দেশের আগে আইপিএল

দেশের হয়ে খেলাটা একজন ক্রিকেটারের জন্য গর্বের, সম্মানের। নিজের মাতৃভূমির জার্সিটা পরে খেলতে পারা যেকোনো খেলোয়াড়ের জন্যই স্বপ্ন। তবে বর্তমানের পেশাদার এই বাস্তবতা অনেকটাই পাল্টে দিয়েছে।

ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ গুলোতে খেলতে যাবার জন্য অনেক ক্রিকেটারই আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে চান না। বিশেষ করে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ ( আইপিএল ) খেলার জন্য মোটামুটি সব ক্রিকেটারই মুখিয়ে থাকেন। মূলত কোটি কোটি টাকা পারিশ্রমিকই এই আকর্ষণের মূল কারণ।

যদিও এখন ক্রিকেট বোর্ড গুলো আইপিএলের সময় কোনো দ্বিপাক্ষিক সিরিজ রাখে না। তবে এবার করোনার জন্য জমে থাকা অনেক আন্তর্জাতিক ম্যাচই হচ্ছে আইপিএলের সময়। ফলে কিছু ক্রিকেটার জাতীয় দলে হয়ে খেলার চেয়ে আইপিএল খেলাতেই বেশি আগ্রহ দেখিয়েছেন। সবমিলিয়ে আইপিএলের জন্য দেশের ক্রিকেটকে না বলেছেন এমনই পাঁচ জন ক্রিকেটারকে খুঁজে বের করেছে খেলা ৭১।

  • মোহম্মদ নবী

আফগানিস্তান দলের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার মোহম্মদ নবি আইপিএলে খেলার জন্য খেলননি আফগানিস্তানের হয়ে। মজার বিষয় হচ্ছে, আফগানিস্তান দল এখন অবধি ১২৭ টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছে যার ১২৪ টি ম্যাচেই ছিলেন নবি। বাকি ৩ টি ম্যাচ খেলেননি আইপিএলের জন্য।

  • সাকিব আল হাসান (বাংলাদেশ)

বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা এই ক্রিকেটারও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ না খেলার জন্য বোর্ডকে চিঠি দিয়েছেন। তিনি অবশ্য এবছর ভারতে আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য আইপিএল খেলতে চেয়েছেন। তাই বাংলাদেশের শ্রীলঙ্কা সিরিজের সময় সাকিব খেলবেন আইপিএল।

এর আগে ২০১৯ বিশ্বকাপের আগেও তিনি বংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার ত্রিদেশীয় সিরিজ না খেলে আইপিএল খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। পরে অবশ্য সেই বিশ্বকাপে অসাধারণ পারফর্ম করেছিলেন এই অলরাউন্ডার।

  • ক্রিস গেইল (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)

ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের হট কেক ক্রিস গেইলের জন্য এটি নতুন কোনো বিষয় না। বলা হয়, তাঁর যখন মনে হয় ওয়েস্ট-ইন্ডিজের বিপক্ষে খেলবেন তখনই শুধু তাঁকে মেরুন জার্সিতে দেখা যায়। তাছাড়া বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগেই সারাবছর ব্যস্ত থাকেন এই ইউনিভার্স বস।

এটা নিয়ে ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজও (সিডব্লিউআই) কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি। তিনি এবারও  বরাবরের মতই আন্তর্জাতিক ম্যাচ না খেলে খেলছেন আইপিএলে। এর আগেও ২০১৯ বিশ্বকাপের আগে ত্রিদেশীয় সিরিজে না খেলে আইপিএলে খেলেছিলেন তিনি।

  • বেন স্টোকস (ইংল্যান্ড)

ইংল্যান্ডের এই অলরাউন্ডারের আইপিএলে অভিষেক ঘটে রাইসিং পুনে সুপারজায়েন্ট এর হয়ে। দলটি তাঁকে কিনেছল ১৪.৫ কোটি রূপিতে।

সে বছরই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিকে সামনে রেখে একটি দ্বিপাক্ষিক সিরিজ আয়োজন করেছিল ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি)। সেটা না খেলে আইপিএল খেলার জন্য বোর্ড থেকে বিশেষ অনুমতি নিয়েছিলেন বেন স্টোকস।

  • আন্দ্রে রাসেল (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের আরেক সুপার স্টার আন্দ্রে রাসেল। দলের জন্য দ্রুত রান তোলা বা বল হাতে দলকে উইকেট এনে দেয়া দুটোই করতে পারদর্শী ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই অলরাউন্ডার। ফলে সারাবছর বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে তিনি থাকেন আকর্ষণের তুঙ্গে।

সতীর্থ ক্রিস গেইলের মত তাঁর জন্যেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট না খেলে আইপিএলে খেলা মোটামুটি নিয়মিত ব্যাপার। এর আগেও ২০১৯ বিশ্বকাপের আগে ত্রিদেশীয় সিরিজে না খেলে আইপিএলে খেলেছিলেন তিনি।

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link