বাংলাদেশের কোচিং প্যানেলে শেষ দিনেও খানিক হাস্যজ্জ্বল থাকার চেষ্টা চান্দিকা হাতুরুসিংহের। বাতাসে গুঞ্জন বেশ প্রবল যে বাংলাদেশ ক্রিকেটে হাতুরু অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটতে চলেছে খুব শীঘ্রই। সিদ্ধান্ত চলে আসতে পারে যখন-তখন। হাতুরু নিজের ভবিষ্যত অন্তত জানেন। তাইতো সম্ভবত শেষবার বাংলাদেশের অনুশীলনের জার্সি গায়ে জড়িয়ে তিনি এসেছেন হোম অব ক্রিকেটে।
দীর্ঘ সময় ধরে বাংলাদেশ ক্রিকেটের সাথে কাজ করবার অভিজ্ঞতা রয়েছে লংকান এই কোচের। কিন্তু তার বিপক্ষে অভিযোগেরও শেষ নেই। দ্বিতীয় দফা বাংলাদেশের হেড কোচ হওয়ার পর, তাকে ঘিরে ছিল নানারকম শঙ্কা। কোচ হয়ে দু’টো ভিন্ন ফরম্যাটের বিশ্বকাপেও অংশ নিয়েছেন তিনি। সেখানে মিলেছে ভরাডুবি।
তাছাড়া ভারতের বিপক্ষে সিরিজে নূন্যতম প্রতিরোধ গড়তে পারেনি হাতুরুর বাংলাদেশ দল। তাইতো ছুটির ঘন্টা বেজে গেছে তার। আনুষ্ঠানিকতার স্রেফ সময়ের বিষয়। খানিক পরে সম্ভবত শেষ দিনের অনুশীলনে রয়েছেন হাতুরু, সে কথা মনে পড়েছে তার।
মুশফিকুর রহিম মিরপুরের সেন্টার উইকেটে ব্যাটিং অনুশীলন করেছেন। তার পিছনে দাঁড়িয়ে খানিক বিষণ্ণ বদনে অনুশীলন পর্যবেক্ষণ করে গেছেন হাতুরু। একা দাঁড়িয়ে থেকেছেন। খানিক মায়া নিশ্চয়ই জন্মেছে তার। নানা তিরস্কার সহ্য করেও বাংলাদেশ ক্রিকেটে নিজের একটা অবস্থান তৈরি করে ফেলেছিলেন। কিন্তু সে অধ্যায়ের অবসান ঘটতে চলেছে।
দ্বিতীয় দফা ২০২৩ সালে বাংলাদেশ জাতীয় দলের দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি। এই সময়ে তার অধীনে ৮টি টেস্ট ম্যাচের ৫টি জিতেছে বাংলাদেশ। পাকিস্তানের বিপক্ষে ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ের পেছনের কারিগর তিনি। তবে ওয়ানডে ক্রিকেটে এদফা তার রেকর্ডটা বেশ বেগতিক।
তার কোচিং আমলে ৩৫ ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ দল। যার মধ্যে ১৯টি ম্যাচ হেরেছে বাংলাদেশ। প্রায় একই দশা টি-টোয়েন্টিতেও। ১১টি ম্যাচে পরাজয় দেখেছে হাতুরুসিংহের শিষ্যরা। তাছাড়া বাংলাদেশ দলের অন্দরমহলে তার একটা প্রভাব রয়েছে। সে প্রভাবের কারণে অখুশি বেশ কিছু ক্রিকেটার। এছাড়াও নাসুম আহমেদকে আঘাত করবার ঘটনাও ঘটিয়েছেন।
এসব কিছু মিলিয়ে, হাতুরুকে নিয়ে তিক্ততার সৃষ্টি হয়েছিল বাংলাদেশের ক্রিকেট পাড়ায়। এরপর আর চান্দিকা হাতুরুসিংহের টিকে থাকা বড্ড দায়। এখন কেবল চূড়ান্ত ঘোষণার অপেক্ষা।