অলৌকিক, অতিমানবীয় নাকি আসুরিক – তিলক ভার্মার ব্যাটিং ঝড়ের বর্ণনা করতে ঠিক কোন শব্দটা সবচেয়ে বেশি উপযুক্ত? আপনার উত্তর মনে মনে যাই ভাবুন না কেন, সঠিক উত্তর আসলে নেই। কেননা জোহানসবার্গে যে তান্ডব তিনি চালিয়েছেন সেটা আসলে ভাষায় প্রকাশ করার মতন নয়। স্রেফ চর্ম চোখে দেখলেই অনুভব করা যাবে তীব্রতা।
এদিন খুনে মেজাজ নিয়ে বাইশ গজে এসেছিলেন এই ব্যাটার, স্রেফ ৪৭ বলে ১২০ রান। তাঁর এমন ব্যাটিংয়ের বিপরীতে আসলে কোন জবাবই জানা ছিল না স্বাগতিকদের। কি জানি, পুরো জোহানসবার্গ হয়তো তাঁর বশ্যতা স্বীকার করে নিয়েছিল।
এই বাঁ-হাতি যখন উইকেটে আসেন তখন থেকেই প্রোটিয়া বোলারদের দুঃস্বপ্ন হয়ে উঠেছিলেন। কেশভ মহারাজকে পর পর দুই ছক্কা মেরে আগ্রাসনের সূচনা করেন তিনি, এরপর ট্রিস্টান স্টাবস বা সিম্পালা কেউই আসলে দাঁড়াতে পারেনি তাঁর সামনে। স্রেফ ২২ বলে হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি; তাতে অবশ্য ঝড়ের তীব্রতা বেড়েছে কয়েক গুণ।
চোখের পলকে তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারের কাছাকাছি পৌঁছে যান তিলক, বাউন্ডারি বৃষ্টিতে কেবল ৪১ বলেই ছুঁয়ে ফেলেন মাইলফলক। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ব্যাক টু ব্যাক টু সেঞ্চুরি করার বিরল কীর্তি যোগ হয় তাঁর নামের পাশে। এই ক্লাবে মাত্র পঞ্চম সদস্য হিসেবে যোগ দিয়েছেন তিনি।
টি-টোয়েন্টি ব্যাটার হিসেবে সুরিয়াকুমার যাদবের সামর্থ্য নিয়ে কারো মনেই বোধহয় এক তিল পরিমাণ সংশয় থাকার কথা নয়। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে চতুর্থ টি-টোয়েন্টিতে সুরিয়া নিজেই তিন নম্বরে তাঁর পরিবর্তে পাঠালেন এই তরুণকে। অধিনায়কের আকাশসম ভরসার প্রতিদান সম্ভাব্য সেরা উপায়েই দিলেন তিনি। নিজেকে প্রমাণ করলেন পুরো ক্রিকেট বিশ্বের ‘নেক্সট বিগ থিঙ’ হিসেবে।
আগের ম্যাচেও দারুণ একটা সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ছিলেন তিলক, পুরো ইনিংসের মেরুদন্ড হয়ে ছিলেন। সেই সুবাদে নিশ্চয়ই আত্মবিশ্বাসে টইটম্বুর ছিলেন তিনি। তবে তিনি যা করেছেন সেটাকে পৌরাণিক চরিত্রের ধ্বংসলীলা না বললে ব্যাখ্যা করা প্রায় অসম্ভব।