চারবারের মতো একটানা এল ক্ল্যাসিকোতে হার, সম্ভবত এই শব্দটাই আজ সবচেয়ে কর্কশ লাগছে কার্লো আনচেলত্তির কানে। বার্সেলোনার রঙে রাঙানো রাতে, ৪-৩ গোলের রোমাঞ্চে আবারও মাথা নিচু করে মাঠ ছাড়ল রিয়াল মাদ্রিদ। গ্যালারিতে বার্সা ভক্তদের চিৎকার তখন প্রশ্নে পরিণত,এই জয়ে কি শেষমেশ নিশ্চিত হয়ে গেল কাতালানদের লা লিগা জয়?
৩৫ ম্যাচে ৭ পয়েন্টের ব্যবধান। বাকি মাত্র তিনটি ম্যাচ। এর মধ্যে একটিতে জয় মানেই শিরোপা নিশ্চিত। সোজা হিসাব, তবে লা লিগা মানেই তো নাটক, আবেগ, এবং শেষ বাঁশি না বাজা পর্যন্ত অনিশ্চয়তা। তবু আজ রাতের বার্সাকে দেখে একবার অন্তত মনে হয়, চ্যাম্পিয়নরা খেলছে, আর প্রতিপক্ষ কেবল বেঁচে থাকার লড়াইয়ে।
ম্যাচের শুরুটা ছিল ঝড়ের পূর্বাভাসের মতো। প্রথম ১৪ মিনিটেই এমবাপ্পের জোড়া আঘাত, যেন বার্সার স্বপ্নভবনে আগুন ধরিয়ে দিলো। এক সপ্তাহ আগেও ট্রেবল স্বপ্ন দেখা দলটা কি এত তাড়াতাড়ি ভেঙে পড়বে? না, কাতালানরা অন্য কিছু ভেবেছিল।
এরিক গার্সিয়ার সেই হেডারটা ছিল বিদ্রোহের সূচনা। ১৯ মিনিটে যখন বল জালে জড়ালো, তখন শুধু ব্যবধান কমলো না, জ্বলে উঠলো এক আত্মবিশ্বাস। এরপর শুরু হলো বার্সার ঝড়। লামিন ইয়ামাল আর রাফিনহার বুটে আগুন লেগে গেলো, ৩২ থেকে ৪৫ মিনিট, মাদ্রিদের রক্ষণ যেন মাটি খুঁজছিল পায়ের নিচে। কোর্তোয়া থামাতে চাইলেন, পারলেন না। হাফটাইম স্কোরলাইন, ৪-২।
মাদ্রিদের মনে তখন নিশ্চয়ই ঘুরছিল, আরেকটা লজ্জা? ছয় কিংবা সাত গোল? দ্বিতীয়ার্ধে কিছুটা ঘুরে দাঁড়ায় রিয়াল। এমবাপ্পে নিজের হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন, ম্যাচে রোমাঞ্চ ফেরে। কিন্তু জয় ফিরলো না। রাফিনহার একাধিক সুযোগ মিস না হলে ব্যবধান হয়তো দ্বিগুণও হতে পারতো। অফসাইড, হ্যান্ডবলের ছোবলে দু’দলের আরও কিছু গোল বাতিল হয়, কিন্তু গল্পটা বদলায় না।
বার্সেলোনার সামনে এখন একটাই সমীকরণ, একটি জয়, আর তাহলেই লা লিগার মুকুট। অন্যদিকে, রিয়াল মাদ্রিদের সামনে প্রশ্নের পাহাড়, ডিফেন্স কাকে নিয়ে সাজাবেন? মাঝমাঠে এত অভিজ্ঞতা, তবু এত নিষ্প্রভতা কেন? বড় ম্যাচে যখন সবাই হারিয়ে যায়, তখন কে এগিয়ে আসবে?