নতুন বোতলে পুরনো ‘বাজি’র ঘোড়া বিপিএল

বিপিএল যেন একটা সাগর। সেই সাগর উত্তাল হবে, শান্ত থাকবে, সেই সাগরের পানি চাইলে কক্সবাজারের মত আপনি নোংরাও করতে পারবেন। জোয়ার হবে, ভাটা হবে। কোণায় দাঁড়িয়ে কেউ একজন প্রকৃতির ডাকে সারা দিয়ে ফেলবেন।

জগতে কাকতালীয় অনেক ঘটনাই ঘটে। এটাই স্বাভাবিক। এই ‍মুহূর্তে বিশ্বে চারটা কি পাঁচটা ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট চলছে। এদের মধ্যে বিপিএলও একটা। এটাও এক রকমের কাকতাল। তবে, বাকিগুলোর সাথে বিপিএলের ফারাক অনেক।

বিপিএল মানেই তো বিনোদন প্রিমিয়ার লিগ। বিপিএল মানেই তো বেপরোয়া প্রিমিয়ার লিগ। অথচ, লোকে শুধু দূর্বার রাজশাহীর কথাই বলে। আচ্ছ, রাজশাহীই কি একমাত্র দল যারা খেলোয়াড়দের টাকা পরিশোধ করেনি?

না, দূর্বার রাজশাহীর ঘটনাটা প্রকাশ্যে এসেছে – খেলোয়াড়রা প্রতিবাদ জানিয়ে অনুশীলনে না যাওয়ার পর। বাকি ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো কি বুকে হাত রেখে বলতে পারবে, তাঁরা সময় মত নিয়ম-নীতি মেনে খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক দিয়েছে?

নিয়মই ছিল, টুর্নামেন্ট শুরুর আগেই পারিশ্রমিকের অন্তত ৫০ শতাংশ পরিশোধ করতে হবে। সেটা কি আদৌ কোনো দল শতভাগ পূরণ করেছে? খোদ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডই (বিসিবি) কি কোনো নিয়মের ধার ধারছে?

ক্রিকেটাররা তো এখানে কোনো রকমের আনুষ্ঠানিক চুক্তিপত্রে সই না করেই স্রেফ মুখের কথায় খেলা শুরু করে দেন। বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল থেকে সব ফ্র্যাঞ্চাইজিকে যে চুক্তিপত্র সরবরাহ করার কথা, সেটি পাঠানোই হয় টুর্নামেন্টের মাঝ পথে বা শেষের দিকে।

যেমন কর্ম, তেমন ফল। যেমন বিসিবি, তেমন ফ্র্যাঞ্চাইজি। বিসিবি কেন সময়মত চুক্তিপত্র সরবরাহ করতে পারছে না? দায় কার? রঙচঙ মাখিয়ে নতুন বোতলে পুরনো বিপিএল বিক্রি করাটাই কি তাঁদের একমাত্র কাজ?

বিসিবি যদি নিজেদের কাজে সৎ না থাকে, তাহলে ফ্র্যাঞ্চাইজি কেন থাকবে! ফ্র্যাঞ্চাইজিরা টাকা দিচ্ছে না প্রায় কেউই, মাঠের খেলাতেও কি সেই প্রভাব নেই? মাঠে এমন সব ঘটনা ঘটছে, যেটা বাজির ওয়েবসাইটের অস্বাভাবিক দরের দিকে ইঙ্গিত করছে। খেলোয়াড়রাও কি পারিশ্রমিক না পেয়ে যেকোনো মূল্যে আর্থিক ভাবে লাভবান হতে চাচ্ছেন?

বিপিএল যেন একটা সাগর। সেই সাগর উত্তাল হবে, শান্ত থাকবে, সেই সাগরের পানি চাইলে কক্সবাজারের মত আপনি নোংরাও করতে পারবেন। জোয়ার হবে, ভাটা হবে। কোণায় দাঁড়িয়ে কেউ একজন প্রকৃতির ডাকে সারা দিয়ে ফেলবেন। দেখেও সবাই না দেখার ভান করে থাকে এখানে!

Share via
Copy link