লঙ্কান ধ্বংসযজ্ঞের নায়ক কিংবা খলনায়ক

কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়াম থেকে মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়াম। এশিয়া কাপ থেকে বিশ্বকাপের মঞ্চ। পার্থক্য শুধু এত টুকুই। দৃশ্যপটে এবারও সেই এক প্রতিপক্ষ, শ্রীলঙ্কা। আরও একবার লঙ্কানদের ত্রাস হয়ে হাজির হলেন সেই মোহাম্মদ সিরাজ। এশিয়া কাপের ফাইনালের চিত্রটার পুনরাবৃত্তি যেন ঘটলো বিশ্বকাপে এসেও।

এই মাস দুয়েক আগেই এশিয়া কাপের ফাইনালে শ্রীলঙ্কাকে এক প্রকার উড়িয়েই দিয়েছিল ভারত। সে ম্যাচে মাত্র ৫০ রানেই অলআউট হয়ে যায় শ্রীলঙ্কা। শ্রীলঙ্কার সেই ধ্বংসযজ্ঞে মূল ভূমিকা রেখেছিলেন মোহাম্মদ সিরাজ। ২১ রানে নিয়েছিলেন ৬ উইকেট। শুধু কি তাই, এক ওভারে ৪ উইকেটসহ, মাত্র ১৬ বলের মাঝে ৫ উইকেট নিয়ে গড়েছিলেন একাধিক কীর্তি।

কলম্বোর সেই ধ্বংসযজ্ঞের রেশ যেন এবার ছড়িয়ে পড়লো ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামেও। ৩৫৭ রানের রানপাহাড়ে চড়ে এ দিন প্রথমে চালকের আসনে বসেছিল ভারত। তবে পরের কাজটা নিজ কাঁধেই তুলে নেন সিরাজ। লঙ্কানদের ইনিংসে রীতিমত এ দিন তাণ্ডব চালিয়েছেন এ পেসার। শুরুটা অবশ্য করেছিলেন জাসপ্রিত বুমরাহ। ইনিংসের প্রথম বলেই ফিরে যান পাথুম নিশাঙ্কা।

এরপর বোলিং প্রান্তে এসে লঙ্কানদের ইনিংসের পুরো চিত্রটাই পাল্টে দেন সিরাজ। শুরুটা করেন দিমুথ করুণারত্নেকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলে। এরপর ঐ একই ওভারে সাদিরা সামারাবিক্রমাকে স্লিপে ক্যাচ বানিয়ে নিজের দ্বিতীয় উইকেট তুলে নেন সিরাজ।

নিজের দ্বিতীয় ওভারে আরো আগ্রাসী রূপে আবির্ভূত হন ভারতীয় এ পেসার। আর তাতে কুপোকাত হন কুশাল মেন্ডিসও। সিরাজের করা ব্যাক অফ দ্য লেন্থের বলটা যেভাবে পিচ করে, সেই বলটা যেন বুঝেই উঠতে পারেননি লঙ্কান এ ব্যাটার। সোজা অফস্ট্যাম্পে গিয়ে স্ট্যাম্প ছত্রখান করে দেয়। আর এই আউটের পরই ওয়াংখেড়েতে দেখে মেলে সিরাজের চিরায়ত ‘সিআরসেভেনের সিউ’ সেলিব্রেশন।

মোহাম্মদ সিরাজের এই এক স্পেলেই মাত্র ৭ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বসে শ্রীলঙ্কা। শুরুর এই ধাক্কা আর পরে কাটিয়েও উঠতে পারেনি লঙ্কানরা। কলম্বোর ফাইনালে ৫০ রানে অলআউট হওয়া শ্রীলঙ্কা এবার গুঁটিয়ে যায় মাত্র ৫৫ রানে। সিরাজের পর এ দিন বোলিং দ্যুতি ছড়িয়েছেন মোহাম্মদ শামিও। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচের পর এ ম্যাচেও তিনি তুলে নেন ফাইফার।

শামির ৫ উইকেট শিকারের পর হয়তো আড়ালেই থেকে যাবে সিরাজের এমন বোলিং তাণ্ডব। তবে শ্রীলঙ্কার এমন ব্যাটিং ধ্বসের শুরুটা তাঁর হাত দিয়েই হয়েছে। তিনি শুরু করেছিলেন, শেষটা করেছেন মোহাম্মদ শামি। আর তাতেই ৩০২ রানের বড় এক জয় পেয়েছে ভারত। একই সাথে, টুর্নামেন্টের প্রথম দল হিসেবে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করলো রোহিত শর্মা দল।

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link