নানা সময়ে সাকিব আল হাসান থেকেছেন খবরের শিরোনামে। সেটা এক নিত্যদিনের ঘটনায় পরিণত হয়েছিল বটে। এবারও তিনি আলোচনায়। তবে খেলার মাঠের কোন অর্জন কিংবা কোন অনাকাঙ্খিত ঘটনার জন্যে নয়। এবার তিনি আলোচনায় নির্বাচনের মাঠের তার পদার্পণে।
সাকিব আল হাসান, সম্ভবত বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাসের সর্বকালের সেরা তিনিই। এ নিয়ে তর্ক অহেতুক বটে। ভবিষ্যতে হয়ত এ নিয়ে বিতর্ক প্রতিযোগিতা আয়োজিত হতে পারে। কিন্তু এখন অবধি তিনিই যে বাংলাদেশ ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় নক্ষত্র।
ম্যাচের পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, তিনি হাজির হয়েছেন। দলের জয়ে নিজের মেধা আর দক্ষতার সবটুকু নিঙড়ে দিয়েছেন। কখনো বাংলাদেশকে বাঁচিয়েছন বল হাতে। কখনো আবার ব্যাট হাতে হয়েছেন জয়ের কান্ডারি। বিস্তৃত এক ক্রিকেট ক্যারিয়ারের প্রায় শেষভাগে তিনি।
এমন সময়ে দেশের জন্যে, দেশের মানুষের জন্যে অবদান রাখবার নতুন পথ বেছে নিয়েছেন। আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে তিনি সংসদ পদপ্রার্থী। মাগুরা-১ আসনের মানুষদের জনপ্রতিনিধি হবেন বলেই নেমেছেন নির্বাচনের মাঠে। নতুন এক চ্যালেঞ্জই যেন হাতে নিয়েছেন সাকিব আল হাসান।
অবশ্য চ্যালেঞ্জ নেওয়ায় সাকিব কখনোই পিছপা হননি। প্রতিপক্ষের ব্যাটারদের জমাট যুগলবন্দী বাংলাদেশের গলার কাটা। টাইগারদের বোলারদের সবাই যেখানে সেই জুটি ভাঙতে অপারগ, ঠিক তেমন মুহূর্তেই নিজেকে চ্যালেঞ্জের মুখে ছুড়েছেন সাকিব আল হাসান। যথা সময়ে ব্রেকথ্রু এনে দিতে তার যে জুড়ি মেলা ভার।
তাছাড়া সাকিব আল হাসান বেশ ধূর্ততার সাথে প্রতিপক্ষর পরিকল্পনা নস্যাৎ করেছেন খেলার মাঠে। তিনি চাইলেই যে অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠতে পারেন সেই উদাহরণ তো সৃষ্টি করেছেন ২০১৯ বিশ্বকাপেই। অনবদ্য পারফরমেন্স করে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন গোটা বিশ্বকে। পরিধিটা ছোট এবার। মাগুরা-১ আসন। তবে চ্যালেঞ্জটা মোটেও কম নয়।
তাছাড়া জাতীয় দলের জার্সিতে সাকিবের বিকল্প ছিল না কেউ। তবে ভোটের মাঠে চিত্রটা ভিন্ন। সাকিব তাই নিরলসভাবে করে যাচ্ছেন গণসংযোগ। একটিবার সুযোগ চাইছেন তিনি। জনমানুষের উন্নয়নের। চ্যালেঞ্জ সাকিব হাতে নিয়ে ফেলেছেন। তা অবশ্য করতে তিনি ভালবাসেন। তবে এবার যে তাকে দেখাতে হবে দৃঢ়তা।
চ্যালেঞ্জ উৎরে যেতে হবে তাকে নিজের বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগ করে। সেখানেই তো থামতে পারছেন না সাকিব। যদিওবা ভোটের ফলাফল এসে যায় তার পক্ষে, তার যে হতে হবে আরও বেশি চৌকশ। তাকে সামলাতে হবে রাজ্যের প্রতিকূলতা। মানুষের দেওয়ার ভালবাসার প্রতিদান দিতে হবে গুণে গুণে।
সাকিব জানেন সে কাজটা কি করে করতে হয়। তিনি তো মাঠের ক্রিকেটেও নিজের দূরদর্শীতার পরিচয় দিয়েছেন বহুবার। সেই পরিচয়টা এবার ভিন্ন ক্ষেত্রে দেওয়ার পালা। সাকিব কি পারবেন জনমানুষের সাকিব হয়ে উঠতে? সে উত্তর সময়ের হাতেই তোলা থাক।