আজকে সকালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই পেসার – শ্যানন গ্যাব্রিয়েল ও কেমার রোচের বলে মেহেদী হাসান মিরাজের হাঁকানো বাউন্ডারি দুটির ভিডিও তাঁকে অন্তত কয়েক কোটি বার দেখানো উচিৎ। যাতে নিজের ব্যাটিং সামর্থ্য আরও ভালোভাবে উপলব্ধি করতে পারেন।
গ্যাব্রিয়েলের গতিময় বলে বাউন্সের ওপর চড়ে এত চমৎকার টাইমিং আর প্লেসমেন্ট, রোচের বলে ফ্লিক শটে কবজির মোহনীয় মোচড়, যথারীতি দারুণ টাইমিং-প্লেসমেন্ট আর দুর্দান্ত ব্যালান্স।
আরো পড়ুন
- চোখের জলের সাগর
- সাদমানদের রিভিউ সংকট
- চিরকালের ম্যান অব ক্রাইসিস
- আইপিএলে সাকিবের সম্ভাব্য তিন গন্তব্য
- বিগ থিঙ, বিগ ড্রিম
এছাড়াও রোচের বলে গ্ল্যান্স, বাঁ-হাতি স্পিনার জোমেল ওয়ারিক্যানের বলে লেগ স্টাম্প থেকে সুইপ, অফ স্টাম্প থেকে সুইপ, রাকিম কর্নওয়ালের বলে গ্লাইড। কয়টা বলি! ওয়ারিক্যানের বলে ইনসাইড আউটে বাউন্ডারিটি তো সম্ভবত এখনও পর্যন্ত ম্যাচেরই সেরা শট।
এসব ভাই প্রতিভা। এসব ভাই সহজাত। এসব ভাই জেনুইন ব্যাটসম্যানের উপকরণ।
তিনি তো জেনুইন ব্যাটসম্যানই। স্রেফ সেই সত্ত্বাকে জাগিয়ে তোলা প্রয়োজন। অনেক তো হলো কথা, আলোচনা, হাহাকার, আশা – এখন ঘা দিয়ে জাগিয়ে তোলা প্রয়োজন। তার নিজের, টিম ম্যানেজমেন্টের, সংশ্লিষ্ট সবার দিক থেকেই।
সোজা ব্যাটে তিনি সবসময়্ই ভালো, ব্যাটের ফুল ফেস প্রেজেন্টেশন বরাবরই নান্দনিক। তার ডিফেন্স, তার শট মেকিং, তার হ্যান্ড থ্রু দা লাইন, তার বডি, হেড, এলবো পজিশন, তার অ্যাপ্রোচ, সবই দারুণ।
টেস্ট ক্রিকেটে ফিফটি তো খুব বড় কিছু নয়। কিন্তু এই ফিফটির পথেই তিনি আজকে যেভাব খেলেছেন, তার শটের পরিধি, তার সামর্থ্যের গভীরতা, তার ব্যাটসম্যানশিপের উচ্চতা, সবই ফুটে উঠেছে। প্রতিপক্ষ, পরিস্থিতি, পারিপার্শ্বিকতা, সব পাশে সরিয়ে কেবল তার ব্যাটিং সামর্থ্যের কথা বলছি।
স্পেশালিস্ট ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্ট খেলার উপকরণ তাঁর মধ্যে আছে। স্পেশালিস্ট বোলার হিসেবে তো খেলছেনই। বোলার হিসেবে আরও অনেক উন্নতির ব্যাপার আছে, ব্যাটসম্যান হিসেবে অনেক অনেক অনেক উন্নতির ব্যাপার আছে। কিন্তু সেই জিনিস তার ভেতর আছে। বাংলাদেশ দলের ও বিশ্ব ক্রিকেটের বড় সম্পদ তিনি হতে পারেন।
স্রেফ তাকে চাইতে হবে আরও তীব্রভাবে, সেই তাড়না থাকতে হবে প্রবলভাবে, দল ও টিম ম্যানেজমেন্টেরও তাকে বুঝতে হবে আরও ভালোভাবে।
মেহেদী হাসান মিরাজ যদি স্পেশালিস্ট ব্যাটসম্যানের মতো না হয়ে উঠতে পারেন, তাহলে নিজের প্রতি তিনি অন্যায় করবেন। দল যদি তাকে জেনুইন অলরাউন্ডার হিসেবে গড়ে তুলতে না পারে, তাহলে বঞ্চিত হবে বাংলাদেশের ক্রিকেট।
– ফেসবুক থেকে