টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল ও ইংল্যান্ড সিরিজকে সামনে রেখে ইংল্যান্ডের আজিয়াস বোলে দলের সাথে যোগ দিয়েছেন কেন উইলিয়ামসন। এখন কোয়ারেন্টাইনে আছেন নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক উইলিয়ামসন।
ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন তার অন্য সতীর্থ খেলোয়াড় কাইল জেমিসন, মিচেল স্যান্টনার, টিম ফিজিও টমি সিমসেক এবং ট্রেইনার ক্রিস ডোনাল্ডসনসহ দলের সাথে যুক্তরাজ্যে পৌছছেন।
ছয়টি ছোট ছোট দলে বিভক্ত হবার আগে তিন দিনের আইসোলেশনে থাকবেন তারা। এছাড়া নিউজিল্যান্ড থেকে দলের বাকি সদস্যরাও ইংল্যান্ডে পৌছেছেন। উইলিয়ামসন অপেক্ষায় আছেন তার দলের সাথে আসন্ন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবার। ভারতের বিপক্ষে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে পর ইংল্যান্ডের বিপক্ষেও একই মাঠে আছে দুই টেস্ট। বায়ো বাবলে থেকেই উইলিয়ামসন বলছিলেন, এটা অনেক বড় একটা চ্যালেঞ্জ।
উইলিয়ামসন বলেন, ‘দলের প্রায় সদস্যরাই এখানে আছেন। আমরা হোটেলে প্রায় একদিকেই আছি সবাই। এক বারান্দা থেকে আরেক বারান্দায় একজন আরেকজনের সাথে যোগাযোগ করতে পারি। কারো কারো জন্য এটা প্রথমবার বায়ো বাবলের অভিজ্ঞতা। কেউ কেউ এটা কয়েকবার অভিজ্ঞতা নিয়েছে, তাদের জন্য কিছুটা সাহায্য হবে।’
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ও এই আসছে সিরিজ নিয়ে বেশ রোমাঞ্চিত নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক, ‘বেশ উত্তেজনা কাজ করছে। এখানে টেস্ট খেলা সবসময়ই অসাধারণ এক সুযোগ। তবে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল খেলাটা সবচেয়ে স্পেশাল। প্রথম ধাপ হচ্ছে বায়ো বাবল থেকে বের হওয়া এরপর আমরা আমাদের প্রস্তুতি শুরু করবো। কন্ডিশনের সাথে মানিয়ে নিতে সবাই একসাথে হবো। এটা বেশ উত্তেজনাকর যখন আপনি দীর্ঘদিন দল থেকে বাইরে থাকেন, আমি সেটার অপেক্ষায় আছি।’
ভারতের ভয়াবহ করোনা পরিস্থিতির কথা নিয়ে উইলিয়ামসন বলেন এটা খুব হৃদয়বিদারক অবস্থা। নিউজিল্যান্ডের মতো অনেক দেশই করোনা পরিস্থিতি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখলেও ভারতে এর প্রকোপ ভয়াবহ। উলিয়ামসনের সতীর্থ খেলোয়াড় ডেভিড ওয়ার্নার সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের হয়ে ফ্লাইটে পিপিই পড়ে তার ভেরিফাইড ইন্সটাগ্রাম আইডিতে একটি ছবি দেন। এতে উইলিয়ামসনের দেশের অনেকেই এই ভয়াবহতা সম্পর্কে বুঝতে পারেন বলেও তিনি জানান, ‘আমার কাছে কিছু মেসেজ এসেছিলো আমার ফ্যামিলি এবং বন্ধুদের থেকে। কোভিড নিশ্চিত ভাবে বর্তমান সময়ে এমনকি পূর্ব হতেই অন্যান্য দেশের তুলনায় ভারতে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করেছে, এটাই বাস্তবচিত্র। এবং যখন তুমি এমন দেশে রয়েছ যেখানে পরিস্থিতি নাগালের বাইরে তখন শুধু মাত্র প্রয়োজনের তাগিদে যথাসম্ভব সাবধানতা অবলম্বন করেই বাইরে যাওয়া শ্রেয়।’
