তারপরও অস্বস্তিই সঙ্গী

তৃতীয় দিনের শেষ বিকালে স্পিনারদের ঘূর্ণিতে তৃপ্তি মিললেও এখনো অস্বস্তি কাটেনি বাংলাদেশের। দিন শেষে ৭ উইকেট হাতে রেখে ইতিমধ্যে ১৫৪ রানের লিড নিয়েছে সফরকারীরা।

ঢাকা টেস্টের তৃতীয় দিন পুরোটা সময় জুড়েই ম্যাচ বাঁচাতে লড়াই করেছে বাংলাদেশ। লিটন দাস ও মেহেদী হাসান মিরাজের ব্যাটে ফলোওয়ান এড়ানোর পর স্পিনাদের সৌজন্যে ম্যাচে ফেরার স্বপ্ন দেখছে স্বাগতিকরা। আগামীকাল দিনের প্রথম সেশনেই নির্ধারণ হয়ে যাবে দ্বিতীয় টেস্টের ভাগ্য।

প্রথম ইনিংসে ১১৩ রানের লিড নিয়ে ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বাংলাদেশি স্পিনারদের ঘূর্ণিতে একে একে ফিরে যান ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট (৬), জন ক্যাম্বল (১৮) ও মসলে (৭)। দিন শেষে ৩ উইকেট হারিয়ে ৪১ রান সংগ্রহ করেছে সফরকারীরা। ওয়ারিক্যান ২ ও বোনার ৮ রানে অপরাজিত রয়েছেন।

বাংলাদেশের পক্ষে ১ টি করে উইকেট শিকার করেন তাইজুল ইসলাম, নাঈম হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজ। বাংলাদেশের পক্ষে টেস্টে দ্রুততম ১০০ উইকেট শিকারের রেকর্ড গড়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ।

এর আগে দিনের শুরুতে ৪ উইকেটে ১০৫ রান নিয়ে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় দিনের শেষ বিকালে বাংলাদেশ ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ার পর দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে যাওয়া মোহাম্মাদ মিঠুন তৃতীয় দিনের সকালেই মনোযোগ হারিয়ে ফিরে যান ৮৬ বলে ১৫ রান করে।

মিঠুনের বিদায়ে পঞ্চম উইকেটে ৭১ রানের জুটি ভাঙ্গার পর উইকেটে বেশীক্ষণ থাকতে পারেননি মুশফিকুর রহিমও। ২৭ রান নিয়ে দিন শুরু করা মুশফিক টেস্ট ক্যারিয়ারের ২৩তম হাফসেঞ্চুরি তুলে নেওয়ার পরই নিজের উইকেট বিলিয়ে দেন। কর্নওয়ালের সাদামাটা এক বলে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে কাভারে ক্যাচ দেন মুশফিক (৫৪)।

মুশফিকের বিদায়ের পর ফলোওয়ানে পড়ার শঙ্কায় পড়ে বাংলাদেশ। তবে সপ্তম উইকেট জুটিতে দারুণ প্রতিরোধ গড়েন লিটন দাস ও আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান মেহেদী হাসান মিরাজ। লাঞ্চের আগ পর্যন্ত নিরাপদে কাটিয়ে দিয়ে দ্বিতীয় সেশনে দুজন সংগ্রহ করেন ৯১ রান; হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন দুজনই। ৬ উইকেটে ২৭২ রান নিয়ে চা বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।

তবে তৃতীয় সেশনের শুরুতেই কর্ণওয়ালের বলে সুইপ করতে গিয়ে শট ফিল্ডারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান লিটন দাস। ১৩৩ বলে ৭১ রানের দারুণ ইনিংস খেলে লিটন বিদায় নিলে ভাঙ্গে ১২৬ রানের জুটি। এই জুটি ভাঙ্গার পরই তাসের ঘরের মতো ভেঙ্গে পড়ে বাংলাদেশের ইনিংস। একই ওভারের শেষ বলে আউট হন নাঈম হাসান (০)।

পরের ওভারে মেহেদী হাসান মিরাজকে ফিরিয়ে দিয়ে পথের শেষ কাটা তুলেন নেন ক্যারিবিয়ান পেসার গ্যাব্রিয়েল। মিরাজের ব্যাট থেকে আসে ১৪০ বলে ৫৭ রান। শেষ ব্যাটসম্যান হিসাবে আবু জায়েদ রাহি (১) যখন আউট হন তখনও ওয়েস্ট ইন্ডিজের থেকে প্রথম ইনিংসে ১১৩ রানে পিছিয়ে ছিলো বাংলাদেশ। তাইজুল ইসলাম অপরাজিত ছিলেন ১৩ রানে।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে সবচেয়ে সফল বোলার ছিলেন রাহকিম কর্ণওয়াল। টেস্ট ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় বারের মতো ৫ উইকেট পেয়েছেন এই স্পিনার। এছাড়া গ্যাব্রিয়েল ৩ টি ও জোসেফ শিকার করেন ২ টি উইকেট।

সংক্ষিপ্ত স্কোর: তৃতীয় দিন শেষে

ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম ইনিংস: ৪০৯/১০ (১৪২.২)

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ২৯৬/১০ (৯৬.৫)

ওয়েস্ট ইন্ডিজ দ্বিতীয় ইনিংস: ৪১/৩ (২১)

ক্যাম্পবেল-১৮, বনার- ৮*;

তাইজুল ১/১৩, নাঈম ১/১৪, মিরাজ  ১/১৪।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link