রিয়াল মাদ্রিদের এই মৌসুমে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে তাদের আক্রমনভাগ। বিশেষ ভাবে ভিনিসিয়াস জুনিয়র ও কিলিয়ান এমবাপ্পের জুটি। বর্তমান ফুটবল বিশ্বের সেরা দুই লেফট উইঙ্গারকে একসঙ্গে খেলানোর কৌশলটি আশানুরূপ ফল দিচ্ছে না লস ব্লাঙ্কোসদের। কিছু কিছু ম্যাচে তারা দুর্দান্ত খেলছেন, আবার কিছু ম্যাচে তাদের মধ্যে যেন বোঝাপড়ার খুব অভাব।
কিন্তু আক্রমনভাগ নিয়ে এতো আলোচনা হলেও তাদের প্রধান সমস্যা রক্ষণভাগে। মাদ্রিদ এই মৌসুমে লা লিগাতে ১১টি এবং চ্যাম্পিয়ন্সলিগে ৭টি গোল হজম করেছে। যদিও এই সংখ্যাটি তেমন আহামরি মনে হচ্ছে না, তবে পারফরমেন্সের ভিত্তিতে বলাই যায় তাদের রক্ষনভাগ অস্বাভাবিকভাবে ভঙ্গুর।
প্রতিপক্ষ দলগুলো খুব সহজেই সুযোগ তৈরি করতে পারছে তাদের বিপক্ষে। যদি তারা এই মৌসুমে বড় শিরোপাগুলোর জন্য লড়াই করতে চায় তবে রক্ষনকে শক্তিশালী করার বিকল্প নেই। তাদের এই দুর্গতি যে শুধুমাত্র দুর্বল ডিফেন্ডারদের জন্যই হচ্ছে এমনটা নয়। আধুনিক ফুটবলে রক্ষণ এবং আক্রমন পুরো দলকে একসঙ্গে করতে হয়। কিন্তু মাদ্রিদ সেই কাজটি করতে ব্যর্থ হচ্ছে।
যখন মাদ্রিদের দখলে বল থাকছে না, তখন মাদ্রিদের খেলোয়াড়েরা মধ্যে সমন্বয়ের অভাব প্রবল। দলের কিছু খেলোয়াড় প্রেস করে বটে, কিন্তু কিছু খেলোয়াড় নির্লিপ্তভাবে দাঁড়িয়ে থাকে। অন্যদিকে এমবাপ্পে বুঝতেই পারেনা তার কি করা উচিত। এইসকল দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়েই প্রতিপক্ষ মাদ্রিদকে চাপে ফেলছে প্রায় প্রতি ম্যাচে।
এমবাপ্পে একজন অসাধারণ খেলোয়াড় তাতে কোন সন্দেহ নেই। তবে রক্ষনভাগে তার অবদান খুবই নগণ্য। ভিনিসিয়াসও রক্ষনভাগে তেমন একটা সাহায্য করেন না। মাদ্রিদের মিডফিল্ডও অনেক সময়ই রক্ষনভাগকে একা করে দেয়।
ইনজুরির সমস্যার কথা বোধহয় নতুন করে বলবার কিছু নেই। এই আলোচনা শুরু করলে কোথায় যে শেষ হবে তা আর বলার অবকাশ নেই। মাদ্রিদের রক্ষনভাগে এই মুহূর্তে একমাত্র অ্যান্টনিও রুদিগার ছাড়া আর কোনও যথাযথ ডিফেন্ডার নেই। যদিও তরুন ডিফেন্ডার রাউল আসেনসিওকে দেখা গিয়েছে খেলতে। কিন্তু মাদ্রিদ তার উপর কতটা ভরসা করবে এই বিষয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।
মাদ্রিদের বর্তমান সমস্যাগুলো সমাধান করার সহজ কোন উপায় নেই। আনচেলত্তির মূল শক্তিই হচ্ছে মানসিক দৃঢ়তা এবং পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নেওয়া। তবে তার জন্য এবার বড় সিদ্ধান্ত নেওয়ার পালা। একটি বিকল্প হলো ভিনিসিয়াস বা এমবাপ্পের মতো বড় তারকাদের একজনকে বেঞ্চে বসিয়ে গত মৌসুমের ব্যালান্স ফিরিয়ে আনা। এটি একটি বিতর্কিত পদক্ষেপ, তবে হতে পারে এটিই সঠিক সমাধান।
রিয়াল মাদ্রিদের রক্ষণভাগের সমস্যা আর উপেক্ষা করার সুযোগ নেই। যদি তারা প্রতিপক্ষের আক্রমণ থামাতে না পারে, তবে যত গোলই করুক না কেন, এই মৌসুম তাদের জন্য শুধু ব্যর্থতার গল্পই বয়ে নিয়ে আসবে।