অফ স্ট্যাম্প চ্যানেলে আরও একটি বল। আবারও সেই ফাঁদে মুখ থুবড়ে পড়লেন বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের আরেক ব্যাটার। ২৫ রানে থাকার সময় শিহাব জেমসের ক্যাচ ফেলে দিয়েছিলেন উবায়েদ শাহ। ওভারের চাকা ঘুরতেই পরের ওভারে নিজের ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করলেন উবায়েদ। সেই জেমসকে উইকেটের পেছনে আটকে ফেলে।
শুধু ম্যাচে জিতলেই হবে না, এগিয়ে থাকতে হবে রানরেটে। এমন এক সমীকরণেই পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ দলের বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ। টসে জিতে বাংলাদেশের অধিনায়ক মাহফুজুর রহমান রাব্বি বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন। সেই সিদ্ধান্তের যথাযথ মর্যাদাই রাখেন রোহানত দৌল্লা বর্ষণ ও শেখ পারভেজ জীবন।
এই দুই বোলারের বোলিং তোপে মাত্র ১৫৫ রানেই গুটিয়ে যায় পাকিস্তানের যুবারা। স্বল্প রানে বোলাররা আঁটকে ফেলেছিল প্রতিপক্ষকে। বাকি কাজটা করতে হতো ব্যাটারদের। ৩৮.১ ওভারের মাঝে ১৫৬ রান করতে পারলেই যাওয়া যেত সেমিফাইনালে। তবে বাংলাদেশের যুবদলের ব্যাটারদের একবিন্দু স্বস্তি দেননি উবায়েদ শাহ।
নাভিশ্বাস তুলেছেন তিনি বাংলাদেশী ব্যাটারদের। জিসান আলমকে দিয়ে শুরু। এরপর গুণে গুণে পাঁচ খানা উইকেট নিজের করে নিয়েছেন তিনি। পাকিস্তানের পেস আক্রমণের যেন কোন জবাবই ছিল না বাংলাদেশী ব্যাটারদের কাছে। উবায়েদদের দারুণ চ্যানেল বোলিং, সেই সাথে দুই দিকের সুইং। শ্বাস নেওয়ার মত একটুও সময় দেননি তারা রাব্বির দলের ব্যাটারদের।
জিসান, আরিফুল ইসলাম কিংবা আশিকুর রহমান শিবলি, কেউই টিকতে পারেননি পাকিস্তানের পেস আক্রমণের সামনে। সবাই অসহায় আত্মসমর্পণই করেছে তাদের সামনে। বড় কোন জুটি গড়া তো দূরে থাক, ঠিকঠাক ব্যাট চালানোর মত সুযোগটাও আদায় করতে পারেননি আরিফুলরা। স্রেফ ১৫৫ রানের টার্গেটাও তাই এভারেস্টই মনে হতে শুরু করেছিল বাংলাদেশের ব্যাটারদের কাছে।
বোলারদের দারুণ দিনটাকে বিন্দুমাত্র কাজে লাগাতে পারেননি আহরার আমিনরা। স্নায়ুচাপকে কাবু করতে পারেননি। পাকিস্তানি পেসাররা সে সুযোগটিই দেননি। অফ স্ট্যাম্পের কোল ঘেষে বল করে গেছেন। কখনো সেই বলে ইনসুইং হয়েছে, কখনো বল আউট সুইং করে বেড়িয়ে গেছে। ধোঁয়াশার মধ্যেই ছিলেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা। সেই সাথে দীর্ঘদেহী মোহাম্মদ জিসানের বাউন্সি বলগুলো ভয়কে আরও ঘনিভূত করেছে।
তবে মারুফ মৃধা আর বর্ষণ ম্যাচকে টেনে নিয়ে গেছেন অনেকদূর পর্যন্ত। শেষ অবধি শ্বাসরুদ্ধকর এক পরাজয় বরণ করতে হয়েছে বাংলাদেশকে। উবায়েদ, জিসান আলি রাজারা স্বল্প রানকেও রেখেছেন অক্ষত। ঢাল হয়ে নয়, বরং তরবারি হয়েই আঘাত করেছেন তারা। তাতে করে বাংলাদেশের যুব দলের স্বপ্ন হয়েছে ধূলিসাৎ। অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ জেতা দলটাকে থামতে হয়েছে বিশ্বকাপের সুপার সিক্স রাউন্ডে।