বেশ কিছুদিন ধরেই জাসপ্রিত বুমরাহর ওয়ার্কলোড ইস্যু নিয়ে চলছে বিতর্ক। যার জেরে স্বয়ং বুমরাহও বিদ্ধ হচ্ছেন সমালোচনার তিরে। গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলোতে তাঁর সার্ভিস না পেয়ে সাবেকরাও ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। তবে বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা।
তর্ক ছাড়াই সময়ের সেরা বোলার জাসপ্রিত বুমরাহ। তিনিই টেস্ট ইতিহাসের একমাত্র বোলার যিনি ২০০ উইকেট নিয়েছেন ২০-এর নিচে গড় রেখে। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ১৭.১৫ গড়ে ৬৪ উইকেট, ইংল্যান্ডে ২৬.১৯ গড়ে রেকর্ড ৫১ উইকেট, এমনকি ভারতের স্পিন বান্ধব উইকেটেও ১৭.১৯ গড়ে ৪৭ উইকেট নিয়েছেন যা অনেক স্পিনারকেও লজ্জা দিতে পারে। ইংল্যান্ড সফরেও তিন ম্যাচ খেলে, দুইবার পাঁচ উইকেট নিয়েছেন।
তবুও, তাঁর বিশ্রামকে কেন্দ্র করে থামেনি সমালোচনা। সাবেক অধিনায়ক সুনীল গাভাস্কার সরাসরি বলেছেন, ‘ওয়ার্কলোড বিষয়টা মানসিক ব্যাপার, ভারতীয় ক্রিকেট ডিকশনারি থেকে মুছে ফেলা উচিত।’
অনেকে উদাহরণ টানছেন কপিল দেবকে নিয়েও—যিনি ক্যারিয়ারে কখনো ইনজুরির কারণে ম্যাচ মিস করেননি। তবে কপিল ৮০’র দশকের মাঝামাঝি গতি কমিয়েছিলেন নিজের ক্যারিয়ার দীর্ঘায়িত করতে।
ভারতীয় দলে বুমরাহকে শুধু নতুন বলে আক্রমণ করতে হয় না, মাঝের সময়ে ব্রেকথ্রু এনে দেওয়ার পাশাপাশি ডেথ ওভারের চাপ সামলাতেও হয়। আর টেস্টে তো তিন সেশন জুড়ে লাগাতার ধারাবাহিক থাকতে হয়। এই চাপ শুধু শরীর নয়, মানসিকতায়ও প্রভাব ফেলে। যার প্রমাণ বুমরাহ নিজেই দিয়েছেন চতুর্থ টেস্টে, যেখানে ১৪০ গতি তুলতেও তাঁর কষ্ট হচ্ছিল।
অনেকে বলেন দেশের হয়ে খেলতে হলে সর্বস্ব দিতে হয়। তবে বাস্তবতা বলছে, পেসারদের ক্যারিয়ার দীর্ঘায়িত না হওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ অতিরিক্ত ব্যবহার। তাই তো বুমরাহকে যত্নে রাখার বিকল্প নেই। সেই সাথে ভারতের এখন যথেষ্ট ব্যাকআপ অপশন রয়েছে।
তাই বুমরাহকে বিশ্রাম দিলে স্কোয়াডে থাকা প্লেয়ারদের সক্ষমতা বাজিয়ে দেখা যায়। আর এটা একপ্রকার কৌশলগত সিদ্ধান্তই বলা যায়। টিম ম্যানেজমেন্ট ভালো করেই জানে, ব্যস্ত সূচি, অবিরাম ফরম্যাট বদল আর বড় টুর্নামেন্টের চাপে বুমরাহকে অযথা ঝুঁকিতে ফেলা মানে আগামী কয়েক বছর আগেই তাকে হারিয়ে ফেলা। তাই তো বুমরাহকে সঠিকভাবে ব্যবহার করাটাই হতে পারে ভারতের সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ।