একটা বিচিত্র যোগসাদৃশ্য রয়েছে শুভমান গিল ও হ্যারি ব্রুকের মধ্যে। টেস্টে যখন শুভমান প্রত্যাশা পূরণে ধুকছিলেন, সেই মুহূর্তে তার হাতে ওঠে অধিনায়কত্বের দায়িত্ব। ঠিক তেমনি ওয়ানডেতে হ্যারি ব্রুক হয়েছেন অধিনায়ক, যখন কি-না তার পায়ের নিচে মাটিই পোক্ত নয়। তবে এই দুইজনই যে বর্তমান সময়ের অন্যতম সেরা ব্যাটার সেটা স্বীকার করে নেওয়া যায় নির্দ্বিধায়।
হ্যারি ব্রুকের বয়স ২৬, শুভমানের ২৫। একজন ক্রিকেটারের পুরোদমে বিকশিত হওয়ার মোক্ষম সময়। এই সময় থেকেই মূলত একজন সাধারণ ক্রিকেটার থেকে একজন মহারথী হয়ে ওঠেন খেলোয়াড়রা। বিশ্বব্যাপী নিজেদের ছাপ ফেলে যাওয়ার সূত্রপাত ঘটে এই সময়েই।
সেই ধারাতেই এগিয়ে যাচ্ছেন ব্রুক ও শুভমান। নজরকাড়া ব্যাটিংয়ে দুইজনই প্রশংসা কুড়াচ্ছেন প্রতিনিয়ত। দু’জনের মধ্যে হুট করেই চলে আসতে পারে কে সেরা সেই প্রতিযোগিতাও। এই মুহূর্তে অবশ্য টেস্টের পরিসংখ্যাগত দিক থেকে এগিয়ে আছেন হ্যারি ব্রুক। ৩০ টেস্টে ব্রুকের ঝুলিতে যুক্ত হয়েছে ২৮২০ রান। প্রায় ৫৭.৫৫ গড়ে তিনি রান তুলছেন সাদা পোশাকে। ১৩টা ফিফটি আর ১০টা সেঞ্চুরি শোভা পাচ্ছে তার নামের পাশে।
অন্যদিকে সাম্প্রতিক ইংল্যান্ড সিরিজের আগে সেই অর্থে প্রত্যাশামাফিক পারফরম করতে পারছিলেন না গিল। তবুও তার পকেটে রয়েছে সাত খানা হাফসেঞ্চুরির পাশাপাশি নয়টি সেঞ্চুরি। ৩৭ ম্যাচে তিনি ২৬৪৭ রান সংগ্রহ করেছেন। গড় যদিও ব্রুকের তুলনায় বেশ কম, তবে তা মানসম্মত- ৪১.৩৬।
টেস্টে পিছিয়ে থাকলেও, ওয়ানডেতে শুভমান গিল অবশ্য দারুণ উজ্জ্বল। ব্রুকের খেলা ২৯ ম্যাচের বিপরীতে গিল খেলেছেন ৫৫টি ম্যাচ। গিল যেখানে ৫৯.০৪ গড়ে রান তুলেছেন সেখানে ব্রুকের গড় ৩৬.৪২। ১৫টা ফিফটি এবং আটটি সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন শুভমান গিল। অন্যদিকে ব্রুকের ছয় অর্ধশতকের বিপরীতে শতক রয়েছে মোটে একটি। স্ট্রাইকরেটের ব্যবধান খুব একটা বেশি না। গিলের ৯৯.৫৭ আর ব্রুকের ১০২.১৬।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে অবশ্য দু’জন প্রায় সমান-সমান। গিলের ১৩৯.২৮ স্ট্রাইকরেটের বিপরীতে ব্রুকের স্ট্রাইকরেট ১৪৭.২২। ইংলিশ ব্যাটার রান করছেন ২৯.১০ গড়ে, ভারতীয় ব্যাটারের গড় ৩০.৪২। পঞ্চাশোর্ধ ইনিংস দুইজনই খেলেছেন সমান চারটি করে। শুভমান সেঞ্চুরির দেখা পেলেও পাননি ব্রুক।
ব্রুকের রান ৪৭ ম্যাচে ৮৭৩, অন্যদিকে গিলের সংগ্রহ ২১ ম্যাচে ৫৭৮। এই পরিসংখ্যানগুলোই বরং বলে দেয় সেরা হওয়ার নতুন লড়াইটা জমবে বেশ। নতুন দিনের ফ্যাভ ফোর কিংবা ওমন কোন তালিকায় দুইজন জায়গা পেয়ে যাবেন অনায়াসে। এই শ্রেষ্ঠত্বের স্থায়িত্বকাল দীর্ঘ হওয়ার প্রত্যাশাই নিশ্চয়ই করছেন ক্রিকেট ভক্তরা।