‘রোজারিওকে মিস করি, বার্সেলোনাকে ভালবাসি’

জীবনের ৩৩ টি বসন্ত পেরিয়ে গেছেন লিওনেল মেসি। এরই মাঝে বার্সেলোনার হয়ে ব্যক্তিগত ও দলীয়, সম্ভাব্য সব শিরোপাই জিতেছেন তিনি। সম্প্রতি মুন্দো দেপোর্তিভোকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বার্সা অধিনায়ক কথা বললেন ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও দলীয় জীবন নিয়ে, যেখানে উঠে এসেছিলো এর্নেস্তো ভালভার্দে, কিকে সেতিয়েন, বার্সায় নিজের ভবিষ্যৎ, নেইমার, সুয়ারেজ, লাওতারো, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সহ আরও নানা প্রসঙ্গ।

১৬ বছর আগে সদ্য বার্সায় অভিষিক্ত মেসি আর এখনকার অধিনায়ক মেসি; এর মধ্যে কেমন পরিবর্তন এসেছে?

মেসি: অতি অবশ্যই, অনেক পরিবর্তন এসেছে। অভিষেকের পর অনেক বছরই তো হয়ে গেলো! এ সময়ে খেলার মাঠে আর ব্যক্তিগতভাবে অনেক অভিজ্ঞতা হয়েছে আমার। বিয়ে করলাম, আমি এখন তিন সন্তানের বাবা। মূল দলে খেলার অনেক অভিজ্ঞতা এখন আমার আছে আর আমি মনে করি দুই জায়গাতেই আমি এখন অনেক পরিপক্ব। 

আপনার বাচ্চারা আপনাকে আসলে কেমন করে দেখে?

মেসি: স্বাভাবিকই দেখে। সত্যটা থিয়াগোই বেশি বোঝে। কিন্তু থিয়াগো-মাতেও দুজনেই ফুটবলটাকে দারুণ বোঝে। তারা মাঠে, অনুশীলনে আমাকে দেখতে আসে, এটা তাদেরকে আমার আরও কাছে নিয়ে আসে।

তারা প্রশ্ন করে?

মেসি: হ্যাঁ, সবসময়ই। ফুটবল সম্পর্কে, যে কোনো দল সম্পর্কেই জানতে চায়। থিয়াগো এটা দারুণ পছন্দ করে। সে নিজে খবর রাখে আর আমাকেও জানায়।

বাবা ছাড়া আরও কি প্রিয় খেলোয়াড় আছে তার (থিয়াগোর)?

মেসি: হ্যাঁ, অনেক আছে। সে লুইসকে (সুয়ারেজ) নিয়ে অনেক কথা বলে, তার সঙ্গে আবার আমাদের সম্পর্ক দারুণ! গ্রিজমানকে পছন্দ করে, আর্তুরোকে তো একেবারে প্রথম দিন থেকেই, তার চুলের কারণে অবশ্যই! অন্য দলেও পছন্দের খেলোয়াড় আছে, এমবাপে, ক্রিশ্চিয়ানো, নেইমার। থিয়াগো সব জানে, জিজ্ঞেস করে, পছন্দও করে।

বার্সেলোনায় ভালোই দিন কাটছে তবে?

মেসি: সত্যটা হচ্ছে, হ্যাঁ। রোজারিওকে মিস করলেও বার্সেলোনাকে ভালোবাসি আমি। এটা আমার ঘর। এখানে আর্জেন্টিনা থেকেও বেশি সময় কেটেছে আমার। ক্যাস্তেলদেফেলসকে (বার্সেলোনায় যেখানে থাকেন মেসি)মনেপ্রাণে ভালোবাসি আর আমি এমন একটা জীবন যাপন করছি যাকে আমি বেশ পছন্দ করি।

মানুষজন জানে যে মেসি কখনো বার্সা ছাড়বে না। কিন্তু তারপরও জিজ্ঞেস করে এ নিয়ে। আমরা কি কখনো বার্সা ছাড়া অন্য কোথাও খেলতে দেখবো?

