ফুটবল মাঠে জার্সি নম্বর খেলোয়াড়ের খেলার ধরণ বোঝায় অধিকাংশ সময়ে। কিন্তু কিছু খেলোয়াড় সেই জার্সি নম্বরকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। তাদেরই একজন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। সাত নম্বর জার্সিটা ক্রিশ্চিয়ানোর আগে বহু খেলোয়াড় গায়ে চাপিয়েছেন। কিন্তু ক্রিশ্চিয়ানো রীতিমত জৌলুস ছড়িয়েছেন সাত নম্বর গায়ে চাপিয়ে।
কিন্তু ক্রিশ্চিয়ানো তার ক্যারিয়ার সাত নম্বর পিঠে নিয়ে শুরু করেননি। কি করে সাত নম্বর ক্রিশ্চিয়ানোর হল, তার পেছনেও রয়েছে একটা ছোট্ট গল্প। তখন একেবারে তরুণ। সবে ১৮ মাত্র বয়স তার। স্পোর্টিং লিসবনে তিনি ২৮ নম্বর জার্সি গায়ে জড়িয়ে। তার তখনও সম্ভবত জার্সি নম্বর নিয়ে এত মাথা-ব্যথা ছিল না।
২০০৩ সালের কথা, একটা ফ্রেন্ডলি ম্যাচে লিসবন মুখোমুখি হয়েছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের। তখন রেড ডেভিলদের ম্যানেজার ছিলেন দ্য ফেমাস, স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসন। সেই ফ্রেন্ডলি ম্যাচে ফার্গুসন রীতিমত রোনালদোর প্রেমে পড়ে যান।
সদ্যই কৈশর পেরুনো একটা ছেলে ইংলিশ জায়ান্টদের রক্ষণকে নাচিয়ে ছেড়েছিল। ফার্গুসনের মনে গেঁথে যান রোনালদো। ব্যাস, খুব বেশি দেরি না করে তাকে ইউনাইটেডে নিয়ে আসেন ফার্গুসন। তখনও কিন্তু রোনালদোর জার্সি নম্বর কত হবে তা নিশ্চিত নয়। তরুণ খেলোয়াড় হিসেবে দূরের কোন এক সংখ্যা হয়ত ছাপানো হত রোনালদোর জার্সিতে।
কিন্তু ফার্গুসনের দূরদর্শী নজর, একেবারে জহুরির চোখ। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে সেই সময়ে সাত নম্বর জার্সি পরতেন ডেভিড বেকহ্যাম। তিনি দল ছেড়ে চলে যান রিয়াল মাদ্রিদে। শূণ্য হয়ে যায় সাত নম্বর। ফার্গুসন বেশ ভরসা করে রোনালদোকে দেন সাত নম্বর। যেহেতু তিনি উইংগার, সেহেতু সাত নম্বর জার্সি তিনি অনায়াসেই পেতেন। কিন্তু অত অল্প বয়সে তার পাওয়ার কথা নয়।
তবুও রোনালদো গায়ে জড়ালেন সেই সাত নম্বর লাল রঙা জার্সি। এরপরে বাকিটুকু ইতিহাস। ৩৯ বছর বয়সে এসেও তিনি এই গোলকের একটা প্রান্তে সাত নম্বর জার্সিতে মাঠ মাতিয়ে যাচ্ছেন। সেটাই বনে গেছে তার সবচেয়ে পছন্দের জার্সি নম্বর। কিছু কুসংস্কার ফুটবলাররা মানেন। রোনালদোও মানে যে সাত নম্বরটা তার জন্যে সৌভাগ্য়ের প্রতীক। কতকিছুই তো তিনি নিজের করে নিয়েছেন সেই সাত নম্বর জার্সির কল্যাণে।
যদিও শুরুতে ভীষণ চাপে পড়ে গিয়েছিলেন রোনালদো। বেকহ্যামের মত খেলোয়াড়ের ফেলে যাওয়া জার্সি নম্বর গায়ে চাপানো ১৮ বছর বয়সের তরুণের জন্য চাপের বটে। কিন্তু রোনালদো চ্যালেঞ্জটা নিলেন। আর বরাবরই তিনি চ্যালেঞ্জ নিতে ভালবাসেন। ঠিক সে কারণেই বিশ্বজোড়া কদর তার।