মিরাজ-মুস্তাফিজ, দোয়া ছাড়া কোনো অপশন নাই!

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির বাংলাদেশ দলের ‘দোয়া’ করা বাদে আর কিছুই করার নেই। বড় কারণ, দলের বোলিং লাইন আপ। আরও নির্দিষ্ট করে বললে দলের চতুর্থ ও পঞ্চম বোলার!

‘দোয়া করা ছাড়া আর কোনো অপশন নাই’ – শেখ মেহেদী হাসান ঠিকই বলেছেন। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির বাংলাদেশ দলের ‘দোয়া’ করা বাদে আর কিছুই করার নেই। বড় কারণ, দলের বোলিং লাইন আপ। আরও নির্দিষ্ট করে বললে দলের চতুর্থ ও পঞ্চম বোলার!

মুস্তাফিজুর রহমান ও মেহেদী হাসান মিরাজ – দু’জনেরই সাম্প্রতিক বোলিং ফর্ম যাচ্ছেতাই। এই সংকট এতটাই তীব্র যে বোলিং আক্রমণে তাঁদের লুকিয়ে রাখতে হবে। কিন্তু, পুরোপুরি লুকিয়ে রাখতে গেলে তো বোলিং কোটাই পূরণ করা যাবে না।

চলমান বিপিএল দিয়েই যদি ব্যাখ্যা করা যায়, তাহলে সংকটের গভীরতা পরিস্কার হবে। আরব আমিরাতের তুলনামূলক স্লো উইকেটে বাংলাদেশের মূল স্পিনার মিরাজ, যিনি বিপিএলে নিজের সর্বশেষ চার ম্যাচের একটিতেও কোনো উইকেটের দেখা পাননি।

খুলনার এই অধিনায়ক গোটা আসরজুড়ে সাত ম্যাচ খেলে উইকেট পেয়েছেন মাত্র পাঁচটি। এটা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশের জন্য বিপদের কারণ হতে পারে। উইকেট টেকিং অ্যাবিলিটি আজকাল মিরাজের আর নেই বললেই চলে।

উইকেট টেকিং অ্যাবিলিটির প্রশ্নে নিজের সুদিন হারিয়েছেন মুস্তাফিজও। এমনিতে অবশ্য ঢাকা ক্যাপিটালসের বোলিং লাইন আপে তাঁকেই সেরা বলা যায়। নয় ম্যাচে নয় উইকেট, এক ম্যাচ বাদে উইকেট পেয়েছেন সবগুলোতেই।

কিন্তু, শুভঙ্করের ফাঁকিটা এখানেই। মুস্তাফিজের বোলিং ইদানিং বড্ড বাইটলেস। বিপিএল তুলনামূলক স্পোর্টিং উইকেটে হচ্ছে। সেখানে বড় সুবিধা করতে পারছেন না মুস্তাফিজ। সিলেটের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে শেষ ওভারে একের পর এক ফুলটসে ম্যাচটা খোয়াতে বসেছিলেন তিনি। ডেথ ওভারে বিশ্ব সেরা মুস্তাফিজ – এই কথাটা আজকাল আর সত্য হচ্ছে না।

একটা ব্যাপার হল, আরব আমিরাতে তিনি কিছুটা স্লো উইকেট হয়তো পাবেন। কিন্তু, একবার পাকিস্তানে গেলেই খেলা হবে রান প্রসবা উইকেটে। সেখানে মুস্তাফিজের চলমান বিপিএল সংকট আরও চরমে উঠবে।

একই কথা মিরাজের ক্ষেত্রেও খাটে। পাকিস্তানের ব্যাটিং উইকেটে মিরাজের বোলিং আসলে প্রতিপক্ষের জন্য একটা স্বস্তির ‍সুবাতাস বনে আনা ছাড়া বাড়তি কিছু করার সামর্থ্য রাখে না। আর ইদানিং শুধু বিপিএলে নয়, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও মিরাজ বল হাতে ব্যর্থ।

তিন ম্যাচে নিতে পেরেছেন মোটে এক উইকেট। ব্যাটিং সামর্থ্যে মিরাজ সামান্য একটু এগিয়ে না থাকলে এই মুহূর্তে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য মিরাজের চেয়েও বেশি যোগ্য শেখ মেহেদী হাসান। এই অবস্থাতেই ২০ ফেব্রুয়ারি মিরাজকে শক্তিশালী ভারতের বিপক্ষে খেলতে নেমে যেতে হবে।

মিরাজের সাথে আরেকজন স্পিনার যিনি যাচ্ছেন, সেই নাসুম আহমেদের বিপিএল ফর্মও আশার পালেও হাওয়া দিচ্ছে না। বিপিএলের বাতাসে ভাসা বাংলাদেশ ক্রিকেটের হয়তো এসব নিয়ে এখন ভাবার সময় নেই। কিন্তু, সময় গেলে কি আর সাধন হবে!

লেখক পরিচিতি

সম্পাদক

Share via
Copy link