মেসি: আমি অনেকবার বলেছি যে, এই ক্লাবে যতো বড় সময়ের জন্যে পারা যায় থাকতে চাই আর এখানকার লোকেরাও এটাই চায়। মানুষজন দলটাকে নিয়ে খুশি। এখানে জয়ের লক্ষ্য নিয়ে একটা প্রকল্প চলছে। আর আমরা প্রতিটি শিরোপা জেতার জন্যে লড়বো, যেমনটা আমরা সবসময় করে থাকি। আমার ইচ্ছা এখানে থাকার। এখানে আরও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিততে চাই, লিগ জেতা চালিয়ে যেতে চাই, এটাই আমার সবসময়ের ইচ্ছা।

কিন্তু মানুষ জানে আপনার চুক্তিতে একটা ধারা আছে যেখানে আপনি চাইলে প্রতি মৌসুম শেষে বিনামূল্যে চলে যেতে পারবেন। আর এটা সমর্থকদের স্নায়ুচাপের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। 

মেসি: আসলে, এ সুযোগটা আমার সবসময়ই ছিলো। শুধু চুক্তিটার কারণেই নয়। অনেক সময়ে ক্লাব ছাড়ার সুযোগ ছিলো, অনেক ক্লাব আগ্রহ দেখিয়েছিলো কিন্তু কখনোই আমি দল ছাড়িনি, এখনো ছাড়বো না। বার্সা ছাড়ার কথা ভাবতেই পারি না। আমি আবারও বলছি, ক্লাব যদি চায় আমি দল ছাড়ি, তাহলে এটা কোনো সমস্যাই হবে না। 

সেতিয়েন প্রকৃতপক্ষে দলের কাছে কি চান?

মেসি: এটা খেলার উপর নির্ভর করে। তিনি অনেক স্বাধীনতা দেন। কখনো কখনো আমি ফলস নাইন হিসেবে খেলি, যেমনটা বিলবাওয়ের বিপক্ষে স্প্যানিশ কাপে খেলেছিলাম, আবার কখনো উইং থেকে শুরু করি। তবে পুরো ব্যাপারটাই দলের শ্রেয়তর করার জন্যেই করি। আর এতে সবাই আমাকে পর্যাপ্ত স্বাধীনতা দেয় আমাকে। 

একে তো পরিবর্তনের সময় চলছে, দলের একতাবদ্ধ হওয়া বাকি অনেক, তার উপর ভক্তদের প্রত্যাশার চাপ। আপনার কি মনে হয় লিগ আর চ্যাম্পিয়ন্স লিগ দুটোই জেতার জন্যে এটা কঠিন একটা বছর?

মেসি: ভবিষ্যৎ কী নিয়ে অপেক্ষা করছে তা আপনি বলতেও পারবেন না কিন্তু এটা সত্য যে এটা এমন একটা বছর যেখানে লিগে আমরা এবং মাদ্রিদ দুই দলই যথেষ্ট অধারাবাহিক, প্রচুর পয়েন্ট হারিয়েছি। আর এ কারণেই আমার মনে হয় লিগের লড়াইটা একেবারে শেষ পর্যন্ত চলবে, ক্লাসিকোর পরেই শেষ হয়ে যাবে না। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ থাকবে, যেখানে প্রতিপক্ষের মাঠে আমাদের কঠিন ম্যাচ থাকবে, তাদেরও থাকবে। তারপর ঘরের মাঠের হার অসম্ভব নয়, তার সেল্টার বিপক্ষে (ফেব্রুয়ারিতে) হেরেছিলো। এমনটা আমাদের সঙ্গেও হতে পারে। তারপর চ্যাম্পিয়ন্স লিগ। এটা সত্য যে, আমরা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিততে চাই কিন্তু তার জন্যে আমাদের আরও উন্নতি করতে হবে, এখনকার অবস্থায় মোটেও সেটা সম্ভব নয়।

রোম আর লিভারপুলে যা হয়েছে তার ব্যাখা দিতে পারবেন?

মেসি: সত্যটা হচ্ছে, না। আমি এর কোনো ব্যাখ্যা আজও খুঁজে পাইনি। বিশেষ করে, লিভারপুলের বিপক্ষে ম্যাচটা। রোমের ঘটনাটা মাঝেমধ্যে হয়ে যেতে পারে কিন্তু একই ব্যাপার পরের বছর হলো! পুরো পরিস্থিতিটা একই ছিলো। এটা ব্যাখ্যা করা আমার পক্ষে কঠিন।

ক্রিশ্চিয়ানোকে ছাড়ার পর মাদ্রিদের শক্তি কি কমেছে?

