ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। খর্ব শক্তির ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াটওয়াশ করেছিলো স্বাগতিকরা। ওয়ানডেতে হোয়াটওয়াশ হলেও টেস্ট সিরিজে ঘুড়ে দাঁড়িয়েছে সফরকারীরা।
চট্টগ্রামে প্রথম টেস্ট জেতার পর ঢাকা টেস্টেও এখন পর্যন্ত চালকের আসনে রয়েছে ক্যারিবিয়ানরা। সিরিজের প্রথম থেকেই সমালোচনা হচ্ছে মমিনুল হকের অধিনায়কত্ব নিয়েও। তবে তামিম ইকবাল মমিনুল হকের উপর আস্থা রেখে জানিয়েছেন টেস্টে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য মমিনুলই যোগ্য ব্যক্তি।
প্রথম টেস্টে হারলেও সেখানে মমিনুলের কোন দোষ দেখেন না তামিম ইকবাল। তামিম মনে করেন চার দিন এগিয়ে থেকে শেষ দিনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ অপ্রত্যাশিত ভালো খেলার জন্যই হেরেছে তাঁরা।
তিনি বলেন, ‘দেখেন চট্টগ্রাম টেস্টে চারটা দিন বলে চারটা দিন আমাদের ফরে ছিল। কিন্তু শেষদিন তারা অপ্রত্যাশিত ভালো ক্রিকেট খেলেছে। এই টেস্টে ওরা এখনো পর্যন্ত আমাদের চেয়ে ভালো ক্রিকেট খেলেছে, কোন সন্দেহ নেই।
ঢাকা টেস্টে প্রথম ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের থেকে এখনো ৩০৪ রানে পিছিয়ে রয়েছে স্বাগতিকরা। দ্বিতীয় টেস্টে পিছিয়ে থাকলেও তামিম বিশ্বাস করেন এখান থেকে ঘুড়ে দাঁড়াবে দল।
তামিম বলেন, ‘বিশ্বাস তো করতেই হবে। যেটা বললাম যদি চারটা উইকেট না পড়তো তাহলে আমরা বেটার সিচুয়েশনে থাকতাম। ডিফিকাল্ট, কিন্তু আমি বলবো না যে আমি এটা বিশ্বাস করিনা। আমরা নিজেদের প্রতি বিশ্বাস রাখছি যে এখান থেকে ভালো কোন বড় পারফরম্যান্স হবে। এবং আমরা চেষ্টা করবো পরিস্থিতি বদলের।’
এই টেস্ট যদি বাংলাদেশ হেরেও যায় তবুও মমিনুলের টেস্ট অধিনায়কত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলতে রাজি নয় তামিম ইকবাল। তামিম বিশ্বাস করেন ভুল গুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে অধিনায়ক হিসাবে ভালো করবেন মমিনুল হক। তামিম মনে করেন মমিনুল হক টেস্ট নিয়ে যে রকম ভাবে এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করে তাতে টেস্টে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য মমিনুলই যোগ্য ব্যক্তি।
এ বিষয়ে তামিম বলেন, ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি সে এই কাজের জন্য উপযুক্ত ব্যক্তি। টেস্ট অধিনায়কত্ব সহজ কাজ না। ওয়ানডে বলেন, টি-টোয়েন্টি বলেন এটা একটা দিনের খেলা। টেস্ট অধিনায়কত্ব অনেক অনেক কঠিন। কিন্তু ওর যে চিন্তাধারা, ওর যে প্ল্যানিং, ওর যে ফোকাস, ওর যে ফিউচার প্ল্যান…টেস্ট ক্রিকেটকে যেভাবে দেখে। আমার কাছে মনে হয়না এখানে এর চাইতে বেটার কেউ আছে যে নেতৃত্ব দিবে। আই স্ট্রংলি বিলিভ মুমিনুল ইজ দ্য রাইট পারসন।’
তামিম আরো বলেন, ‘কিছু জিনিস আপনাদের সবার মাথায় রাখতে হবে যে সে খুবই তরুণ। সে ভুল করতেই পারে, এটা যে কোন অধিনায়কই করে। আর সে এটা থেকে শিখবে। আমি নিশ্চিত সময়ের সাথে সাথে ও স্ট্রেন্থ টু স্ট্রেন্থ হবে, অনেক ভালো কিছু দেখবো সে করছে। কারও যদি ফোকাসটা থাকে টেস্ট ক্রিকেট নিয়ে, আমাদের টিমে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয় এমন কাউকে যদি বলতে হয় মুমিনুল সেখানে উপরের দিকেই থাকবে নিশ্চিতভাবে।’
প্রয়োজন হলেই মাঠে সিনিয়রদের থেকে পরামর্শ নেন মমিনুল হক। তামিম জানিয়েছেন মমিনুলকে যথাসম্ভব সমর্থন দিয়ে যেতে চান তাঁরা। তবে মমিনুলকে কখনো চাপ দেন না সিনিয়ররা। মমিনুল অধিনায়কত্ব করেন নিজের মতো করেই।
তামিমের ভাষ্যমতে, ‘আমরা তো অবশ্যই সাপোর্ট দিতে চাই, যখনই আমাদের কিছু বলার থাকে আমরা বলি। ও যেটা ভালো মনে করে ও সেটা নেয়। যেটা মনে করে এখন দরকার নেই সেটা নেয়না। যেটা একজন অধিনায়কের জন্য ভালো দিক। মাঝে মাঝে এমনও হয় যে আমাদের মনে হয় ও যেটা সিদ্ধান্ত নিচ্ছে ওটা আমাদের অনুসরণ করা উচিৎ, আমরা সেটা অনুসরণ করি। এটা না যে সিনিয়র হওয়ার কারণে সবসময় ওকে বলতে থাকবো। সময় সময় যখন আমরা অনুভব করি তখনি আমরা পরামর্শ দিই। এবং সে শোনে, এটা না যে করে না। সব কথার শেষ কথা হি ইজ দ্য রাইট ম্যান ফ দ্য জব।’