বাংলাদেশের টেল এন্ডাররা কেন ব্যাটিং জানে না!

আগেরদিন জনাথন ট্রট বলে গেলেন, ‘কালকে দশ রানে পাঁচ উইকেট নিয়ে আমরা ৫০০ রান করলেই হবে।’ নিজের শির্ষ্যদের উপর আস্থা রেখেই সে কথা বলেছিলেন আফগানিস্তানের প্রধান কোচ ট্রট। অদ্ভুত হলেও সত্য, সে কাজটা করে দেখিয়েছে আফগান বোলাররা। তবে এক্ষেত্রে আফগান বোলারদের কৃতিত্বের চাইতেও, বাংলাদেশি টেল এন্ডারদের ব্যর্থতাই মূল কারণ।

৩৬২ রান স্কোরবোর্ডে রেখে বাংলাদেশ শুরু করে টেস্টের দ্বিতীয় দিন। মুশফিকুর রহিম ও মেহেদী হাসান মিরাজ আগের দিন ইতিবাচক স্বপ্ন দেখিয়েই শেষ করেছিলেন। তবে এদিন শুরুতেই খাবি খেলেন পরীক্ষিত এই দুই ব্যাটার। মিরাজ একটা হাফ হার্ডেট শট খেলে চলে গেলেন প্যাভিলিয়নে।

অন্যদিকে, মুশফিকে পরাস্ত হন হঠাৎ ওঠা এক বাউন্সারে। স্লিপে ক্যাচ দিয়ে তিনিও ফিরলেন। ৩৭৩ রানে মেহেদী মিরাজের বিদায়ের পর পরবর্তী নয় রানেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশের ব্যাটিং ইউনিট। কথায় আর কাজে খুব একটা ব্যত্যয় ঘটায়নি আফগান শিবির। কোচ দশ রান বললেও, নয় রানেই বাংলাদেশকে বোলিংয়ে পাঠিয়েছে আফগানরা।

তাতে অবশ্য আবারও বাংলাদেশের লেজের দিককার ব্যাটারদের দূর্বলতা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। ব্যাট হাতে আবারও হতশ্রী পারফরমেন্স শেষের দিকের ব্যাটারদের। প্রতিরোধ তো দূরে থাক, সর্বোচ্চ ১১ বল টিকতে পেরেছেন কেবল শরিফুল ইসলাম। বাকিরা খানিকটা সময় পিচে টিকতেও পারেননি।

কন্ডিশনের দোষ দিয়ে ব্যাটারদের এই দূর্বলতা এড়িয়ে যাওয়া যায়। কিন্তু তবুও আফগানিস্তানের বেশ নড়বড়ে বোলিং লাইনআপের বিপক্ষে এমন মুখ থুবড়ে যাওয়াটা তো বেশ দুশ্চিন্তা জাগায়। সেক্ষেত্রে আবারও পাঁচ বোলার নিয়ে খেলার নীতি প্রশ্নবিদ্ধ হয়। অতিরিক্ত একজন ব্যাটারের ঘাটতিই যেন আরও একবার মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে।

সবচেয়ে বড় শঙ্কাটা জাগে, কঠিন প্রতিপক্ষদের বিপক্ষে বাংলাদেশের পরিস্থিতি হতে পারে আরও ভয়ানক। সামনের পঞ্জিকাতেই প্রায় ১২টি টেস্ট ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। সেখানে শক্ত প্রতিপক্ষের সামনে বাংলাদেশের লেজের ব্যাটারদের এমন দূর্বলতায় ম্যাচ বাঁচানোই দায় হয়ে দাঁড়াবে। যদিও এই সমস্যার সমাধানে তাসকিন আহমেদ, তাইজুল ইসলামরা কাজ করে যাচ্ছেন।

আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচ শুরু হওয়ার আগে, শেষের দিকের ব্যাটারদের নিয়ম করে অনুশীলন করতে দেখা গেছে। তবুও যেন প্রতিকার মিলছে না। মাত্র ২১ বল খেলেছেন তাসকিন, তাইজুল, এবাদতরা। অন্তত ওভার দশেক খেলার মত সক্ষমতা তো থাকা চাই টেল এন্ডারদের।

অন্তত টেস্ট ক্রিকেটে ফলাফল গড়ে দিতে শেষের দিকের ব্যাটারদের অবদান প্রয়োজন। সেদিক থেকে পেছনের দিকেই যেন হেঁটে চলেছে বাংলাদেশ। যদিও এদিন প্রথম সেশনে উইকেট পড়েছে মোট আটটি। তাতে কন্ডিশন একটা প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে। তবুও তো শঙ্কা একেবারেই উবে যায় না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link