মেসি: তা তো অবশ্যই, বিশেষ করে গোল করার ক্ষেত্রে। এটা হতোই। শুধু গোলমুখেই নয়, ক্রিশ্চিয়ানো আপনাকে আরও অনেক কিছু দেয়। আমি আগেই বলেছি, এটাই স্বাভাবিক। মাদ্রিদের বেশ কিছু অসাধারণ খেলোয়াড় আছে কিন্তু ক্রিশ্চিয়ানো মৌসুমে ৫০ গোল করতো।

ভালভার্দের সঙ্গে আপনার বিশেষ সম্পর্ক ছিলো। যখন তাকে পদচ্যুত করা হলো, আপনি বলেছিলেন নিজের কাজকে ভালোভাবেই মূল্যায়ন করেছিলেন তিনি। আবিদাল এ সম্পর্কে গণমাধ্যমে যা বলেছিলেন সেটা কি আপনাকে ব্যক্তিগতভাবে কিংবা অধিনায়ক হিসেবে কষ্ট দিয়েছিলো?

মেসি: দুই দিক থেকেই কষ্ট পেয়েছিলাম। কারণ, প্রথমত তিনি (আবিদাল) ড্রেসিংরুমকে আক্রমণ করেছিলেন। এ কারণে আমি বলেছিলাম যে, যদি তিনি ড্রেসিংরুমের ব্যাপারে কথা বলেনই, তিনি যেন নামটা উল্লেখ করে দেন। ব্যক্তিগতভাবেও আঘাত পেয়েছিলাম কারণ আমি আগেও বলেছি, আমার ব্যাপারে বলা হয় এখানকার সিদ্ধান্তে আমি অনেক বড় ভূমিকা পালন করি, যেটা সম্পূর্ণ ভুল। আর তাই এটা দুই দিক থেকেই আমাকে আঘাত করেছিলো।

মানুষজন কেন ভাবে আপনি সিদ্ধান্তগুলোয় বড় ভূমিকা পালন করেন?

মেসি: আমি জানিনা। এটা আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের ব্যাপারেও বলা হয়ে থাকে। সেখানে বলা হয়, আমার পছন্দসই খেলোয়াড়দেরই নাকি জায়গা দেয়া হয়, আমি কোচ পছন্দ করার ব্যাপারেও হস্তক্ষেপ করি। আমি জানিনা কেন এমন হয়। সম্ভবত একটা বড় সময় ধরে এখানে থাকার কারণে, এখানকার কর্তাব্যক্তিদেরকে চেনার কারণে হয়ে থাকে। তবে আমার মতামত থাকে, আর এমনও সময় আসে যখন সিদ্ধান্ত আমার মতের বিরুদ্ধেই যায়।

সাম্প্রতিক সময়ে আপনি সাতটা গোলের যোগান দিয়েছেন, কিন্তু গোল পাননি। গোল কি আপনার কাছে গুরুত্বপূর্ণ?

মেসি: আমি খেলায় প্রবেশ করি, মাঝমাঠে কর্তৃত্ব স্থাপন করতে চাই, বলের দখল চাই বেশি বেশি। আমাদের খেলার ধরণও তেমনটা চায়। এটা সত্য যে, খেলায় বেশ কিছু সুযোগ পেয়েছি যেগুলো কাজে লাগাতে পারিনি। কিন্তু এটা আমাকে তেমন ভাবায় না।

গ্রিজমানকে নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। তার সঙ্গে আপনার সম্পর্ক কেমন?

মেসি: আমাদের সম্পর্কটা ভালো, যেমনটা অন্য সতীর্থদের সঙ্গে থাকে। মাঠের বাইরেও আমাদের সম্পর্ক আছে। এটা অবশ্যই স্বাভাবিক কারণ শুরুতে এটাই সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিলো। একে অপরের সঙ্গে পরিচিত হওয়া, গতিবিধি সম্পর্কে জানা। সে ভিন্ন এক ধরণের ফুটবল খেলতো। তাকে লেফট উইংয়ে খেলতে বলা হয়, যেখানে হয়তো সে তার সেরাটা দিতে পারে না। কিন্তু শেষ কিছুদিনে সে সেন্টার ফরোয়ার্ড হিসেবে খেলায় তার সঙ্গে মাঠে আরও কাছাকাছি থাকার সুযোগ পাচ্ছি, যোগাযোগটাও বাড়ছে।

কেন নেইমারের বার্সেলোনায় ফেরা উচিত? আমাদের বুঝান।

মেসি: আমি অনেকবারই বলেছি, খেলার দিক থেকে নেইমার বিশ্বের অন্যতম সেরা এবং সে ফিরলে আমি বেশ খুশিই হতাম।

ড্রেসিংরুমে সে কেমন মানুষ?

