যখন কারও কাছে ছিলনা জবাব, ঠিক তখনই দৃশ্যপটে হাজির তানজিম হাসান সাকিব। মুহূর্তের মধ্যেই ম্যাচের গতিপথ বদলে দিলেন। স্বল্প সময়ের ব্যবধানে তুলে নেন শ্রীলঙ্কার তিনখানা উইকেট। তার সেই এক স্পেলেই প্রথম ইনিংসেই ম্যাচ থেকে ছিটকে যাওয়ার দ্বারপ্রান্ত থেকে ফিরেছে বাংলাদেশ।
টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত শ্রীলঙ্কার। সেই সিদ্ধান্তের যথার্থতাই প্রমাণ করে চলেছিলেন লঙ্কান দুই ওপেনার, আভিষ্কার ফার্নান্দো ও পাথুম নিসাঙ্কা। নবম ওভারের মধ্যেই স্কোরবোর্ডে তুলে ফেলে ৬৮ রান। তাতে করে ৩০০ এর বেশি সংগ্রহর দিকেই অগ্রসর হওয়ার পথ ক্রমশ হয়ে উঠছিল সুগম।
ঠিক সেই মুহূর্তে বাংলাদেশের ত্রাণকর্তা হয়ে হাজির হলেন তরুণ পেসার সাকিব। নিজের প্রথম ওভারে দারুণ লাইন-লেন্থে উইকেট শিকারের সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন বটে। তবে উইকেট থেকে গিয়েছিল অধরা। প্রথম পাওয়ার-প্লে এর শেষ ওভারের এসেই কাঙ্ক্ষিত সেই উইকেটের দেখা পেয়ে যান ডানহাতি এই বোলার।
অফ স্ট্যাম্পের বাইরের লেন্থ, ব্যাটারকে শট খেলার জন্যে আমন্ত্রণ জানালো। আভিষ্কা সেই আমন্ত্রণ আর ফিরিয়ে দিতে পারলেন না। শট খেললেন, তাতে নিতান্ত এক সাধারণ ক্যাচ জমা পড়ল উইকেটরক্ষকের দস্তানায়। সেখান থেকেই ম্যাচে ফেরার রসদটা যেন খুঁজে নেয় বাংলাদেশ। ৭১ রানে শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং দূর্গে প্রথম আঘাত করেন তানজিম হাসান সাকিব।
ব্রেক থ্রু এনে দিয়েছিলেন। এবার পালা শ্রীলঙ্কাকে চেপে ধরার। তাই করলেন তানজিম সাকিব। ৯-১৪ এই পাঁচ ওভারের মধ্যে সাকিব বল করেছেন তিন ওভার। আভিষ্কার উইকেট প্রাপ্তির পর প্রতি ওভারেই একটি করে উইকেট তুলে নেন সাকিব।
মাঝে একটি মেইডেন ওভার আদায় করে নেন তাসকিন আহমেদ। এরপর ৭২ রানের মাথায় শ্রীলঙ্কার দ্বিতীয় উইকেটের পতন। এবার বিদায় ঘটে আরেক সেট ব্যাটার পাথুম নিসাঙ্কার। বেশ অদ্ভুতভাবে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন তিনি। পুল শট খেলতে গিয়ে ব্যাটের একেবারে মাথায় লাগে। তাতে করে স্লিপে থাকা লিটনের হাতে আরও এক সহজ ক্যাচ।
বহুল প্রতিক্ষার পর পাওয়া উইকেটগুলোকে একেবারে সহজ উইকেট বানিয়ে, তবে নিজের করে নিয়েছেন সাকিব। নিজের চতুর্থ ওভারে আরও একটি উইকেটের মালিক বনে যান তানজিম সাকিব। এদফা তার শিকার সাদিরা সামারাভিক্রামা। তাতে করে ৬৮ রানে শূন্য উইকেট থেকে, পরবর্তী পাঁচ ওভারের মাঝে ৮৮ রানে শ্রীলঙ্কা হারায় তিন উইকেট।
সাকিবের লাগাতার আক্রমণের ফলে দ্রুত তিনটি উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে যায় লঙ্কানরা। তাছাড়া রান তোলার গতিতেও পড়ে ভাটা। সেখান থেকে পরবর্তীতে শ্রীলঙ্কা মাথা তুলে দাঁড়াবার চেষ্টা চালায়। তবে শেষ অবধি আর তেমন সুবিধা করতে পারেনি।
তানজিম সাকিব যার সিংহভাগ কৃতীত্ব পাওয়ার দাবিদার। তার আঁটসাঁট লাইন লেন্থের কারণে পরবর্তীতে তেমন সুবিধাও করতে পারেনি শ্রীলঙ্কা। রান খরচেও সাকিব দেখিয়েছিলেন কৃপণতা। শেষ অবধি তার অনবদ্য বোলিংয়ের কারণেই পাহাড় চড়ার দুশ্চিন্তা ঘাড়ে চাপেনি বাংলাদেশের।