নকআউট ম্যাচ আর দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটারদের দা-কুমড়া সম্পর্ক। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ এলেই যেন প্রোটিয়া খেলোয়াড়দের অদ্ভুত এক পরিবর্তন ঘটে। পুরো টুর্নামেন্ট দাপিয়ে বেড়ানো দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটাররা ঠিক নকআউট পর্বে গিয়েই করে বসেন ভুল কিংবা তাদের পারফরমেন্স হয়ে যায় কর্পূর। তেমনটি ঘটেছে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) ফাইনালে।
সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের হয়ে ২০২৪ আইপিএল রীতিমত মাতিয়ে রেখেছিলেন দুই প্রোটিয়া ব্যাটার, এনরিখ ক্লাসেন ও এইডেন মার্করাম। দুর্ধর্ষ পারফর্ম করেছেন ক্লাসেন। পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে তার ব্যাটে ছিল রানের ফোয়ারা। দ্রুত রান তোলার ক্ষেত্রেও তিনি দেখিয়েছেন মুন্সিয়ানা।
১৭১ এর বেশি স্ট্রাইকরেটে ৪৭৯ রান করেছেন এবারের আসরে। যার ৪৬৩ রানই তিনি করেছেন ফাইনালের আগে। অথচ ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে তিনি হয়েছেন ব্যর্থ। কলকাতা নাইটা রাইডার্সের বোলারদের বোলিং তোপে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়েছিল হায়দ্রাবাদ। সেখান থেকে দলকে টেনে তোলার দায়িত্ব ছিল ক্লাসেনের উপরই।
তবে, এদিন তিনি নিদারুণ ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। মাত্র ১৬ রান করেই প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন ক্লাসেন। ১৭ বলের এই ইনিংসটি ছিল তার পুরো মৌসুমের বিপরীত। একই ঘটনার মঞ্চায়ন করেছেন এইডেন মার্করাম। সানরাইজার্সের মারকুটে ব্যাটারদের একজন ছিলেন তিনিও। ফাইনালের দিন সেই মার্করামও হয়েছেন ব্যর্থ।
ওই যে প্রোটিয়া ডিএনএ বলে কথা। এদিন ক্লাসেনের আগেই ব্যাট হাতে নেমেছিলেন মার্করাম। ২৩ বলে ২০ রানের এক বড্ড সাদামাটা ইনিংস তিনি খেলে গেছেন। অথচ এবারের আসরে হায়দ্রাবাদের হয়ে খুব একটা খারাপ সময় কাটেনি তার। তাছাড়া অভিজ্ঞ ব্যাটার হিসেবে দলের হাল ধরবার প্রত্যাশাও তার উপর ছিল সকলের।
কিন্তু সেই প্রোটিয়াদের চিরায়ত মানসিকতার কারাগারে বন্দী মার্করামও। তাইতো গুরুত্বপূর্ণ সময়ে এসে পারফর্ম করতে ভুলে গেছেন। শিরোপা জয়ের চাপটা যেন সহ্য করতে পারেননি ক্লাসেন ও মার্করাম। এই দুইজনের ব্যর্থতার সাথে এদিন দারুণভাবে ব্যর্থ হয়েছে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের ব্যাটিং লাইনআপ।
তাতে করে আইপিএলের ইতিহাসে জায়গা করে নিয়েছে প্যাট কামিন্সের দল। না, কোন ইতিবাচক রেকর্ডে নয়। ফাইনালে সর্বনিম্ন রানের রেকর্ড গড়েছে দলটি। অথচ এই আসরেই আইপিএলের সর্বোচ্চ দলীয় রানের রেকর্ড ভেঙ্গেছিলেন ক্লাসেনরা।
চীনের দুঃখ হোয়াইংহো নদী আর দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেট দলের দুঃখ নকআউট ম্যাচ। প্রোটিয়াদের হলুদ-সবুজ জার্সি পরিবর্তন হলেও ভাগ্য যেন পরিবর্তন হওয়ার নয়। তাইতো সময়ের অন্যতম সেরা দল নিয়েও শিরোপার স্বাদ আর পাওয়া হয়ে ওঠে না প্রোটিয়াদের।