মিরপুরের কালো মাটি ততটাও খারাপ না। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচটি অন্তত সে বার্তাই দিল। মিরপুরের টেস্টে ক্রিকেটের ইতিহাসে, চার ইনিংস মিলিয়ে তৃতীয় সর্বোচ্চ রান তুলেছে ব্যাটাররা, সর্বশেষ টেস্ট ম্যাচটিতে। তাতেই বরং আন্দাজ করে নেওয়া যায়, চাইলেই মিরপুরের উইকেট হতে পারে স্পোর্টিং।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম বেশ কলুষিত। সবার চোখে কালো মাটি যার অন্যতম কারণ। কিন্তু দোষটা যে কালো মাটির নয়, তা তো দিনের আলোর মতই স্পষ্ট। চার ইনিংস মিলিয়ে বাংলাদেশ ও আয়ারল্যান্ডের মধ্যকার দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচটিতে রান হয়েছে ১৩২৯টি।
এর আগে একবার ১৪০৯ ও ১৫২৩ রান হয়েছিল এই মিরপুর স্টেডিয়ামেই। যেখানে প্রতিপক্ষ ছিল যথারীতি ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অতএব সব দোষ মিরপুরের উইকেটকে দিয়ে দেওয়া রীতিমত স্বেচ্ছাচারিতা। ব্যাটারদের জন্য মৃত্যুকূপ বনে যাওয়া মূলত সদিচ্ছার অভাবের ফসল।

আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশ দল দুই ইনিংস মিলিয়ে রান করেছে ৭৭৩ রান করেছে। হারিয়েছে ১৪ উইকেট। জবাবে আয়ারল্যান্ড পঞ্চম দিনের প্রতিরোধসহ রান করেছে, ৫৫৬। তাদের ২০টি উইকেটের পতনের মধ্য দিয়েই বাংলাদেশ দল ম্যাচ জিতেছে ২১৭ রানের ব্যবধানে। অতএব উইকেটের ব্যাটার ও বোলার উভয়ের জন্যই সহায়তা ছিল উপস্থিত।
মিরপুরের বাইশ গজের সবচেয়ে নিন্দার কারণ ছিল অসমতা। অসম বাউন্স, অপ্রত্যাশিত টার্ন- সেসবের কারণে মিরপুরকে মনে হতো সবচেয়ে ভয়ংকর কোন এক স্থান। কিন্তু চাইলেই মিরপুরের উইকেট থেকে ঠিকঠাক বাউন্স ও টার্ন আদায় করা সম্ভব। যেখানে ব্যাটারদের সত্যিকার অর্থেই সামর্থ্যের পরীক্ষা হবে, ভাগ্যের জোরে টিকে থাকার প্রয়োজন যেখানে হয়ে উঠবে গৌণ।
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচটি জুড়ে সে বিষয়টি হয়েছে স্পষ্ট। দুই দলের ব্যাটাররাই রান করেছেন। আইরিশ ব্যাটাররা টেস্টের নবাগত, সে কারণে তাদের সামর্থ্যে কুলোয়নি ম্যাচটিকে ড্র-য়ের দিকে ধাবিট করা। অন্যদিকে দুই দলের স্পিনারদের পকেটে গিয়েছে ৩৪টি উইকেটের মধ্যে ২৯টি। একেবারে আদর্শ উপমহাদেশীয় উইকেট বলতে যা বোঝায়- সে উদাহরণই সৃষ্টি করে দেখাল মিরপুর।

একারণে পিচ কিউরেটর টনি হেমিং প্রশংসা পেতেই পারেন। তিনি মিরপুরের উইকেটের আসল চরিত্র তুলে ধরেছেন। শুধু শুধু যে মিরপুরের উইকেটের গায়ে কালিমা লেপ্টে দেওয়া ছিল, সেটা মুছে ফেলার একটা যাত্রা তিনি শুরু করেছেন। নিশ্চয়ই এক্ষেত্রে উপরমহল থেকেও গ্রিন সিগনাল পেয়েছিলেন তিনি। অতএব, অযথাই শেরে বাংলা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামকে কাঠগড়ায় না তোলাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।











