ভারতের সাদা বল ইঞ্জিনের অন্যতম প্রধান জ্বালানি হার্দিক পান্ডিয়া। যদিও, এই সময়ে এসে তাঁর ওপর কাজের বোঝা অনেক। আর আসছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে এই বোঝাটাই কি ভারতের শঙ্কা হয়ে দাঁড়ায় কি না – তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই। কারণ, এবারও পান্ডিয়ার কোনো মোক্ষম বিকল্প নেই ভারতের, অথচ নিতীশ কুমার রেড্ডিকে দলের বাইরে রেখেই ঘোষণা করা হয়েছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দল।
এর কারণটা অবশ্যই ইনজুরি। বারোদার হয়ে বিজয় হাজারে ট্রফিতে পান্ডিয়া তিন ম্যাচ খেলেছেন, বোলিং করেছেন বিশ ওভার। ইনজুরি তাঁর নিত্য সঙ্গী। সর্বশেষ ওয়ানডে খেলেছে ২০২৩ সালের বিশ্বকাপে। বাংলাদেশের বিপক্ষে পুনের সেই ম্যাচ দিয়েই বিশ্বকাপ শেষ হয়ে যায় তাঁর।
বাঁ-পায়ে গোড়ালি ইনজুরিতে পড়েছিলেন ফলো-থ্রুতে। যদিও, তাঁর ইনজুরিতে খুব একটা ভুগেনি ভারত, অন্তত ফাইনাল পর্যন্ত। কারণ, দলে মোহাম্মদ শামি ছিলেন। কিন্তু, ফাইনালে যে ভারত অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মুখ থুবড়ে পড়েছিল তাঁর বড় একটা কারণ হার্দিক পান্ডিয়া।
পুরো আসর জুড়ে ভারতের মিডল অর্ডার বড় কোনো পরীক্ষার মুখে পড়েনি, যেটা পড়তে হয়েছিল ফাইনালে। সেখানে আহমেদাবাদে সেদিন পান্ডিয়া থাকলে ফলাফলটা ভিন্ন হতে পারত।
পান্ডিয়ার ইমপ্যাক্ট ভারতে কতটা? – এই প্রশ্নের এক বাক্যে কোনো উত্তর নেই। তিনি ভারতের ষষ্ঠ বোলিং অপশন, আবার ব্যাট হাতেও সফল। অবশ্য চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলে আরও তিনজন অলরাউন্ডার আছে ভারতের – রবীন্দ্র জাদেজা, অক্ষর প্যাটেল ও ওয়াশিংটন সুন্দর। কিন্তু, সবাই স্পিন বোলিং অলরাউন্ডার। এখানে নিতীশ রেড্ডিকে রাখা গেল পেস বোলিং অলরাউন্ডারের জন্য দারুণ একটা বিকল্প গড়ে উঠত। তিন জন স্পিনিং অলরাউন্ডার নিশ্চয়ই এক সাথে খেলতে নামবেন না।
আইপিএলে দারুণ পারফরম্যান্সের পর বাংলাদেশের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি অভিষেক হয় রেড্ডির। এরপর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে অনুষ্ঠিত বোর্ডার গাভাস্কার ট্রফিতেও ছিলেন দারুণ ফর্মে। তাই, পান্ডিয়ার ইনজুরি ঝুঁকির কথা মাথায় রেখে নিতীশকে দলে একটা সুযোগ দেওয়ার দরকার ছিল।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজও খেলতে হচ্ছে পান্ডিয়াকে। ফলে কাজের চাপটা তাঁর এই মুহূর্তে অনেক বেশি। ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্ট একেবারেই হচ্ছে না।
অন্যদিকে, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ওপেনিংয়ে শুভমান গিলের সাথে জুটি বাঁধবেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা। ফলে, যশস্বী জয়সওয়াল যে মাঠের বাইরেই থাকবেন পুরো আসর জুড়ে – সেটা চোখ বন্ধ করেই বলা যায়। আর দলে পান্ডিয়া বাদে পেসার মাত্র তিনজন। পেসারদের ইনজুরি ঝুঁকি তো থাকেই। তাই, ব্যাটিং পজিশন, আর ইমপ্যাক্ট, প্লেয়িং রোল – সব বিবেচনায় নিতীশকে বঞ্চিতই বলতে হচ্ছে।