এই শাহীনকেই তো খুঁজছে সবাই

ঠিক এমন শাহীন চোখের শান্তি, ঠিক এমন শাহীনই প্রতিপক্ষের ত্রাস। শত ঝঞ্ঝাট পেরিয়ে যেন শাহীন শাহ আফ্রিদি ছন্দে ফেরার পথেই রয়েছেন। আয়ারল্যান্ডের ব্যাটারদের ভয়ের কারণ বনে গেলেন সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে। তাতেই যেন স্বস্তি বয়ে যেতে শুরু করেছে গোটা পাকিস্তান শিবিরে।

শাহীন শাহ আফ্রিদি নিয়মিত উইকেট পান। তাতে ব্যত্যয় ঘটে না। তার একটা নিজস্ব বাতাবরণ রয়েছে। সেই বেষ্টনির মাঝে বাইশ গজ থাকে। আর তাতে করেই ব্যাটাররা যেন শাহীনকে উইকেট দিতে বাধ্য হয়। নিকট অতীতে শাহীনের অভিজ্ঞতা আর ঐ নামটার ভয়েই উইকেট ট্যালি খালি থাকেনি। কিন্তু রুঢ় হলেও সত্য, শাহীনের সেই আক্রোশ ছিল অনুপস্থিত।

আশার কথা হচ্ছে, সেই আক্রোশ কিংবা আগ্রাসন, সেই বুক কাঁপিয়ে দেওয়া ডেলিভারি যেন ফিরে আসতে শুরু করেছে। শাহীন আবারও ফিরতে শুরু করেছেন স্বরুপে। আইরিশ ব্যাটাররা ভয়ংকর সেই আফ্রিদির ঝলকটা যেন দেখে নিলো। আর সেই ঝলকেই কুপকাত তিন তিনজন ব্যাটার।

শাহীন এই দিন ত্রাস ছড়িয়েছেন বাইশ গজে। সেই ত্রাসের আদর্শ উদাহরণ হতে পারে তার করা দ্বিতীয় ওভার। সেই ওভারের প্রথম তিনটি বল করেছিলেন শর্ট। ব্যাটারের চোখের সামনে দিয়ে বলগুলো জমা হয়েছে উইকেটরক্ষকের হাতে। বিপরীতে যখন শাহীন আফ্রিদি থাকে, তখন আপনার ভয় পাওয়া অবধারিত। এক একটি গতিময় গোলা যে ভষ্ম করে দিতে পারে সবকিছু।

শাহীন অবশ্য ভয় দেখিয়ে মাইন্ড গেম খেললেন। পরের বলটাই তিনি ছুড়লেন ফুলার লেন্থে। আরও একটি শর্ট পিচ ডেলিভারির আশায় থাকা রস অ্যাডায়ারের স্ট্যাম্প হল ছত্রখান। ভয় দেখিয়ে উইকেট আদায় করা সম্ভবত একেই বলে। শাহীন স্রেফ ভয় দেখাননি, ব্যাটারকে নিজের পাতা ফাঁদে ফেলেছেন। এমন শাহীন আফ্রিদিকে দেখেই তো অভ্যস্ত সকলে।

তবে না বাউন্স আর ফুলার বলের মিশেলেই এদিন ক্ষান্ত হননি তিনি। সেই চিরচেনা সুইং বোলিংয়ের দেখাও মিলেছে শাহীনের কাছ থেকে। তাছাড়া একটা মুহূর্তের জন্যেও তিনি আইরিশ ব্যাটারদের স্বস্তি দেননি। বোলিং বৈচিত্র্যে প্রতিটা বলে খাবি খাইয়েছেন তিনি প্রতিটা ব্যাটারকে। তাইতো আয়ারল্যান্ডের ব্যাটাররা কোনমতে তার ওভার দেখে-শুনে পার করতে চেয়েছেন।

তাইতো আফ্রিদির নামের পাশে যুক্ত হয়েছে মাত্র ১৪ রান। প্রতি মুহূর্তে ব্যাটারের মস্তিষ্ককে ব্যতিব্যস্ত করে রেখেছিলেন শাহীন। নেইল রক আর মার্ক অ্যাডায়াররা অস্বস্তিতে ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে পরিণত হয়েছেন শাহীনের উইকেটে।

ব্যাটারদের মস্তিষ্ক নিয়ে খেলবেন। বোলিংয় বৈচিত্র‍্য দিয়ে দিশেহারা করে দেবেন। মারাত্মক সব ডেলিভারিতে উইকেট তুলে নেবেন। এমন শাহীন শাহ আফ্রিদিকেই তো দেখতে চায় সকলে। এমন শাহীনের বোলিং উপভোগ করতে চায় সকলে। বিশ্বকাপের আগে ঠিক সেই শাহীন হয়েই ফিরছেন শাহীন আফ্রিদি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link