আইপিএলের ইতিহাসের সবচেয়ে সফল দল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। পাঁচ বারেরর চ্যাম্পিয়ন তারা। সর্বশেষ দুই আসরেও শিরোপা উঠেছে দলের অধিনায়ক রোহিত শর্মার হাতে। এই রহস্যটা কি?
ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) এর এইবারে আসরের নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিলো মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স এবং কলকাতা নাইট রাইডার্স। এই ম্যাচের শেষ পাঁচ ওভারে কলকাতার জয়ের জন্য দরকার ছিলো ৩১ রান। আর সেখান থেকেই ম্যাচ বের করে নিয়ে আসে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। আর এই সাফল্যের অন্যতম কারিগর ছিলেন রাহুল চাহার।
এই ম্যাচে রাহুল চাহার ৪ ওভারে ২৭ রান দিয়ে ৪ উইকেট শিকার করে কলকাতাকে জয় বঞ্চিত রাখতে ভূমিকা রাখেন। এই ম্যাচ শেষে রাহুল চাহার জানান, মুম্বাইয়ের সাফল্যের পিছনের গল্প। যার কারণে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স বছরের পর বছর ধরে নিয়মিতই সাফল্য পাচ্ছে।
রাহুল চাহার বলেন, ‘মাঝে মাঝেই আমার আত্মবিশ্বাস কমে যায়। এই সময়ে রোহিত আমার মধ্যে আস্থা রাখেন আর আমাকে তুলে ধরে। আইপিএল মৌসুমের বাইরেও মুম্বাই ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটারদের খোঁজ রাখে আর এই কারণেই মুম্বাই বিশেষ একটি ফ্রাঞ্চাইজি।‘
রাহুল চাহারের এই কথার পর ধারাভাষ্যকার হার্শা ভোগলে টুইটে বলেন, ‘একজন বোলার যখন বলে আমার অধিনায়ক আমার উপর মাঝে মাঝে আমার থেকে বেশি আত্মবিশ্বাস রাখে। তখন বুঝতে হবে ক্রিকেটাররা মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সে বেশ ভালো ভাবেই গড়ে উঠছে।’
বোঝাই যাচ্ছে দল হিসেবে গড়ে উঠতেই বেশি জোর দিচ্ছে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। তার সাফল্যও পাচ্ছে তাঁরা। ২০১৫ সাল থেকে গেল আসর অবধি চারবার শিরোপা জিতেছে দলটি। যদিও, এর আগে দলটির শিরোপার সংখ্যা ছিল মাত্র একটি। ২০১৫ সাল থেকেই দলের মধ্যে ‘একটা দল হয়ে ওঠা’র সংস্কৃতি গড়ে তুলেছে ফ্র্যাঞ্চাইজিটি।
এই আইপিএল শুরুর আগে দলটির অন্যতম সদস্য সুরিয়াকুমার যাদব এক সাক্ষাৎকারে জানান মুম্বাইয়ের ড্রেসিং রুমের বৈচিত্রময় আবহের কথা। মুম্বাইয়ের ড্রেসিং রুমে রয়েছেন বিভিন্ন রকম চরিত্রের ক্রিকেটার, সেটি নিয়েও ক্তহা বলেছেন তিনি।
সুরিয়া কুমার বলেন, মাঠের বাইরে ক্রিকেটাররা একেক জন ভিন্ন রকম চরিত্র। হার্দিক পান্ডিয়া, কাইরেন পোলার্ড কিংবা ঈশান কিষাণ এদের মাঠের বাইরের চরিত্র যে কারো জন্য বেশ শকিং হবে।
তিনি বলেন, ‘ড্রেসিং রুমের পরিবেশ মাঠের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। আপনারা আমাদেরকে মাঠে যে রকম দেখেন, তাঁর বিপরীত অবস্থায় ড্রেসিংরুমে থাকি। এখানে অনেকেই আছেন যারা ড্রেসিং রুমের পরিবেশ বেশ আনন্দময় করে তোলেন। এর মধ্যে আছেন কাইরেন পোলার্ড, হার্দিক পান্ডিয়া এবং ঈশান কিষাণ। মাঠে ম্যাচ হারার পরও আমরা আমাদের ড্রেসিং রুমের পরিবেশ একই রাখতে চাই। মাঠের ফলাফল আমাদের ড্রেসিং রুমে কোনো প্রভাব পড়ে না। ম্যাচ জয়ের পর যদি অতিরিক্ত উদযাপন করা হয় তাহলে পরবর্তী ম্যাচে তাঁর প্রভাব পড়তে পারে। কিন্তু যদি একই রকম থাকা যায়, তাহলে পরবর্তী ম্যাচেও ভালো করা সম্ভব।’
মাঠের বাইরের দূর্দান্ত কিছু চরিত্র এবং দলের ক্রিকেটারদের উপর অধিনায়কের ভরসার কারণে বছরের পর বছর ধরে আইপিএলে সাফল্যের দেখা পেয়ে যাচ্ছে মুম্বাই। এছাড়াও মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স কতৃপক্ষ নিয়মিতই খোঁজ খবর রাখে ক্রিকেটারদের। এর ফলে ক্রিকেটারদের মনে ভালো খেলার তাগিদ আসে। এর জন্যই নিয়মিতই সাফল্য ধরা দিচ্ছে মুম্বাইয়ের ডেরায়।