এবছরের শুরুতে বাম হাতের ইনজুরিতে পড়েন উইলিয়ামসন। যার কারণে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের হয়েও তিনি প্রথম তিন ম্যাচে খেলতে পারেননি। তবে ইনজুরি কাটিয়ে পরবর্তীতে তিনি স্থগিত হবার আগে বাকি চার ম্যাচে খেলেন এবং টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ও ইংল্যান্ড সিরিজকে সামনে রেখে তিনি এখন সম্পূর্ণ ফিট আছেন, ‘অবস্থার উন্নতি হচ্ছে, এটাই বড় ব্যাপার। এ ব্যাপারে আমার থেকে যারা বেশি খবর রাখছেন যারা তাদের মতে এ অবস্থা থেকে পুরোপুরি কাটিয়ে উঠতে বেশ অনেকটা সময় লেগে যাবে। তবে আমার কাছে পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে চলাই এখন মূল লক্ষ্য।’
উইলিয়ামসন বলছিলেন, সম্প্রতি অনুশীলন করতে না পারাটা একটা সমস্যা হতে পারে, ‘সবশেষ ১২ দিন আগে আমি একটু অনুশীলন করেছিলাম এরপর সবকিছুই দ্রুত বদলে যায়। অবশ্যই আপনি চাইবেন একটু বেশিই অনুশীলন করতে, আমরা আমাদের প্রথম টেস্টের আগে ১২ দিনের প্রস্তুতির সময় পাচ্ছি, তাই এটা বেশ উত্তেজনাপূর্ণ যখন আমরা কন্ডিশনের সাতজে মানিয়ে নিতে পারবো সেই সাথে অনুশীলনও।’
মঙ্গলবার (১৮ মে) ইংল্যান্ড তাদের দুই টেস্টের জন্য স্কোয়াড ঘোষণা করেছে যেখানে বেশ কিছু বড় নাম নেই! এদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন আইপিএলে। উইলিয়ামসন অবশ্য বলেছেন ইংল্যান্ডের দল নির্বাচন নিয়ে তার বিশেষ কিছু বলার নেই, ‘তাদের বেশ কিছু টেস্ট সিরিজ আছে, আমাদের পর ভারত এবং অস্ট্রেলিয়ার সাথেও সিরিজ আছে। আমরাও একই কাজ করতে চাইবো যখন আমাদের অনেক খেলা থাকবে, আপনাকে অবশ্যই যথাসম্ভব সেরাটাই করতে হবে। তাদের অনেক খেলোয়াড়, বেশ কিছু ভালো মানের খেলোয়াড় আছে স্কোয়াডে। তাদের যে পরিমাণ প্রতিভাবান খেলোয়াড় উঠে আসছে এবং সুযোগ পাচ্ছে সেটা সত্যি অসাধারণ। প্রথম টেস্টে আমাদেরকে শক্ত চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে সেটা জানি।’
ইংল্যান্ডের মতো কন্ডিশনে খেলা অবশ্যই সহজ হবে না যেখানে তাদের স্টুয়ার্ট ব্রড এবং জেমস এন্ডারসনের মতো পেস জুটি আছে যারা কিনা দীর্ঘদিন ধরেই দলকে সার্ভিস দিচ্ছে। দু’জনে মিলে ১১০০ এর বেশি উইকেট শিকার করেছেন। এ ব্যাপারে উইলিয়ামসন বলেন, ‘তাঁরা কিংবদন্তি, এখনো খেলছে এবং তাদের সেরাটা দিচ্ছে। সবচেয়ে বেশি তারা এই কন্ডিশনটাকে চেনে। তাদের অসাধারণ ক্যারিয়ার আছে এবং তারা এখনো সর্বোচ্চ স্থানে যাওয়ার জন্য লড়াই করছে।’