পরপর দুইবার ইউরোর ফাইনাল খেলেও শিরোপা জিততে না পারার আক্ষেপে ডুব দিতে হয়েছে গ্যারেথ সাউথগেটকে। তিনি সরে দাঁড়ানোর পর ইংল্যান্ড জাতীয় দলের কোচের দায়িত্ব পান লি কার্সলি, টানা দুই ম্যাচ জিতে উড়ন্ত সূচনা পেয়েছিলেন তিনি কিন্তু হানিমুন পিরিয়ড স্থায়ী হলো। তৃতীয় ম্যাচেই গ্রীসের বিপক্ষে অপ্রত্যাশিত এক পরাজয়ের সাক্ষী হতে হলো তাঁকে।
দল তো হারতেই পারে, কোচকেই কাঠ গড়ায় উঠতে হবে? উঠতে হতো না যদি কার্সলি ঠিকঠাক নিজের কাজটা করতে পারতেন। কিন্তু তিনি করেছেন শিশুতোষ ভুল; একাদশ নির্বাচন আর ট্যাকটিক্স নির্ধারণে তাঁর গোঁজামিল বাকরুদ্ধ করে দিয়েছে সমর্থকদের।
গ্রীসের বিপক্ষে হ্যারি কেইন ছিলেন না, কাছাকাছি ঘরানার ওলি ওয়াটকিনসকে সেই জায়গায় খেলাতে পারতেন ইংলিশ কোচ। সাম্প্রতিক সময়ে ওয়াটকিনস দারুণ ছন্দে ছিলেন, জাতীয় দলেও গোলের দেখা পেয়েছিলেন – অথচ তিনি দলকে মাঠে নামালেন কোন স্ট্রাইকার ছাড়াই, দু’জন ফলস নাইন নিয়ে। ফলে ম্যাচের নব্বই ভাগ সময়ই গোলের সুযোগ মাঠে মারা গিয়েছে প্রোপার স্কোরারের অভাবে।
মজার ব্যাপার, ওয়াটকিনস বদলি হিসেবে নেমে ঠিকই অবদান রেখেছেন। ৮৯ মিনিটে জুড বেলিংহ্যামের করা গোলের বিল্ডআপে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল তাঁর, তাছাড়া ডিফেন্ডারদের নিজের দিকে টেনে নিয়ে ডি-বক্সের সামনে স্পেস তৈরির কাজটাও করেছেন তিনি।
লি কার্সলির ভুল অবশ্য এতটুকুতেই সীমাবদ্ধ নয়, শুরুর একাদশে ফেরা যাক আবার। বেলিংহ্যাম, ফোডেনের দুই পাশে তিনি উইঙ্গার হিসেবে রেখেছেন বুকায়ো সাকা আর অ্যান্থনি গর্ডনকে। তাঁদের পিছনে ‘নাম্বার টেন’ কোল পালমার – সবমিলিয়ে ফাইভ ম্যান এটাক লাইন। শুধু কি তাই? ট্রেন্ট আলেক্সান্ডার আর্নল্ডের মত আগ্রাসী ফুলব্যাকও ছিলেন মাঠে।
এমন আল্ট্রা এটাকিং একাদশের কারণে স্বাভাবিকভাবেই মধ্যমাঠ আর রক্ষণভাগে ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছিল থ্রি লায়ান্সরা। হয়তো গ্রীসকে একেবারে বিধ্বস্ত করার চিন্তায় ছিলেন নবাগত কোচ কিন্তু এই পরীক্ষায় শোচনীয়ভাবে ব্যর্থ হলেন তিনি। তাঁকে মনে রাখতে হবে সময়ের সেরা দলগুলো সাহসী হওয়ার পাশাপাশি সতর্কও থাকে – তাই নিজের ট্যাকটিক্সে পরিবর্তন না আনলে সেরা হওয়াটা কঠিন হবে তাঁর শিষ্যদের জন্য।