প্রথম টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বিশাল ব্যবধানে হেরে বসেছিল, কিন্তু আত্মবিশ্বাস হারায়নি তাঁরা। তাই তো পরের ম্যাচেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে, স্বাগতিকদের উড়িয়ে দিয়ে সিরিজে সমতায় ফিরিয়েছে। আর এর পিছনে বড় অবদান রেখেছেন দুই পেসার মোহাম্মদ সিরাজ ও জাসপ্রিত বুমরাহ।
স্বীকৃতিও পেয়েছেন দু’জনে; কেপ টাউনে ম্যাচসেরা হয়েছেন সিরাজ এবং সিরিজসেরা নির্বাচিত করা হয়েছে বুমরাহকে। ম্যাচ প্রেজেন্টেশনে কথা বলার সময় ফুটে উঠেছিল তাঁদের মধ্যকার বন্ধন; সিরাজ যখন হিন্দিতে বলছিলেন বুমরাহ তখন অনুবাদ করেছিলেন ইংরেজিতে। সেটারই একপর্যায়ে সিরাজ জানান, বুমরাহ পিচ বুঝতে তাঁকে সাহায্য করে এবং তিনি শুধু সতীর্থের পরামর্শ অনুযায়ী বল করেন।
বুমরাহ কিন্তু ইংরেজিতে অনুবাদ করার সময় ‘আমরা’ বলেই সম্বোধন করেছেন। একটু হেসে তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই সবাইকে সাহায্য করি। সিরাজের জন্য সেটা হয়তো বেশি সুবিধা হয়।’ – অথচ সিরিজ শুরুর আগে হাসির কোন লেশ ছিল না তাঁর মুখে, উল্টো সামাজিক মাধ্যমে হার্ট-ব্রোকেন ইমোজি পোস্ট করেছিলেন এই পেসার।
ধারণা করা হয়েছিল, মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের পরবর্তী অধিনায়ক না হওয়ায় ব্যথিত হয়েছেন তিনি। অবশ্য প্রোটিয়াদের দেশে হাসিমুখে পা রাখার কারণই বা কই – প্রথমত লম্বা ইনজুরি থেকে ফিরে টেস্ট খেলতে নামছেন, শঙ্কা তো ছিলই। আবার সেই সাথে সর্বশেষ সফরে বলার মত কোন সুখস্মৃতিও ছিল না তাঁর মনে।
তবে সব কিছু দূরে সরিয়ে মাঠে নিজের সেরাটা দিয়েছেন এই ডানহাতি। তাই তো হাসি ফুটেছে তাঁর মুখে; প্রথম ইনিংসে সিরাজ কাজের কাজটা করে দিয়েছিলেন। কিন্তু ভারতীয় ব্যাটাররা যেভাবে তাসের ঘরের মত ভেঙে পড়েছিলেন তাতে স্বস্তির সুযোগ পাননি বোলাররা। চতুর্থ ইনিংসে মাঝারি লক্ষ্য তাড়া করাটাও কঠিন হতো, কিন্তু সেটা হতে দেননি বুমরাহ- একাই ছয় উইকেট নিয়ে এইডেন মার্করামদের থামিয়েছেন ১৭৬ রানে।
পুরো ম্যাচ জুড়েই এই তারকা অবিশ্বাস্য ধারাবাহিকতা দেখিয়েছেন। একের পর এক নিঁখুত ডেলিভারি এসেছে তাঁর হাত থেকে; কখনো একস্ট্রা বাউন্স, কখনো আবার সিম মুভমেন্টে ত্রাস ছড়িয়েছিলেন তিনি।
মোহাম্মদ সিরাজ আসলে ঠিকই বলেছেন; উইকেট বুঝতে বুমরাহর জুড়ি নেই। পেস স্বর্গ হয়ে উঠা একটা উইকেটে লাইন লেন্থ কেমন হবে সেটা তিনিই দেখিয়ে দিয়েছেন। তাঁর গড়ে দেয়া ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে সাত উইকেট নিয়েছেন সিরাজ আর নিজে শিকার করেছেন আট ব্যাটারকে।