সেট হতে পারলে বড় ইনিংস খেলতে পারাটা সেরা ব্যাটারদের বৈশিষ্ট্য। ফিফটি ছুঁতে পারলে তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারের দিকে তীব্র আকাঙ্খা নিয়ে ছুটে চলেন তাঁরা। অথচ বাংলাদেশিরা যেন উল্টো; সেট হয়েও বড় ইনিংস খেলতে পারেন কম, আবার শতকের কাছাকাছি এসে খেই হারিয়ে ফেলেন।
এই যেমন মাহমুদুল হাসান জয়, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্টের শুরু থেকেই নিখুঁত ব্যাটিং প্রদর্শনী দেখিয়েছিলেন তিনি। দিনের দ্বিতীয় সেশনে ক্যারিয়ারের চতুর্থ হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি, যেভাবে এগুচ্ছিলেন তাতে মনে হয়েছিল সেঞ্চুরি কেবলই কিছু সময় দূরে। কিন্তু আশির ঘরে যেতেই মনোযোগে ছেদ পড়ে এই তরুণের; ফলাফল, ৮৬ রানে আউট।
গত কয়েক বছর ধরে এটিই টাইগারদের পরিচিত দৃশ্য। বারবার সেঞ্চুরির কাছে গিয়ে হাতছাড়া করেছেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা। এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৮৯ রান করেছিলেন নাজমুল শান্ত, একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে বিশ্বকাপে ৯০ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। সেদিন আবার সাকিব আল হাসানের ব্যাট থেকে এসেছিল ৮২ রান।
সবমিলিয়ে সবশেষ দুই বছরে ৮০ থেকে ৯৯ রানের মাঝে ১৭ বার আউট হয়েছেন লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। এই তালিকায় বাংলাদেশের ওপরে আছে মাত্র তিন দল; ভারতীয় ব্যাটাররা ৩০ বার আউট হয়েছেন ৮০ থেকে ৯৯ এর মাঝে, ইংলিশরা হয়েছেন ২৭ বার আর বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ানদের সাথে এমন ঘটনা ঘটেছে ২৩ বার।
সংখ্যার হিসেবে উপরে থাকলেও গড় হিসেবে বাংলাদেশ অবশ্য এদের ওপরেই থাকার কথা। কেননা ম্যাচ সংখ্যা এই তিন দলেরই সাকিব-শান্তদের চেয়ে অনেক বেশি। একই সাথে গত দুই বছরে মোট সেঞ্চুরিতেও বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে আছে দলগুলো।
৯০ কিংবা ৮০ এর সাথে ১০০ এর ব্যবধান খুব কম; দশ বা বিশ রানের। কিন্তু মানসিকভাবে এই ব্যবধান অনেক তাৎপর্যপূর্ণ, ৮০ বা ৯০ রানে অলআউট হলে যেমন হতাশ হতে হয়, তেমনি ১০০ ছুঁতে পারলে আত্মবিশ্বাস কয়েকগুণ বেড়ে যায়।
বাংলাদেশী ব্যাটাররা কবে বুঝবেন সেটা? যত তাড়াতাড়ি বুঝবেন তত বেশি মঙ্গল হবে তাঁদের নিজেদের জন্য, একই সাথে উপকৃত হবে টিম টাইগার্স।