ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) শুরুটা কেমন ছিল? – সেটা ঠিক এই জমানায় বসে কল্পনা করা যায় না। তখনও ভারত-পাকিস্তান বৈরীতা ছিল তবে আজকালকার মত মুখ দেখাদেখি বন্ধ না।
সে সময়, মানে শুরুর দিককার আইপিএলে খেলেছিলেন পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা। তাঁদেরকে নিয়ে নিলামে কাড়াকাড়িও হয়েছিল। পারফরম্যান্সও ভাল ছিল তাঁদের। তাঁদের নিয়ে রীতিমত একটা একাদশও বানিয়ে ফেলা যায়। সেটাই করেছে খেলা-৭১। চলুন দেখে নেওয়া যাক সেই একাদশ।
- মোহাম্মদ হাফিজ
কলকাতা নাইট রাইডার্সে সুযোগ পেয়েছিলেন বর্তমান সময়ের অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার। তবে, তাঁকে খুব সফল বলা যাবে না। আট ম্যাচ খেলে দুই উইকেট আর মোটে ৬৪ রান করতে পারেন তিনি।
- কামরান আকমল (উইকেটরক্ষক)
উইকেটরক্ষক এই ব্যাটসম্যান রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে শিরোপা জিতেছিলেন। ছিলেন ফাইনাল ম্যাচেও। ছয় ম্যাচ খেলে একটি হাফ সেঞ্চুরি-সহ করেন ১২৮ রান।
- সালমান বাট
স্পট ফিক্সিং কাণ্ডে নিষেধাজ্ঞা পাওয়ার আগে সালমান বাটও খেলেন আইপিএলে। কলকাতা নাইট রাইডার্স দলে ছিলেন তিনি। সাত ম্যাচ খেলেন। তাতে এক হাফ সেঞ্চুরি সহ করেন ১৯৩ রান।
- ইউনুস খান (অধিনায়ক)
তাঁকে দিব্যি এই একাদশের অধিনায়ক করে রাখা যায়। অধিনায়ক হিসেবে তিনি রীতিমত একটা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতেন। যদিও রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে তিনি খেলেন মাত্র একটি ম্যাচ, সাত বলে করেন তিন রান।
- মিসবাহ উল হক
২০০৭ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বড় তারকা ছিলেন মিসবাহ উল হক। সেই সুবাদে তাঁকে দলে নিয়েছিল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু। ভরসার প্রতিদান দিতে পারেননি মিসবাহ। আট ম্যাচে করেন মাত্র ১১৭ রান।
- শোয়েব মালিক
সাত ম্যাচে ৫২ রান ও দুই উইকেট – সাবেক এই পাকিস্তানি অধিনায়ক আইপিএলে একদমই পারেননি নিজেকে মেলে ধরতে। যদিও, দিল্লী ডেয়ারডেভিলসে খেলা এই অলরাউন্ডার টি-টোয়েন্টিতে থাকা বড় ব্যাপার।
- শহীদ আফ্রিদি
ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের বিগ থিঙ তিনি। আইপিএল খেলেন ডেকান চার্জার্সের হয়ে। ১০ ম্যাচে মাত্র ৮১ রান করলেও বল হাতে নেন নয় উইকেট। সেই ডেকান চার্জার্স এখন আইপিএলে নেই, নেই আফ্রিদিও।
- সোহেল তানভির
অবশ্যই আইপিএলের ইতিহাসের অবিসংবাদিত সেরা ক্রিকেটার তিনি। প্রথম আসরের বেগুনী টুপি বিজয়ী তিনি। ১১ ম্যাচে নেন ২২ উইকেট। শেন ওয়ার্নের রাজস্থান রয়্যালস দল যে ২২ উইকেট নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় তাতে বড় অবদান এই সোহেল তানভিরের।
- উমর গুল
তিনিও আইপিএলে বেশ সফল ছিলেন। সৌরভ গাঙ্গুলির নেতৃত্বে কলকাতা নাইট রাইডার্সে খেলে ছয় ম্যাচে নেন ১২ উইকেট। ব্যাটিংয়েও করেন ৩৯ রান। এর মধ্যে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের বিপক্ষে এক ম্যাচে চার উইকেট নেন, আর শেষের দিকে ব্যাট করে ২৪ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন।
- শোয়েব আখতার
কলকাতার খ্যাতনামা ইডেন গার্ডেন্সে দিল্লী ডেয়ারডেভিলসের বিপক্ষে ঝড়ো এক স্পেল দিয়ে তাঁর অভিষেক। তিন ওভারে মাত্র ১১ রান দিয়ে নেন চার উইকেট। ম্যাচ শেষে তাঁকে কাঁধে তুলে নাচেন স্বয়ং কলকাতা নাইট রাইডার্সের মালিক শাহরুখ খান। তিন ম্যাচ খেলে নেন পাঁচ উইকেট।
- মোহাম্মদ আসিফ
আইপিএলে পাকিস্তানি পেসাররাই মূলত বেশি সাফল্যের মুখ দেখেন। তাঁদের একজন হলেন পরবর্তীতে স্পট ফিক্সিং কাণ্ডে নিষিদ্ধ মোহাম্মদ আসিফ। তিনি খেলেন দিল্লী ডেয়ারডেভিলসের হয়ে। নতুন বলে তাঁর পার্টনার ছিলেন স্বয়ং গ্লেন ম্যাকগ্রা। আট ম্যাচ খেলে নেন আট উইকেট।
- দ্বাদশ ব্যক্তি: আজহার মেহমুদ
পাকিস্তানি হিসেবে এই তালিকায় তাঁর নাম আদৌ আসা উচিৎ কি না সেই নিয়ে বিতর্ক হতে পারে। কারণ, তিনি আইপিএলের একটা বড় সময় খেলেছেন ব্রিটিশ পাসপোর্ট নিয়ে। ২৩ ম্যাচ আইপিএল খেলে ডান হাতি এই পেস বোলিং অলরাউন্ডার পেয়েছেন ২৯ টি উইকেট, দু’টি হাফ সেঞ্চুরি-সহ ৪০০’র মত রান করেছেন।