বিশ্বকাপ দলে নেই আন্দ্রে রাসেল, সুনীল নারাইনের মতো টি-টোয়েন্টির রাজারা। বিশ্বকাপ শুরুর ঠিক আগ মুহূর্তেই হাস্যকর কারণে দল থেকে বাদ অন্যতম সেরা ব্যাটার শিমরন হেটমায়ার। তবুও সমর্থকদের আশা ছিল অন্তত গ্রুপ পর্ব পেরিয়ে সুপার টুয়েলভে নাম লিখবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
তবে, টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন দেশটি ২০২২ টি- টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ক্রিকেটের মূলপর্বে ওঠার আগেই বিদায় নিলো। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে ৯ উইকেটে হেরে গিয়ে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে পড়লো এক সময়ের টি-টোয়েন্টির রাজারা। তাদের বিদায়ে ক্রিকেট বোদ্ধা থেকে সাধারণ সমর্থক সকল পর্যায়ে শুরু হলো সমালোচনা। এমনকি ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান রিকি স্কেরিট পর্যন্ত বিবৃতি দিয়ে নিজেদের সমালোচনা করেন।
বিশ্বকাপে গ্রুপ বি-তে থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম ম্যাচেই আইসিসির সহযোগী দেশ স্কটল্যান্ডের কাছে ৪২ রানে হেরে গিয়ে বিশ্বকাপ যাত্রা শুরু করে। তবে এরপরের ম্যাচে বোলারদের দারুন পারফরম্যান্সে জিম্বাবুয়েকে ৩১ রানে হারিয়ে মূল পর্বে জয়ের স্বপ্ন জাগিয়ে তোলে আলজারি জোসেফ-জেসন হোল্ডাররা।
নিজেদের শেষ ম্যাচে জিতলেই মূলপর্বে উত্তীর্ণ হবে এমন ম্যাচে ব্যাটারদের ব্যর্থতায় আয়ারল্যান্ডের কাছে মাত্র ১৪৭ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয়। এরপর বোলাররাও জিম্বাবুয়ে ম্যাচের মত দারুণ কিছু করতে না পারলে মাত্র ১৭.৩ ওভারে এক উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌছিয়ে যায় আয়ারল্যান্ড। এতেই বিদায় নিশ্চিত হয় ক্যারিবিয়ানদের।
মূলত ব্যাটিং ব্যর্থতায় তাদের এবারের বিশ্বকাপ থেকে বিদায় করে দিয়েছে। গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ১১৮ , জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১৫৩ ও শেষ ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ১৪৬ রান সংগ্রহ করে এভিন লুইস-নিকোলাস পুরানরা। তিন ম্যাচে মাত্র একটা দেড়শো পেরোনো ইনিংসেই বলে দেয় কতোটা ব্যর্থ ছিল ক্যারিবিয়ান ব্যাটাররা।
ম্যাচ শেষে ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওয়েবসাইট ও টুইটারে দেওয়া এক বিবৃতিতে বোর্ড সভাপতি বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ায় আমাদের দলের ফলাফলে আমি গভীর হতাশ। বিশ্বকাপ চলাকালে স্লো বোলারদের বিশেষ করে স্পিনারদের বিপক্ষে আমাদের ব্যাটারদের দুর্বলতা প্রকট আকার ধারণ করেছিল। আমাদের ব্যাটারদের সঠিক সময়ে সঠিক শট নির্বাচনে দুর্বলতাও হতাশাজনক ফলাফলের মূল কারণ।’
এসময় তিনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের সমর্থকদের আশ্বস্ত করেন বিশ্বকাপে দলের এই পারফরম্যান্সের সঠিক তদন্ত করা হবে এবং এই অবস্থা থেকে দলকে বেরিয়ে আনতে যথাযথ পদক্ষেপ নিবে তার বোর্ড। রিকি স্কেরিট বলেন, ‘আমি সকল সমর্থক ও সহযোগীদের আশ্বস্ত করতে চাই যে দলের এমন ভরাডুবির কারন “পুঙ্খানুপুঙ্খ ময়নাতদন্ত” করা হবে। আপনাদের সমর্থন ও সহযোগীতায় এই দু:সময় কাটিয়ে উঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটকে এগিয়ে নিতে পারবো। আশা করি আমাদের এই লড়াইয়ে আপনারা সব সময়ই সমর্থন জোগাবেন।’
সত্তর ও আশির দশকের সর্বজয়ী দল ওয়েস্ট ইন্ডিজ ওয়ানডে ও টেস্ট ক্রিকেটে নিজেদের হারিয়ে খুঁজছে বহুদিন ধরেই। তবে গত চার টি- টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দুইটির শিরোপা জিতে ক্রিকেটের ক্ষুদ্রতম সংস্করণে নিজেদের টিকিয়ে রাখলেও এবারের বিশ্বকাপের শুরুতেই বাদ পড়া ক্রিকেট বিশ্বের সামনে নতুন প্রশ্ন তুলে ধরলো , ‘ওয়ানডে আর টেস্ট ক্রিকেট থেকে হারিয়ে যাওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবার টি- টোয়েন্টি ক্রিকেটেও নিজেদের পথ হারিয়ে ফেললো?’