রংপুর রাইডার্সের কাছে স্রেফ উড়ে গিয়েছে দুর্দান্ত ঢাকা। তবে ঢাকা শিবিরে যতটুকু স্বস্তির হাওয়া বইয়েছে, তার সবটাই এসেছে নাঈম শেখের ব্যাটে। রংপুরের দেওয়া ১৭৬ রানের লক্ষ্যে মাত্র ১১৫ রানে গুঁটিয়ে যাওয়া ঢাকার হয়ে এ দিন ৩১ বলে ৪৪ রানের ইনিংস খেলেছেন এ ব্যাটার।
অথচ ঝড়ো এ ইনিংসের পূর্বাভাস আবার বলছিল ভিন্ন কথা। প্রথম ১০ বলে মাত্র ১ রান করতে পেরেছিলেন নাঈম শেখ। আজমতউল্লাহ ওমরজাইকে খেলা ইনিংসের প্রথম বলে সেই যে একটা সিঙ্গেল নিয়েছিলেন, এরপর টানা ৯ টি ডটবল দেন তিনি। নড়বড়ে নাঈম যে পরবর্তীতে রুদ্রমূর্তিতে ফিরে আসবেন, সেই ভাবনাটাও ছিল অপ্রত্যাশিত।
তবে, হঠাৎই নিজের ইনিংসের চিত্র বদলে দেন তিনি। যে আজমতউল্লাহ ওমরজাইকে খেলতে শুরুতে স্ট্রাগল করছিলেন, সেই আফগান অলরাউন্ডারের বলের উপরেই পরবর্তীতে চড়াও হন নাইম।
ইনিংসের পঞ্চম ওভারে চতুর্থ বলে চার মেরে মন্থর ইনিংসের শিকল ভাঙতে শুরু করেন তিনি। এরপর ক্রিজ থেকে সামান্য পা বাড়িয়ে লং অনে ছক্কা। ছক্কার সেই রেশ থাকে পরের বল অবধিও। এবার সজোরে চালিয়ে স্কোয়ার লেগের সীমানা আছড়ে ফেলেন নাঈম।
ব্যাস। এরপরেই খোলস ছেড়ে বের হন এ ব্যাটার। ওমরজাইয়ের পর শেখ মেহেদীর ওভারেও টানা দুই বলে চার-ছক্কা হাঁকান তিনি। অবশ্য নাঈম আক্রমণাত্বক ব্যাটিংয়ে ম্যাচ জয়ের দিকে চোখ রাখলেও সতীর্থরা তাঁকে সেই সঙ্গ দিতে পারেনি। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়েছে ঢাকা। ফলশ্রুতিতে, চাপ বেড়ে যায় নাইমের উপরেও।
তবে শুরুতেই রানরেটে আটকে যাওয়ায় এ দিন আর ‘ওয়ান ম্যান আর্মি’ হয়ে উঠতে পারেনি নাঈম। ৩ চার আর ৩ ছক্কায় এগিয়েছিলেন ফিফটির পথে। কিন্তু চল্লিশের ঘরে এসে আটকে যাওয়ার ভাগ্যটা এ দিনও বদল করতে পারেননি এ ব্যাটার।
এ আসরেই আরো দুটি ম্যাচে চল্লিশ পেরিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু কোনোটিতেই ছুঁতে পারেননি অর্ধশতকের কোঠা। রংপুরের বিপক্ষে এ দিনও সেই আক্ষেপের পুনরাবৃত্তি ঘটিয়েছেন এ ওপেনার। ৩১ বলে ৪৪ রানের ইনিংস খেলে আউট হন তিনি।
এখন পর্যন্ত দুর্দান্ত ঢাকার বিপিএল যাত্রাকে উতরে যাওয়ার মতোও স্বীকৃতি দেওয়া যায় না। তবে নাঈম শেখের এ আসরে ৩ টি চল্লিশোর্ধ্ব ইনিংস ঠিকই তাঁর সক্ষমতা একটা চিত্র দিয়েছে। এখন শুধু প্রয়োজন এই চিত্রের ধারাবাহিক চিত্রায়ণ। তবেই হয়তো আবারো বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দলের রূদ্ধদ্বার ভেঙে প্রবেশ করতে পারেন নাঈম শেখ।