ক্রিকেটের বিশ্বায়ন নিয়ে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) টেবিলে আলোচনা কম হয়নি। সে আলোচনা টেবিলেই গড়াগড়ি খেয়েছে বহুকাল। তবে এবার ক্রিকেটের বিশ্বায়ন নিয়ে সিরিয়াস এর নিয়ন্ত্রক সংস্থা। মাঝে যেভাবে দল কমানো শুরু করেছিলো তারা বিশ্বকাপে, সেখান থেকে সরে আসছে আইসিসি। সিদ্ধান্ত এসেছে বিশ্বকাপের মত আসরে দল বাড়ানোর। এছাড়াও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট নিয়ে বিস্তর পরিকল্পনা সংস্থাটির।
ক্রিকেটের বিশ্বায়নে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে। এই ফরম্যাটে বিভিন্ন দেশেই এখন হচ্ছে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ। এই লিগগুলো ক্রিকেটের প্রতি মানুষের আকর্ষণ তো বাড়াচ্ছেই পাশাপাশি ছোট ছোট দেশগুলোর ক্রিকেটাররা এখানে এসে খেলার সুযোগ পাচ্ছে। আমেরিকার মত দেশগুলোও ক্রিকেটের প্রতি আগ্রহী হচ্ছে। তাই টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট দিয়েই আইসিসি তাঁর বিশ্বায়নের দুয়ার খুলতে চায়।
এবছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হওয়ার কথা রয়েছে ভারতে। এই আসরে খেলবে মোট ১৬ টি দল। তবে ২০২৪ বিশ্বকাপ থেকে এই সংখ্যা আরো বাড়াতে চায় আইসিসি। এখন অবধি তাঁদের পরিকল্পনা মোট চারটি গ্রুপ হয়ে দলগুলো খেলবে সেই বিশ্বকাপে। প্রতি গ্রুপে থাকবে ৫ টি করে দল। ফলে মোট ২০ টি দলকে খেলতে দেখা যাবে ২০২৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। এছাড়া নারী ক্রিকেট নিয়েও একই রকম পরিকল্পনা সংস্থাটির।
অবাক করা বিষয় হলেও সত্যি যে ওয়ানডে বিশ্বকাপে দল বাড়াতে চায় আইসিসি। অবাক করা কারণ গত তিন আসরেই এই বিশ্বকাপে দল কমিয়েছে সংস্থাটি। ২০০৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপে অংশ নিয়েছিল মোট ১৬ টি দল। ২০১১ সালে সেই সংখ্যা কমে হয়েছিল ১৪টি। তারপর ২০১৯ বিশ্বকাপে সেই সংখ্যা আরো কমিয়ে আনা হয়েছে মাত্র ১০টি দলে। এর কারণ হিসেবে বলা হয়েছিল তুলনামূলক কম শক্তিশালী দলগুলোর সাথে ম্যাচ গুলো একপেশে হয়ে যায়। ফলে সেই ম্যাচগুলো সম্প্রচারে অনীহা দেখায় ব্রডকাস্টাররা। তবে একদিনের বিশ্বকাপ আবার ১৪ দল নিয়ে করতে চায় আইসিসি। তবে কোন আসর থেকে ১৪ টি দল খেলবে সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
ওদিকে অলিম্পিক নিয়েও গুরুত্ব সহকারে ভাবছে ক্রিকেটের এই অভিভাবক সংস্থা। বড় দলগুলোও অলিম্পিকে খেলার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছি বলে জানা যায়। তাছাড়া অলিম্পিকে ক্রিকেট ফেরায় তা অর্থনৈতিক ও বিশ্বায়নে বড় প্রভাব ফেলবে বলে মনে করে আইসিসি। এ ব্যাপারে আরো বিস্তারিত রিপোর্ট দেয়ার জন্য একটি সাব কমিটিও গঠন করা হয়েছে। তাছাড়া ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপও ফিরিয়ে আনার কথা ভাবা হচ্ছে। আইসিসি সহযোগী দেশগুলোকে বেশি প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলার সুযোগ করে দেয়ার জন্য এই আসরের আয়োজন করতে চায় তাঁরা।
এই সবকিছু মিলিয়ে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ বিশ্বায়নের জন্য ২০৩২ সাল অবধি পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছে আইসিসি। নতুন দেশ গুলোকে ক্রিকেটের ব্যাপারে আগ্রহী করতে টি-টেন ফরম্যাট নিয়ে ভাবছে তাঁরা। ধারণা করা হচ্ছে এই ফরম্যাটের মাধ্যমে ক্রিকেটকে আরো অনেক বেশি দেশের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়া সম্ভব হবে। ফলে বোঝাই যাচ্ছে ক্রিকেটের বিশ্বায়ন নিয়ে এখব উঠে পড়ে লেগেছে এর নিয়ন্ত্রক সংস্থা।