ভারসাম্যপূর্ণ একটা দলই গড়েছে কলকাতা নাইট রাইডার্স। তাদের দলে রিঙ্কু সিং, আন্দ্রে রাসেল ও সুনীল নারাইনদের মত ম্যাচ উইনার রয়েছে আগে থেকেই। সবকিছু মিলিয়ে আরও একবার শিরোপার জন্যে দৌড় শুরু করতে প্রস্তুত কলকাতা নাইট রাইডার্স। স্রেফ যথার্থ অধিনায়ক খুঁজে বের করতে হবে কলকাতাকে।