দলীয় রাজনীতির দাপটে ক্যারিয়ার বিসর্জন

নিজেকে শীর্ষ পর্যায়ে টিকিয়ে রাখার জন্য করতে হয় সংগ্রাম। কিন্তু, ক্রিকেটাররা সবাই তাঁর নিজের ক্যারিয়ারের শেষটা সুন্দর করতে পারেন না। পারফরম্যান্স ছাড়াও কাউকে দলীয় রাজনীতির শিকারও হতে হয়।

জাতীয় দলে অভিষেকের পর শুরু হয় মূল চ্যালেঞ্জ, মূল লড়াই। নিজেকে শীর্ষ পর্যায়ে টিকিয়ে রাখার জন্য করতে হয় সংগ্রাম।কিন্তু, ক্রিকেটাররা সবাই তাঁর নিজের ক্যারিয়ারের শেষটা সুন্দর করতে পারেন না। পারফরম্যান্স ছাড়াও কাউকে দলীয় রাজনীতির শিকারও হতে হয়। বিশেষ করে উপমহাদেশে এই ধারা প্রবল।

  • আম্বাতি রাইডু (ভারত)

আম্বাতি রাইডু ভারতীয় দলে কখনোই খুব একটা ভালো অবস্থায় ছিলেন নাহ। ২০১৯ সালের শুরুর দিকে জাতীয় দলে চার নম্বর পজিশনে নিজের অবস্থান পাকা করে ফেলেছিলেন।

তবে, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাজে ভাবে আউট হয়েছিলেন তিনি। বিশ্বকাপের দল থেকে বাদ দেয়া হয়। বিশ্বকাপ চলাকালেই জাতীয় দল থেকে অবসর নেয়ার ঘোষণা দেন। কিন্তু পরবর্তীতে অবসর ভাঙেন। তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে।

  • গৌতম গম্ভীর (ভারত)

নিজের প্রথম বিশ্বকাপেই দূর্দান্ত পারফর্ম করেন। কিন্তু, পরবর্তী সময়ে আর কোনো বিশ্ব আসরেই নিজের এই দূর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখাতে পারেননি। ২০১১ সালের বিশ্বকাপের পর আর খুব বেশি সময় জাতীয় দলে খেলতে পারেননি।

বিশ্বকাপের পর মাত্র দুইবার টেস্ট দলে জায়গা পান গম্ভীর। যৌক্তিক কোনো কারণে তাঁকে জাতীয় দল থেকে বাদ দেয়া হয়নি। ধারণা করা হয় তখনকার ভারতীয় অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির সাথে ব্যক্তিত্বের সংঘাত ছিল তাঁর।

  • অ্যান্ড্রু সাইমন্ডস (অস্ট্রেলিয়া)

ক্যারিয়ারে বিতর্কের কোনো অভাব ছিল না প্রয়াত ক্রিকেটার অ্যান্ড্রু সাইমন্ডসের জীবনে। মাঙ্কিগেট কেলেঙ্কারি ছাড়াও সতীর্থদের সাথেও বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বিতর্কে জড়িয়েছেন তিনি। ২০০৮ বাংলাদেশ সফরে এসে দলীয় সভায় অংশ না নিয়ে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার সাইমন্ডস।

এর কারণে তাঁকে সিরিজের মধ্যপথে দেশে ফেরত পাঠানো হয়। পরবর্তী ধারণা করা হয় তখনকার অস্ট্রেলিয়ান সহ-অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্কের সাথে সম্পর্ক ভালো না থাকায় জাতীয় দল থেকে বাদ পড়েন তিনি। কালক্রমে তিনি ফ্রিল্যান্স ক্রিকেটার হিসেবেই ক্যারিয়ার করেন, ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার (সিএ) সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেন।

  • কেভিন পিটারসেন (ইংল্যান্ড)

কেস্টাইলিশ ব্যাটার হিসেবে কেভিন পিটারসেনের জুড়ি নেই। দক্ষিণ আফ্রিকান বংশদ্ভুত এই ব্যাটারের সাথে তখনকার ইংলিশ অধিনায়ক অ্যান্ড্রু স্ট্রাউস এবং কোচ অ্যন্ডি ফ্লাওয়ারের সম্পর্কের অবনতি হয়। ফলে, জাতীয় দলের হয়ে ক্যারিয়ার দীর্ঘ করতে পারেননি পিটারসেন।

আইপিএলের মত টি-টোয়েন্টি লিগ খেলা নিয়ে অধিনায়ক স্ট্রাউসের সাথে তাঁর ঝামেলা হয়েছিলো। এছাড়াও ক্রিকেট বর্হিভূত মন্তব্যের কারণেও জাতীয় দলের ক্যারিয়ার দীর্ঘ করতে পারেননি ইতিহাসের অন্যতম সেরা এই ইংলিশ ক্রিকেটার।

  • শোয়েব আখতার (পাকিস্তান)

শোয়েব আখতার, ইতিহাসের সর্বসেরা গতিদানবও  অভ্যন্তরীণ রাজনীতির শিকার হয়েছিলেন। তিনি এখনও ২০১১ বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে সেমিফাইনাল ম্যাচ না খেলার আফসোস করেন।

শোয়েব আখতার এরপর অনেকবারই বলেছেন, ওই ম্যাচ খেলার জন্য ফিট ছিলেন। কিন্তু তারপরও অধিনায়ক শহীদ আফ্রিদি এবং টিম ম্যানেজমেন্ট তরুণ ওয়াহাব রিয়াজের উপর আস্থা রেখেছিল। এরপর আর কখনই পাকিস্তানের জার্সিতে দেখা যায়নি শোয়েবকে। এরপর জাতীয় দলকে বিদায় জানান তিনি।

লেখক পরিচিতি

খেলাকে ভালোবেসে কি-বোর্ডেই ঝড় তুলি!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link