কয়েক বছর আগেও ভারতের ক্রিকেট কোচদের ক্যারিয়ার নিয়ে প্রশ্ন শুনতে হতো। নিজে ভাল ক্রিকেটার না হলে কোচ হওয়া তাই দুরূহ ছিল তখন; কিন্তু সেই সময়টা এখন বদলে গিয়েছে, খেলাটা ভালভাবে বোঝাতে পারলেই কোচ হতে বাঁধা নেই এখন। আর এই পরিবর্তনের রূপকার টিম ইন্ডিয়ার ফিল্ডিং কোচ টি দিলীপ।
রবী শাস্ত্রী ভারতের হেডকোচ থাকাকালীন ফিল্ডিং বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন আর শ্রীধর। হায়দ্রাবাদের সাবেক এই স্পিনার ফিল্ডারদের ভাল থেকে বিশ্বসেরা করে তোলেন। কিন্তু টি দিলীপ স্রেফ বিপ্লব সৃষ্টি করেছেন; জাদেজা, কোহলিদের ‘গান’ ফিল্ডার হিসেবে গড়ে তুলেছেন। তাঁরা এখন কেবল ভাল একটা ক্যাচ কিংবা ডিরেক্ট থ্রোতে ম্যাচের গতিপথ পাল্টে দিতে পারেন।
যদিও দিলীপের কোচ হয়ে ওঠার ভ্রমণ এতটা সহজ ছিল না। উল্লেখ করার মত কোন ক্রিকেট ক্যারিয়ার না থাকা, পরিবারের অনিচ্ছা সবকিছুই তাঁকে টেনে ধরেছিল পিছন থেকে। বাধ্য হয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের কিছুদিন পড়াতেও হয়েছিল, তিনি হয়ে উঠেছিলেন গণিতের শিক্ষক।
তবে এসব প্রতিকূলতা তাঁকে আটকে রাখতে পারেনি। বিভিন্ন ধাপ পেরিয়ে তিনি এখন দেশসেরা কোচ, ড্রেসিংরুমের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। তাঁর ব্যাপারে বিসিসিআইয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘দিলীপ খুবই পরিশ্রমী কোচ। সে মাইক ইয়ংয়ের সহকারী হিসেবে ডেকান চার্জার্সে ছিল। লেভেল দুই এবং তিনে তাঁর ফলাফলও দারুণ ছিল, এরপর সে এনসিএ-তে আর শ্রীধরের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করেছিল।’
দিলীপের এমন পরিশ্রম চোখ এড়ায়নি রাহুল দ্রাবিড়ের। তাই তো নিয়মিত তাঁকে এ দলের এসাইনমেন্ট দিতেন দ্রাবিড়; এরপর একটা সময় জাতীয় দলে নিয়ে আসেন এই ফিল্ডিং কোচকে।
নিজের কাজ দিয়ে ইতোমধ্যে সবার প্রশংসা কুড়িয়েছেন দিলীপ। এনসিএ-র সাবেক এক কোচ বলেন, ‘কুলদীপ, সিরাজদের ফিল্ডিং দেখেছেন? দিলীপ এমন উন্নতির জন্য কৃতিত্ব প্রাপ্য।’
অন্যদিকে অশ্বিন বলেন, ‘গণিত, বিজ্ঞান যারা পড়ায় কেউই বিজ্ঞানী, প্রকৌশলী বা ডাক্তার নন। তাঁরা পুরো জীবন ভর শিক্ষকতাই করেন। আলো দেয়ার জন্য মোমবাতিকে যেমন গলতে হয়, তেমনি স্টার প্লেয়ার তৈরি করতে এই কোচরা মোমবাতি বনে যান।’