চোখের সমস্যা যেন এক বিন্দু স্বস্তি দিচ্ছে না নবনিযুক্ত এমপি সাকিব আল হাসানকে। তাইতো নিয়মমাফিক সংসদ সদস্যের দায়িত্বভার গ্রহণ করেই সাকিব বেড়িয়েছেন স্বস্তির সন্ধানে।
ঘন্টা তিনেক আগেও তিনি ছিলেন জাতীয় সংসদ ভবনে। সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিয়েছেন। তবে ক্রিকেটার পেশার যেই অঙ্গিকার সেটা তো বহু আগেই নিয়ে রেখেছিলেন সাকিব। তাইতো সাকিব আল হাসান হাজির মিরপুর হোম অব ক্রিকেটে।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের দশম আসর কড়া নাড়ছে দরজায়। আঙুলের ইনজুরি আর নির্বাচন মিলিয়ে লম্বা সময় সাকিব ছিলেন মাঠের বাইরে। ব্যাট-বলের সাথে সম্পর্ক ছিল না বহুদিন। তাইতো নির্বাচনের মাঝেও ফিটনেস নিয়ে কাজ করেছেন। জয়ের মালা গলায় না চাপিয়ে সোজা ব্যাট হাতে নেমেছেন নিজেকে ঝালাই করতে।
তার কাছে এখনও মাঠের ক্রিকেটই যে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পায়। সংসদ সদস্য হওয়ার আনন্দের স্রোতে তাই তিনি গা ভাসাননি। মাঠে ফিরতেই যেন তার সব আয়োজন।
তবে ক্রিকেটের ময়দানে ফেরাটা হতে পারে বিলম্বিত। চোখের সমস্যাটা বেশ পীড়া দিচ্ছে তাকে।। সে চিত্র স্পষ্ট এদিনের অনুশীলনে। এক চক্ষু বিশেষজ্ঞকে সাথে করেই অনুশীলন শুরু করেছিলেন সাকিব। তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন ঠিক সমস্যাটা হচ্ছে কোথায়। মূলত তার ডানচোখের সমস্যাই বারংবার নির্দেশ করেছেন সাকিব আল হাসান।
ব্যাটিংয়ের ক্ষেত্রে সাকিবের ডান চোখটাই ব্যবহৃত হয় বেশি। বা-হাতি ব্যাটারদের ব্যাটিং স্ট্যান্স অনুযায়ী ডান চোখই তুলনামূলক বলের নিকটে থাকে। তাছাড়া সে চোখই বরং বলের গতিবিধির সিগনাল পাঠায় মস্তিষ্কে। সে চোখেই স্রেফ সমস্যা কিনা সেটা পরীক্ষা করতে ডান-হাতেও ব্যাটিং অনুশীলন চালিয়েছেন সাকিব। নিরীক্ষা করেছেন সমস্যাটা স্রেফ এক চোখেই কিনা।
বিশ্বকাপের পর সাকিব নিজের পারফরমেন্সের বেহাল দশার কারণ হিসেবে চোখের সমস্যাকেই দায়ী করেছিলেন। অতিরিক্ত চাপের কারণে চোখে তরল জমে দৃষ্টিতে ব্যঘাত ঘটিয়েছে সাকিবের। সে সমস্যা নিয়েই পুরো বিশ্বকাপ খেলেছেন তিনি।
তবে বিশ্বকাপ পরবর্তী সময়ে সেই সমস্যা নিয়ে মাঠে নামতে নারাজ নাম্বার ওয়ান অলরাউন্ডার। কেননা এই বছরই তো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। ওয়ানডে বিশ্বকাপের মত নিষ্প্রভ এক বিশ্বকাপ নিশ্চয়ই কাটাতে চান না সাকিব।
যদিও এদিন লম্বা সময় অনুশীলন করবেন বলেই হয়ত ঠিক করে রেখেছিলেন। তাইতো কোচ সোহেল ইসলামও ছিলেন উপস্থিত। বিপিএলে সাকিব এবার রঙপুরের ডেরায়। দলগত অনুশীলন হয়েছে বসুন্ধরা স্পোটর্স কমপ্লেক্সে। সেখানের ঘন্টা তিনেক গোটা দলের অনুশীলন তদারকি করেছেন সোহেল ইসলাম। এরপর সাকিবের সমস্যার সমাধান খুঁজতে তিনিও এসেছেন মিরপুর।
তবে এদিন সংক্ষিপ্ত অনুশীলন করেই সাকিব ধরেছেন বাড়ির পথ। যাওয়ার সময় ভক্তরা ঘিরে ধরেছিলেন সাকিবকে। তাদের সেলফির সখও মিটিয়েছেন সাকিব।
নানা সময়ে সাকিবকে বিতর্ক ঘিরে ধরে এ কথা সত্য। তবে পেশাদারিত্বের প্রশ্নে সাকিব বরাবরই অনঢ়। বিশ্বকাপের মাঝপথেই চোখের সমস্যা ধরা পড়েছিল বলেই বাধ্য হয়ে চালিয়ে গেছেন বিশ্বকাপ যাত্রা। তবে এবার সমাধানের খোঁজ বেশ তোরজোর করেই শুরু করেছেন তিনি। মিলবে কি অদ্ভুত এক চোখের সমস্যার সমাধান? সেটা হয়ত সময়ই বলে দেবে।