সাম্প্রতিক সময়ে বোর্ডের সাথে ক্রিকেটারদের দ্বন্দ্ব দিন দিন বেড়েই চলেছে।
প্রায়ই দেখা যায় বোর্ডের কর্মকাণ্ড নিয়ে খুশি নন ক্রিকেটাররা। তবে কোনো একজন ক্রিকেটার বোর্ডের বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে মুখ খুলেছেন এমন উদাহরণ কম। অবশ্য ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ গুলো চালু হবার পর প্রায়ই বোর্ড ও ক্রিকেটারদের মধ্যে নানারকম বাক-বিতণ্ড দেখা যায়। এছাড়া ক্রিকেটের অবকাঠামো গত উন্নয়নে বোর্ডের ভূমিকা কিংবা ক্রিকেটারদের বেতন নিয়েও জনসমক্ষে মুখ খুলতে দেখা গেছে কিছু ক্রিকেটারকে।
ক্রিকেটের জন্য বিষয়টা মোটেই সুখকর নয়। বোর্ডের সাথে নানা কারণেই ক্রিকেটারদের মত বিরোধ হতে পারে; তবে সেটা জনসমক্ষে না আসাই ভালো। বোর্ডেরও উচিৎ ক্রিকেটারদের সমস্যা কথা বলার জায়গা করে দেয়া। তাঁদের মধ্যে যেন আলোচনার দরজা নিশ্চিত থাকে সেটা নিশ্চিত করা। তবে এরমধ্যেও বোর্ডের দিকে আঙুল তোলা কিছু ক্রিকেটারদের নিয়ে আজকের আয়োজন।
- কামরান আকমল (পাকিস্তান)
২০১৬ সালে পাকিস্তানের এই ব্যাটসম্যান একবার কথা বলেছিলেন পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) বিপক্ষে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৫ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে দলে জায়গা না পেয়ে এই কান্ড করেছিলেন তিনি। যদিও সিরিজের আগে ভালোই ফর্মে ছিলেন এই ক্রিকেটার।
ঘরোয়া ক্রিকেটে সব ফরম্যাটেই দারুন পারফর্ম করছিলেন সে বছর। ফলে দলে নিজের জায়গা পাওয়ার ব্যাপারে মোটামুটি নিশ্চিত ছিলেন এই কিপার ব্যাটসম্যান। তবে দলে জায়গা না পাওয়ায় নির্বাচকদের দিকে আঙুল তুলেছিলেন তিনি। নির্বাচকদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে পাকিস্তানের একটি সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাতকার দেন তিনি।
- ডোয়াইন ব্রাভো (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)
ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটারদের সাথে বোর্ডের দ্বন্দ্ব যেন এক নিয়মিত ঘটনা। প্রায়ই নানা কারণে দুই পক্ষের সম্পর্কে টানা পোড়ন দেখা যায়। ২০১৪ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়ক ছিলেন ব্রাভো। তবে প্রাপ্য বেতন পরিশোধ না করায় বোর্ডের কাছে চিঠি লিখেছিলেন এই ক্রিকেটার। নিজেদের মধ্যে একটা সমঝোতা করার প্রস্তাবও দিয়েছিলেন তিনি।
ব্রাভোর চিঠিতেও টনক নড়েনি বোর্ডের। ফলে সেই সময় ভারত সফর থেকে নিজেকে সড়িয়ে নেন ব্রাভো। এরপর আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট না খেলে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটেই মনোযোগ দেন তিনি। তবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দিয়ে আবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরেন এই ক্রিকেটার।
- মহিন্দর অমরনাথ (ভারত)
মহিন্দর অমরনাথ আশির দশকে ভারতের ব্যাটিং লাইন আপে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেনে। অমরনাথ মোট ৬৯ টি টেস্ট ও ৭৫ টি ওয়ানডে খেলেছিলেন। সেখানে তিনি যথাক্রমে ৪৩৭৮ ও ১৯২৪ রান করেছিলেন। তবুও ক্যারিয়ারের পুরোটা সময় তাকে যাওয়া আসার মধ্য দিয়েই থাকতে হয়েছে।
বলা হয়ে থাকে নির্বাচকদের সাথে ভালো সম্পর্ক না থাকায় এমন অবিচারের শিকার হতেন এই ব্যাটসম্যান। সেই সময়েই একটি সাক্ষাতকারে নির্বাচকদের তিনি ‘বাঞ্চ অব জোকার্স’ বলেন।
- কেভিন পিটারসেন (ইংল্যান্ড)
ইংল্যান্ডের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সফল ব্যাটসম্যান কেভিন পিটারসন। তবে তাঁকে দলে জায়গা নিশ্চিত করার জন্য বোর্ডের সাথে লড়াই করতে হয়েছে অনেক। একবার অ্যাশেজ সিরিজের আগে তাঁকে ইংল্যান্ডের ক্রিকেট বোর্ড তাঁকে না খেলানোর সিদ্ধান্ত নেয়। এটি নিয়েও বোর্ডের সাথে লড়াই করেছিলেন এই ব্যাটসম্যান।
সেই অ্যাশেজ সিরিজে জায়গা না পেয়ে গনমাধ্যমে বোর্ডের কড়া সমালোচনা করেছিলেন এই ব্যাটসম্যান।
- সাকিব আল হাসান (বাংলাদেশ
এই তালিকার সর্বশেষ সংযোজন সাকিব আল হাসান। বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা ক্রিকেটার সাকিব। এবছর আইপিএল খেলার জন্য বোর্ডের কাছে শ্রীলঙ্কা সফরে ছুটি নিয়েছিলেন তিনি। তবে গনমাধ্যমে বোর্ডের অনেকেই সাকিব টেস্ট খেলতে চাননা বলে মন্তব্য করেন। পরে একটি লাইভ শো তে এসে সাকিব এর প্রতিবাদ করেন।
তিনি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতির জন্য আইপিএল খেলতে চেয়েছিলেন বলে জানান। পরে বোর্ডকে দেয়া সাকিবের সেই চিঠিতেও দেখা যায় সাকিব বিশ্বকাপের প্রস্তুতির কথা উল্লেখ করেই ছুটি নিয়েছিলেন। এছাড়াও ওই শো তে বোর্ডের নানা কর্মকান্ডের সমালোচনা করেন বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার। বোর্ডের অধিকাংশ কর্মকার্তার ভুমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেন তিনি।