বাংলাদেশ ক্রিকেটের ইতিহাসে ডেভ হোয়াটমোর সন্দেহাতীতভাবেই এক ঐতিহাসিক চরিত্র। তাঁর অধীনেই যে ২০০৭ বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো গ্রুপ পর্বের বাঁধা টপকে বাংলাদেশ উঠেছিল সুপার এইটে। অজি এ কোচের হাত ধরেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ডানা মেলা শুরু করেছিলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা, সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল কিংবা মুশফিকুর রহিমদের মতো ক্রিকেটাররা।
বাংলাদেশের কোচ হিসেবে তাঁর অধ্যায় অতীত হয়েছে অনেক আগেই। এবার বিপিএলের টানে আবারও ছুটে এসেছেন শত স্মৃতির বাংলাদেশে। এবারের বিপিএলে ফরচুন বরিশালের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর হিসেবে এসেছেন এ কোচ। আর সেই ধারাবাহিকতায় ছুটে এসেছিলেন মিরপুরের হোম অব ক্রিকেটেও। আর সেখানেই পুরনো শিষ্যদের সাথে একটা পুনর্মিলনী ঘটে গেল এ কোচের। বহুদিন বাদে তিনি দেখা পেলেন তাঁর ‘পাগলা’র সাথে।
হ্যাঁ। ঠিকই শুনেছেন। বাংলাদেশ দলে যে তিনি রেখে গিয়েছিলেন এক পাগলাকে। তিনি মাশরাফি বিন মর্তুজা। যার সাথে কোচ-ক্রিকেটারের সম্পর্ক ছাপিয়ে একটা আত্মিক সম্পর্কে জড়িয়ে গিয়েছিলেন হোয়াটমোর। অজি এই কোচ যখন বাংলাদেশ ক্রিকেট ছেড়েছেন, তখন তারুণ্য ছিল মাশরাফির সঙ্গী। তবে সে সময় পেরিয়ে গিয়েছে এতদিন। বাংলাদেশের সাবেক এ অধিনায়ক এখন রয়েছেন ক্যারিয়ারের সায়াহ্নে।
কিন্তু তাতে কী! বিপিএল খেলছেন। আর সেই মঞ্চটাই মিলিয়ে দিয়েছিল পুরোনো গুরু-শিষ্যকে। মিরপুরে ফরচুন বরিশালের অনুশীলনে হাজির হয়েছিলেন হোয়াটমোর। একই জায়গায় পাশে অনুশীলন করছিল সিলেট স্ট্রাইকার্সও। যথারীতি ছিলেন মাশরাফিও। সেখানেই মেলবন্ধন হলো গুরু শিষ্যের। হোয়াটমোরের দেখা পেয়ে যেন পুরোনো তারুণ্য ফিরে পেলেন ম্যাশ। ছুটে গিয়ে জড়িয়ে ধরলেন তিনি।
প্রথমে ম্যাশকে দেখে খানিকটা চমকে গেলেন ডেভ। পরক্ষণেই টেনে নিলেন বুকে। খানিক আড্ডাও চালিয়ে নিলেন এরপর। সেই আড্ডায় আলোচনার বিষয় অজানাই থেকে গিয়েছে। হয়তো পুরোনো সময়ের সোনালি স্মৃতিই রোমন্থন করছিলেন দুজন। পরে অবশ্য দুজনই ফিরে গিয়েছেন দলীয় অনুশীলনে। ক্ষণিকের জন্য হলেও ম্যাশ-ডেভের সেই আড্ডাটা যেন নস্টালজিয়ায় আক্রান্ত করেছে বাংলাদেশের ক্রিকেট অনুরাগীদেরও।
এবারের বিপিএলে ফরচুন বরিশালের কোচ হিসেবেই আসার কথা ছিল হোয়াটমোরের। তবে শেষ মুহূর্তে প্রধান কোচের দায়িত্ব দেওয়া হয় মিজানুর রহমান বাবুলকে। আর হোয়াটমোর পান টেকনিক্যাল ডিরেক্টরের পদ। কোচিংয়ের ইতিহাসে অবশ্য বড় নামই ডেভ হোয়াটমোর। ১৯৯৬ সালে শ্রীলঙ্কার বিশ্বকাপজয়ী কোচ ছিলেন তিনি। এরপর কোচিং করিয়েছেন বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কাসহ বহু ফ্র্যাঞ্চাইজি দলের।