মেসি: সে খুবই হাসিখুশি একজন মানুষ, যেটা সে এখানে সবসময়ই ছিলো। আমরা দুজনেই মাঠে আর মাঠের বাইরে বেশ মজা করতাম। ড্রেসিংরুমটাকে সে উপভোগ্য করে তুলতো।

যারা নেইমারকে পছন্দ করেনা তাদেরকে আপনি কী বলবেন?

মেসি: সে যেভাবে দল ছেড়েছে তাতে তাকে অপছন্দ করাটা স্বাভাবিক। এটা আমাকেও অনেক সময় ভাবিয়ে তুলেছিলো। তাকে থেকে যেতে অনেক বুঝানোর চেষ্টা করেছি আমরা। সে অন্যতম সেরা আর মাঠে আমাদের অনেক কিছু দিয়েছে। কিন্তু সে যেভাবে দল ছেড়েছে তাতে তাকে লোকের অপছন্দ করাটা অন্যায্য কিছু নয় মোটেও।

আবিদাল বললেন লাওতারো আর নেইমারকে একসঙ্গে দলে আনাটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। লাওতারো কেমন?

মেসি: সে দারুণ, ভালো কিছু গুন আছে তার। তাকে অসাধারণ খেলোয়াড় হওয়ার যোগ্য হিসেবেই দেখা হতো। আর এখন সে পরিপক্ব হয়েছে এবং দেখাচ্ছে। খুবই শক্তিশালী সে এবং ওয়ান অন ওয়ান মূহুর্তে সে বেশ ভালো। অনেক গোল করেছে। তার জায়গায় যে কারো সঙ্গে লড়তে পারে এবং একা একাই অনেক কিছু করতে চায়। সে খুবই পরিপূর্ণ এক খেলোয়াড়।

লাওতারোও বলেছেন, তিনি সুয়ারেজকে পছন্দ করেন। দুজনকে একসঙ্গে খেলানোটা কেমন হবে?

মেসি: আমি চাই, তারা সবাই আসুক আর আমাদের সঙ্গে মিলে লড়ুক, বিশেষ করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে। লাওতারোর খেলা লুইসের মতোই অনেকটা। দুজনে শারীরিক দক্ষতা দিয়ে বল আগলে রাখে। আর গোলের সামনেও দুজনে সমান গুনী।

তিনি তো আর্জেন্টিনাতেও আপনার সতীর্থ!

মেসি: সর্বশেষ কোপা আমেরিকায় সে দারুণ খেলেছে, গোল করেছে। দলটাও ভালো খেলেছে, দেখিয়েছে যে তাদের ওপর ভরসা করা যায়। গুরুত্বপূর্ণ প্রীতি ম্যাচেও সে দারুণ খেলেছে, এখন তার সঙ্গে আমাদের আরেকটা সুযোগ তৈরি হয়েছে।

লাওতারোকে নিয়ে আপনি বেশ ভালো বলেছেন। সুয়ারেজ নিজেও বলেছেন যে, বার্সার আরেকটা ফরোয়ার্ড দলে ভেড়ানো প্রয়োজন কারণ তারও বয়স হচ্ছে, দুজনকে কি একসঙ্গে রাখা যায়? একজন তরুণ, আরেকজনকে অভিজ্ঞতার জন্যে?

মেসি: হ্যাঁ। আমি সবসময়ই বলি যে, তারা ভালো খেলোয়াড়। দিনশেষে তাদেরকে মানিয়ে নিতে হবে আর যদি তারা খেলে তাহলে সেটা হয়ও। আর লুইসের অনেক অভিজ্ঞতা আছে আর লাওতারোকে ক্লাবে-লিগে মানিয়ে নিতে সাহায্য করতে পারবে৷ কিন্তু এ সবই পূর্বানুমান।

লিভারপুলের বিপক্ষে অ্যাটলেটিকোর জয়ে চমকে গিয়েছিলেন? 

মেসি: সত্যি বলতে, না। ড্রয়ের দিন থেকেই কঠিন একটা লড়াইয়ের কথা আঁচ করতে পেরেছিলাম। কারণ অ্যাটলেটিকো এই প্রতিযোগিতায় জানপ্রাণ দিয়ে লড়ে। দুই লেগের লড়াইয়ে তারা কঠিন প্রতিপক্ষ আর সেটা তারা করে দেখিয়েছে।  

ম্যানচেস্টার সিটি আগামী দুই বছর চ্যাম্পিয়ন্স লিগে থাকবে না। এ নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে কি বলবেন?

