শান্ত নদীর উত্তাল ঢেউ

কখনও উত্তাল, কখনও কখনও শান্ত, কখনও বা ভিষণ ক্লান্ত। গল্পটা কোনো নদীর হতে পারে নাজমুল হোসেন শান্তরও। তাঁকে চাইলে ভিষণ ক্লাসিক ব্যাটারের তকমা দেওয়া যায়।। বলা যায়, সময় মত উত্তাল হতে জানেন তিনি।।

কিংবা কখনও তিনি ঠিক নিজের নামের মতই শান্ত। যেমনটা ছিলেন ক’দিন আগেই শেষ হওয়া বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল)। বলার মত কোনো ইনিংস বা চোখ ধাঁধানো কোনো শট সেখানে ছিল না বললেই চলে। প্রায় পুরোটা সময় ছিলেন নিজের ছায়া হয়ে।

আর ক্লান্ত ছিলেন সম্ভবত শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে।  সেদিন পুরোদমে অধিনায়কত্ব পাওয়ার পর প্রথম নেমেছিলেন মাঠে, অধিনায়ক হিসেবে। একদিন আগেই বলেছিলেন, ‘অধিনায়ক না  থাকলেও রান করতে হবে।’

কিন্তু, ক্লান্ত শান্ত নিজের কথা রাখতে পারলেন কোথায়। ২২ বলে খেললেন ২০ রানের ইনিংস। জাকের আলী আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দাপুটে ব্যাটিংয়ের সুবাদে বাংলাদেশ ম্যাচটা গভীরে নিয়ে যেতে পেরেছিল – কিন্তু, শেষ রক্ষা হয়নি। তিন রানে হারতে হয়।

কাঠগড়ায় তোলা যায় অধিনায়ক শান্তকে। কে জানে, তিনি আর তিন-চারটা ডেলিভারি কম খেলে গেলে হয়তো ম্যাচের ফলাফলটা ভিন্ন হতে পারত। ফলাফলর চাইলেও তো আর এখন পাল্টানো যাবে না। তবে, ভবিষ্যৎ পাল্টানো যায়। নিজের ভাগ্য নিজেই লেখা যায়।

সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচেই শান্ত তাই তো ফিনিক্স পাখি হয়ে ফিরে আসলেন। শান্ত নদীর উত্তাল ঢেউ হলেন। তাঁর ৩৮ বলে ৫৩ রানের ইনিংস অনেক সমালোচনারই জবাব দিতে পারল যেন।

ম্যাচ সেরা হওয়ার সাথে সাথে টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে চতুর্থ  হাফ সেঞ্চুরির দেখা  পেলেন,  ২৯ তম ইনিংসে। চারটি হাফ সেঞ্চুরি করতে টি-টোয়েন্টিতে এর চেয়ে কম ইনিংস খেলেছেন কেবল নাঈম শেখ।

নাঈম শেখের ওপর আজকাল ভরসা করা যাচ্ছে না। এর বাদে লিটন দাস এই শান্তর মতই ২৯ ইনিংসে, সাকিব আল হাাসান ৩৬ ইনিংসে চারটি ও সাব্বির রহমান রুম্মান ৩৮ ইনিংসে চারটি হাফ সেঞ্চুরি পেয়েছেন। শান্ত চাইলেই সাকিবের মত তিন ফরম্যাটেই লম্বা সময় সার্ভিস দিয়ে যেতে পারেন বাংলাদেশকে, কিংবা চাইলে সাব্বিরের মত অকালে হারিয়ে যাওয়ার পরিণতি বরণ করতে পারেন।

শান্ত নদী কোথায় যাবে? ক্লান্ত হবে না হবে উত্তাল? – সিদ্ধান্ত একান্তই শান্তর। তাঁর পক্ষে সব কিছুই হওয়া সম্ভব!

লেখক পরিচিতি

সম্পাদক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link