কথায় আছে, ক্যাচ মিস তো ম্যাচ মিস। আর ম্যাচটা যদি হয় সাদা পোশাকের তাহলে তো বিতর্কের কোন সুযোগ নেই। একটা উইকেট তুলতে যেখানে বলের পর বল করে যেতে হয় সেখানে সুযোগ হাতছাড়া করাটা আসলে অমার্জনীয় ভুল। তাই তো টেস্ট ক্রিকেটে ফিল্ডিংয়ে থাকতে হয় বাড়তি সতর্ক, দিতে হয় নিজেদের সেরাটা।
বাংলাদেশ ঠিক সেটাই করছে, সাম্প্রতিক সময়ে ফিল্ডিংয়ে ঈর্ষণীয় উন্নতি করেছে নাজমুল শান্তরা। সেটারই প্রমাণ দেয় পরিসংখ্যান, গত তিন বছরে স্লিপ ফিল্ডিংয়ে দক্ষতা বিবেচনায় তৈরি করা তালিকায় চার নম্বরে রয়েছে টিম টাইগার্স। শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান তো বটেই ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার মত দলের চেয়ে এক্ষেত্রে এগিয়ে আছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।
২০২১ সাল থেকে পেস বলে বাংলাদেশি স্লিপ ফিল্ডাররা ৮৫.৭ শতাংশ ক্যাচ লুফে নিতে সক্ষম হয়েছেন। অন্যদিকে, পাকিস্তানের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা কেবল ৭২.৪ শতাংশ এবং শ্রীলঙ্কার ক্ষেত্রে সেটি ৭২ শতাংশ। বাংলাদেশের পিছনে থাকা বাকি তিনটি দল হলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ইংল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়া; যথাক্রমে ৭৯.৫, ৭৮.৩ ও ৭৫.৮ ভাগ সুযোগ কাজে লাগাতে পেরেছে দলগুলো।
অন্যদিকে, স্লিপ ফিল্ডিংয়ে সাফল্যের মানদন্ডে নিউজিল্যান্ড ভারতের অবস্থান বাংলাদেশের পাশেই। এই দুই পরাশক্তিও ৮৫.৭% ক্যাচ নিতে পেরেছে। এই তালিকায় সবার ওপরে আছে দক্ষিণ আফ্রিকা, তবে তাঁদের সাথে ব্যবধান খুব বেশি নয়। প্রোটিয়ারা সৃষ্ট সুযোগের ৮৯ ভাগ লুফে নিতো সক্ষম হয়েছে।
কয়েক বছর আগেও লাল ভাল মানের পেসার ছিল না বাংলাদেশে। ঘরের মাঠে তো বটেই বিদেশেও বাধ্য হয়ে স্পিন নির্ভর দল গড়তে হতো। অবশ্য তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলামদের কল্যাণে সেই দিন বদলেছে; তাঁদের সাথে পাল্লা দিয়ে হাত পাকা করেছেন ফিল্ডাররাও।
ঘরোয়া ক্রিকেটে পেস সংস্কৃতি না থাকায় শুরুর দিকে স্লিপ পজিশনে উল্লেখযোগ্য দুর্বলতা ছিল বাংলাদেশের। তবে এখন উন্নতির দিকে হাঁটছে দল, শান্ত, মিরাজদের পাশাপাশি উদীয়মান তারকারাও নিজের মুন্সিয়ানা দেখাচ্ছেন উইকেটের পেছন থেকে। এই উন্নতি ধরে রাখাই মূল চ্যালেঞ্জ সবার জন্য।