মেসি: এটা অবাক হওয়ার মতো ব্যাপার কারণ কেউই এমন কিছু চিন্তাও করেনি, এটা খুবই কঠোর। দিনশেষে যদি সিটি যে মানের ক্লাব, যে অর্থ তারা ব্যয় করে, যে খেলোয়াড় তাদের আছে সেটা নিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে না খেলতে পারে তাহলে ব্যাপারটা কিছুটা অদ্ভুতই হয়ে দাঁড়াবে।

সেক্ষেত্রে কি আমরা আগুয়েরোতে চোখ রাখতে পারি, যদি তিনি দল ছাড়তে চান?

মেসি: আপনি কি চান? তাদের সবাইকে দলে ভেড়াতে? (হাসি)

আপনি কী চাইতেন?

মেসি: আমি জানি না। কিন্তু সিটি যদি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলতে না পারে, অনেক খেলোয়াড়ই দল ছাড়তে চাইতে পারে, নাও পারে! চ্যাম্পিয়ন্স লিগ অসাধারণ ব্যাপার কিন্তু দুই বছর সেখানে না থাকাটা কি সহনীয় কিছু?

বার্সার বড় প্রতিপক্ষ কারা?

মেসি: সবাইই কঠিন। প্যারিস ডর্টমুন্ডে গিয়ে হেরে এসেছিলো, লিভারপুল অ্যাটলেটিকোয় এসে হেরে গেছে। কিন্তু আমি এভাবে দেখার পরেও মনে করি, লিভারপুল, জুভেন্তাস, প্যারিস আর মাদ্রিদ এই মূহুর্তে সবচেয়ে শক্তিশালী।

ম্যাচদিবসের প্রামাণ্যচিত্রটায় আমরা দেখেছি, অ্যানফিল্ডে আপনি দলকে বলেছিলেন ‘রোমে যা ঘটেছিলো তা আবারও হতে দেয়া চলবে না’

মেসি: আমরা জানতাম লিভারপুল গোল করতে পারে এবং আমাদের লক্ষ্য ছিলো আগেরবারের পুনরাবৃত্তি না ঘটতে দেয়া। কিন্তু আমরা লড়াই করতেই পারিনি আর তারা সব দিক থেকে আমাদের চেয়ে এগিয়ে ছিলো। আমরাও অবশ্য কিছু সুযোগ পেয়েছিলাম লড়াইটা শেষ করে দিতে, কিন্তু কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়েছি। আমরা সতর্ক ছিলাম, ম্যাচটার জন্যে প্রস্তুতও ছিলাম। কিন্তু এটা আবারও ঘটলো।

ক্রিশ্চিয়ানোর পারফর্ম্যান্সকে কিভাবে মূল্যায়ন করবেন?

মেসি: এটা স্বাভাবিক যে সে গোল করতেই থাকবে। সে একজন শিকারি স্ট্রাইকার যে গোল করতে ভালোবাসে, যে কোনো দিনে সে খেললে গোল করবেই। ফরোয়ার্ড হিসেবে তার অনেক ভালো গুন আছে, খুব ক্ষীণ সুযোগেও গোল করা তারই একটা।

মৌসুম শেষে কী চাইবেন?

মেসি: এটাই চাইবো যেনো আমরা জিততে পারি, মনে শান্তি থাকে আর নিজেদের পারফর্ম্যান্সে যেনো উন্নতি হয়। আমরা নিজেদের মতো করে উন্নতি করা অব্যহত রাখবো, আমাদেরকে শান্ত হতে হবে এবং আশা করি বর্তমান অবস্থাটা পরিবর্তন করতে পারবো।

গেলো বছর যখন আপনি ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ ব্যালন ডি অর জিতলেন, সবাই বলাবলি করছিলো আপনি অবসর নেয়ার খুব কাছাকাছি আছেন। কিন্তু আসলে তো অনেক বছর বাকি, তাই না?

মেসি: আমি ভালো অনুভব করছি, বিগত বছরগুলো থেকে ভালো। হয়তো গোল পাচ্ছি না, কিন্তু শারীরিক পর্যায়ে এবং আমার পা দুটো নিয়ে আমি ভালোই অনুভব করছি। 

চল্লিশ পর্যন্ত?

মেসি: দেখা যাক, দেখা যাক… (হাসি)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link