জয় আর পরাজয়ের মাঝে ব্যবধান কতটুকু- প্রশ্নটা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে করা হলে তিনি নিশ্চয়ই বেদনাময় কণ্ঠে বলবেন মিটার খানেক। আসলেই তো, কেশভ মহারাজকে শেষ ওভারে হাঁকানো শটটা আর এক মিটার উড়ে গেলেই তো জয়ের বন্দরে পৌঁছে যেত বাংলাদেশ। কিন্তু হয়নি সেটা; বাতাস কিংবা ভাগ্য, কারণটা যাই হোক, তিনি ট্রাজিক হিরো হয়েই রইলেন।
যদিও ম্যাচ শেষ করতে না পারার দায় এড়াতে পারেন না এই ব্যাটার। বিশেষ করে নিজের খেলা শেষ ১৪ বল থেকে মাত্র ৭ রান করেছেন তিনি, সেটাই হয়তো ব্যবধান গড়ে দিয়েছে শেষে। তাছাড়া নিজে দায়িত্ব না নিয়ে তরুণ জাকের আলিকে বারবার স্ট্রাইক দেয়াও দৃষ্টিকটু ছিল।
এর আগেও বড় মঞ্চে এই অভিজ্ঞ ফিনিশার ব্যর্থ হয়েছিলেন। ২০১২ এশিয়া কাপের ফাইনাল, ২০১৬ সালে ব্যাঙ্গালুরুতে ভারত কিংবা ২০২১ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচে দুলতে থাকা ম্যাচকে পকেটে পুরতে পারেননি তিনি।
এশিয়া কাপের ফাইনালের সময় অবশ্য ব্যাটার হিসেবে রিয়াদ ততটা প্রতিষ্ঠিত ছিলেন না, আবার অন্যপ্রান্তে আবদুর রাজ্জাকও পাওয়ার হিটার হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তাই সেই পরাজয়ের দায় তাঁকে এককভাবে দিলে বাড়াবাড়ি হবে।
কিন্তু পরের দুটো ম্যাচে তিনিই ভুল করেছেন, ভারতের বিপক্ষে ২ বলে যখন ২ রান প্রয়োজন তখন অহেতুক উড়িয়ে মারতে গিয়ে মিড উইকেটে আউট হয়েছেন আর উইন্ডিজদের বিপক্ষে তো শেষ বলটা ব্যাটেই লাগাতে পারেননি।
ফিনিশার মানেই জয়-পরাজয়ের মাঝামাঝি দাঁড়িয়ে থাকা; সেখান থেকে কখনও জেতা যায়, কখনও যায় না। যদিও চেষ্টার কমতি কখনোই ছিল না মাহমুদউল্লাহর। হ্যাঁ, মানতে হবে কিছু ভুল করেছেন তিনি; কখনও আবার সামর্থ্যের অভাব ছিল। কেউই তো সব সময় ম্যাচ জেতাতে পারে না, স্বয়ং ধোনিও অনেকবার বন্দরে তরী ভেড়াতে পারেননি।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ছক্কাটা হয়ে গেলেই বাংলাদেশ জিতে যেত, সাইলেন্ট কিলারের নামের পাশে থাকতো ২৭ বলে ২৬ রান। শ্রীলঙ্কা ম্যাচের মতই উল্লাস করতো পুরো দেশ, তাঁর ছবি আর ভিডিও দিয়ে ভরে যেত ক্রিকেটাঙ্গন। তবে কিছুই হয়নি, স্রেফ এক মিটারের কমতি ছিল। এর দায় হয়তো তাঁকে নিতে হবে, কিন্তু চেষ্টার কি আদৌ কমতি ছিল?