আন্দ্রে রাসেল, দ্য রয়্যাল নাইট

চলতি আইপিএলের প্রতি ম্যাচেই দেখা মিলেছে নতুন নতুন পাওয়ার হিটারের। কখনো ট্রাভিস হেড, কখনো আবার জেক ফ্রেসার ম্যাকগার্ক ব্যাট হাতে তান্ডব চালান। কম যাননি সুনীল নারাইনও; এতকিছুর মাঝে সবাই বোধহয় আন্দ্রে রাসেলের নামটা ভুলতে বসেছিল ক্রিকেটপ্রেমীরা। আর সেটা বোধহয় পছন্দ হয়নি তাঁর, মনে মনে খানিকটা তাঁতিয়েও দিয়েছিল হয়তো।

তাই তো রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর বিপক্ষে নিজের জেদ দেখালেন তিনি। অলরাউন্ডিং পারফরম্যান্সে কলকাতা নাইট রাইডার্সকে জেতালেন, প্রায় একাই দু’দলের মাঝে ব্যবধান গড়ে দিলেন।

ব্যাটিংয়ে ২০ বলে ২৭ রান করেছেন রাসেল; তবে আসল কাজটা করেছেন বল হাতে, তিন উইকেট শিকার করে ম্যাচের গতিপথ বদলে দিয়েছেন তিনি। সংখ্যা দেখে বিবেচনা করলে ভুল হবে, তিনজন সেট ব্যাটার আউট হয়েছেন তাঁর বলেই – এই ডানহাতির ইম্প্যাক্ট তাই বর্ণনাতীত। এমন পারফরম্যান্সের কল্যাণেই এক রানের রোমাঞ্চকর এক জয় পেয়েছে শ্রেয়াস আইয়ারের দল।

প্রথম ইনিংসে ডেথে ঠিকঠাক ঝড় তুলতে পারেননি তিনি; তবু ১৩৫ স্ট্রাইক রেটে ২৭ রান করেছেন, রমনদীপ সিংয়ের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ পার্টনারশিপ গড়েছেন। এসবে ভর করেই দলীয় সংগ্রহ সেসময় ২২২ রানে পৌঁছেছিল।

যদিও এই অলরাউন্ডার বল হাতে যা করেছেন সেটিই ম্যাচে এক্স ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করেছে। ব্যাঙ্গালুরুর দুই ব্যাটার রজত পতিদার ও উইল জ্যাকস যখন সাবলীল ব্যাটিংয়ে জয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন তখনি বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। বারোতম ওভারের প্রথম বলেই জ্যাকসকে আউট করে ১০২ রানের বিধ্বংসী জুটি ভাঙেন, একই ওভারের চতুর্থ ডেলিভারিতে আরেক হাফসেঞ্চুরিয়ার পতিদারকেও প্যাভিলিয়নে ফেরান।

ম্যাচের ভাগ্য তখনি নির্ধারণ হয়ে গিয়েছিল, তবে শেষ ভরসা হিসেবে মাঠে ছিলেন দীনেশ কার্তিক। কিন্তু তাঁকেও টিকতে দেননি উইন্ডিজ তারকা। ব্যক্তিগত তৃতীয় ওভারে তাঁর উইকেট তুলে নেন তিনি। আর বোলিংয়ের পুরোটা স্পেলে নিয়ন্ত্রিত বোলিং দেখা গিয়েছে তাঁর কাছ থেকে, তাই তো ২৫ রানের বেশি নিতে পারেনি প্রতিপক্ষ ব্যাটাররা।

আন্দ্রে রাসেলের ওপর কলকাতার অগাধ বিশ্বাস, সেই বিশ্বাসের প্রতিদান এভাবেই বছরের পর বছর দিয়ে চলছেন তিনি। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের জার্সিতে এভাবে পারফরম করবেন সেটাই এখন ভক্তদের প্রত্যাশা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link